নন-স্টিক পাত্রে রান্নায় ভয়াবহ বিপদের শঙ্কা
বাঙালি আর ভাজাভুজিতে অ্যালার্জি, এমনটা ভাবা মুশকিল। কোলেস্টেরল বিপদসীমা ছাড়াচ্ছে, তাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই রসেবশে রয়েছে পেটুক বাঙালি। রান্নাঘরে ঝোলানো নন-স্টিকের পাত্র নিজেই জানে না দিনে কত বার দফারফা হবে তার।
এ দিকে স্বাস্থ্যসচেতন বাঙালি ভাবছে, তেল কম খেতে হবে বলে নন-স্টিকের ফ্রাইং প্যান দারুণ কাজে আসবে। কিন্তু এই নন-স্টিকে ভাজা খাওয়ার ফল কত মারাত্মক তা সম্ভবত আমাদের ধারণাতেই নেই। বিশেষজ্ঞরা সিঁদুরে মেঘ দেখছেন আমাদের অভ্যাসেই।
গবেষকদের মতে নন-স্টিকের বাসনপত্র তৈরি হয় ‘পারফ্লুওরোয়ালকাইল কম্পাউন্ড (পিএফসি)’ দ্বারা। এই যৌগকেই ভয়ের কারণ বলে চিহ্নিত করছেন তারা।
ইতিমধ্যেই ইউএস এনভায়রনমেন্ট এই যৌগকে ‘কার্সিনোজেনিক’ বলে চিহ্নিত করেছে। অর্থাৎ ক্যানসারের মতো মারণ রোগের আশঙ্কা বাড়ে এই যৌগের ব্যবহারে। শুধু ক্যানসারই নয়, চিকিৎসকদের মতে থাইরয়েড, বন্ধ্যাত্বের মতো রোগেরও কারণ এই পিএফসি। যদিও ননস্টিক কোটিং যারা তৈরি করেন, তাদের দাবি, গত দশ বছর ধরে এই যৌগটি ব্যবহার করা হচ্ছে না।
এখানেই শেষ নয়। ‘জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল এন্ডোক্রিনোলজি অ্যান্ড মেটাবলিজম’-এ প্রকাশিত এক গবেষণা প্রবন্ধে এক অন্য বিপদের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন গবেষকরা। তারা জানাচ্ছেন, নন-স্টিক ফ্রাই প্যান থেকেই আসছে এই বিপদ। তারা ইতালির হাই স্কুলের ৩৮৩ জন ছাত্রের উপরে একটি সমীক্ষা চালান। এদের মধ্যে ২১২ জনের রক্ত পরীক্ষা করে দেখা গেছে, সেখানে পিএফসি পুরুষ হরমোনগুলিকে ক্ষতিকর ভাবে প্রভাবিত করছে। এর ফলে তাদের যৌনাঙ্গের আকৃতি বদলেছে। প্রভাবিত হয়েছে তাদের প্রজনন ক্ষমতাও। শুধু নন-স্টিক ফ্রাই প্যান নয়, ফাস্ট ফুড র্যাপার থেকেও ঘটতে পারে এই বিপদ।
নন-স্টিক ফ্রাই প্যান এই মুহূর্তে সারা পৃথিবীতেই বহুল ব্যবহৃত। এমন এক বাসন থেকে যদি এই রকম বিপদ জন্ম নেয়, তা হলে তা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে— গবেষকরা ভেবে সন্দিহান। তবে সহজ নিদানও রয়েছে।
বিপদ এড়াতে ফিরে যেতে হবে পুরনো অভ্যাসে। বাড়িতে আবার ফিরিয়ে আনুন স্টেনলেস স্টিল। ব্যবহার করতে পারেন সেরামিক বা কাস্ট আয়রনের বাসনও। সুস্থ থাকতে অভ্যেসে রাশ টানুন আজই।
চিকিৎসকদের মতে, তেল কম খাওয়ার অজুহাতে নন-স্টিক তাওয়া নয়, বরং স্টিল, কাস্ট আয়রন, লোহা বা সেরামিকের বাসনে অল্প তেল দিয়েই খাবারদাবার ভাজুন। এতেই শরীর থাকবে সুস্থ।
from nayadigonto
Comments
Post a Comment