বিশ্বযুদ্ধ দক্ষিণ চীন সাগর ঘিরে?
লন্ডন: দক্ষিণ চীন সাগরের বিতর্কিত জলসীমার একটি দ্বীপে ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছে চীন। ১৪ ফেব্রুয়ারি কৃত্রিম উপগ্রহের তোলা বিরোধপূর্ণ ওই দ্বীপের কিছু ছবি প্রকাশ করে এ খবর দেয় যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন চ্যানেল ফক্স নিউজ। পরে বিষয়টি নিশ্চিত করেও চীন।
এ অঞ্চলে প্রভাব বজায় রাখতে সচেষ্ট যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে দক্ষিণ চীন সাগর অঞ্চলের ‘সামরিকীকরণের বিরুদ্ধে’ সতর্কতা উচ্চারণ করেছে।
দক্ষিণ চীন সাগরের বিরোধপূর্ণ অংশে চীনের কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি এবং এর ওপরের আকাশে উড্ডয়ন নিষিদ্ধ এলাকা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা নিয়ে প্রতিবেশীরা ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের উত্তেজনা চলছে। এই বিতণ্ডা কি শেষমেশ যুদ্ধে গড়াবে?
অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকই এখন ‘তুসেডেডিসের ফাঁদ’ তত্ত্বের কথা স্মরণ করে মনে করছেন, দুই শক্তির সঙ্গে সংঘাত হয়তো অনিবার্য।
গ্রিক ঐতিহাসিক তুসেডেডিসের এক তত্ত্বই ‘তুসেডেডিসের ফাঁদ’ নামে পরিচিত। এর মূল কথা, বড় শক্তির সঙ্গে উদীয়মান শক্তির সংঘাত অনিবার্য। তুসেডেডিস এথেন্সে জন্ম নিয়েছিলেন খ্রিষ্টপূর্ব ৪৬০-এ। এথেন্সের সঙ্গে স্পার্টার যুদ্ধের ইতিবৃত্ত লিখে যান তিনি। নানা ক্ষেত্রে এথেন্সের বাড়বাড়ন্ত দেখে শক্তিশালী স্পার্টা সন্ত্রস্ত হয়ে ওঠে। যুদ্ধ হয় এর অনিবার্য পরিণতি। এটিই ‘তুসেডেডিসের ফাঁদ’।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র সফররত চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং গ্রিস ঐতিহাসিকের এই তত্ত্বকে একেবারে উড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারস্পরিক বোঝাপড়া আরো গভীর করতে চাই আমরা। অন্যান্য কৌশলগত এবং উন্নয়ন-বিষয়ক খাতেও আমরা সহযোগিতা বাড়াতে চাই।’
শি বলেন, বিশ্বে ‘তুসেডেডিসের ফাঁদের’ মতো কিছু নেই। বড় দেশগুলো নিজেদের ভুলে এই ফাঁদে পা দিয়েছে। এর চেয়ে বেশি কিছু নয়।’
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে উদীয়মান পরাশক্তি জার্মানি এবং তাদের অগ্রসরমাণ নৌবাহিনীর তৎপরতা তুসেডেডিস ট্র্যাপের একটি দৃশ্যপট নির্মাণ করে। সম্ভাব্য বিপদ নিয়ে সেই ১৯০৭ সালেই ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নোট লিখেছিলেন, ‘জার্মানি যতটা পারে তত শক্তিশালী নৌবাহিনী গড়ে তোলার চেষ্টায় আছে।’ সাত বছর বাদেই দুই ‘ভ্রাতৃপ্রতিম’ দেশ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।
চীন শত শত বাণিজ্যিক জাহাজকে সামরিক কাজে ব্যবহারের উপযোগী করে রূপান্তর করেছে। তৈরি করেছে ‘ক্যারিয়ার কিলার’ ক্ষেপণাস্ত্র- যা বিশেষভাবে আমেরিকার বিমানবাহী রণতরীকে ডুবিয়ে দেয়ার লক্ষ্য করে গড়া।
আমেরিকায় আঘাত হানতে সক্ষম এমন হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকলের পরীক্ষা চালিয়েছে চীন। দেশটি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রসমৃদ্ধ গোয়েন্দা ডুবোজাহাজ তৈরি করেছে।
চীনা প্রেসিডেন্ট তুসেডেডিস তত্ত্বকে উড়িয়ে দিলেও মনে রাখতে হবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধীর গতির বছরেও চীন সামরিক ব্যয় ১০ শতাংশ বাড়িয়েছে। দেশটির এক জেনারেল বলেছেন, চীন স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠলে ‘কোনো শত্রু তাকে ভয় দেখাতে পারবে না।’
আজ, এই ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে, দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে কোনো ছাড় না দেওয়ার অবস্থায়ই পৌঁছেছে চীন। যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গ্রাহাম অ্যালিসন গত ৫০০ বছরে ঘটা ‘তুসেডেডিসের ফাঁদ’-এর ১৬টি ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেছেন। এর মধ্যে ১২টি ক্ষেত্রেই যুদ্ধ হয়েছে। অ্যালিসনের বিশ্লেষণ, উভয় পক্ষ যখন মনোভাব ও কর্মকাণ্ডে বড় ধরনের ছাড় দিয়েছে, তখনই কেবল যুদ্ধ এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
সূত্র: দা ইন্ডিপেনডেন্ট
এ অঞ্চলে প্রভাব বজায় রাখতে সচেষ্ট যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে দক্ষিণ চীন সাগর অঞ্চলের ‘সামরিকীকরণের বিরুদ্ধে’ সতর্কতা উচ্চারণ করেছে।
দক্ষিণ চীন সাগরের বিরোধপূর্ণ অংশে চীনের কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি এবং এর ওপরের আকাশে উড্ডয়ন নিষিদ্ধ এলাকা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা নিয়ে প্রতিবেশীরা ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের উত্তেজনা চলছে। এই বিতণ্ডা কি শেষমেশ যুদ্ধে গড়াবে?
অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকই এখন ‘তুসেডেডিসের ফাঁদ’ তত্ত্বের কথা স্মরণ করে মনে করছেন, দুই শক্তির সঙ্গে সংঘাত হয়তো অনিবার্য।
গ্রিক ঐতিহাসিক তুসেডেডিসের এক তত্ত্বই ‘তুসেডেডিসের ফাঁদ’ নামে পরিচিত। এর মূল কথা, বড় শক্তির সঙ্গে উদীয়মান শক্তির সংঘাত অনিবার্য। তুসেডেডিস এথেন্সে জন্ম নিয়েছিলেন খ্রিষ্টপূর্ব ৪৬০-এ। এথেন্সের সঙ্গে স্পার্টার যুদ্ধের ইতিবৃত্ত লিখে যান তিনি। নানা ক্ষেত্রে এথেন্সের বাড়বাড়ন্ত দেখে শক্তিশালী স্পার্টা সন্ত্রস্ত হয়ে ওঠে। যুদ্ধ হয় এর অনিবার্য পরিণতি। এটিই ‘তুসেডেডিসের ফাঁদ’।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র সফররত চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং গ্রিস ঐতিহাসিকের এই তত্ত্বকে একেবারে উড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারস্পরিক বোঝাপড়া আরো গভীর করতে চাই আমরা। অন্যান্য কৌশলগত এবং উন্নয়ন-বিষয়ক খাতেও আমরা সহযোগিতা বাড়াতে চাই।’
শি বলেন, বিশ্বে ‘তুসেডেডিসের ফাঁদের’ মতো কিছু নেই। বড় দেশগুলো নিজেদের ভুলে এই ফাঁদে পা দিয়েছে। এর চেয়ে বেশি কিছু নয়।’
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে উদীয়মান পরাশক্তি জার্মানি এবং তাদের অগ্রসরমাণ নৌবাহিনীর তৎপরতা তুসেডেডিস ট্র্যাপের একটি দৃশ্যপট নির্মাণ করে। সম্ভাব্য বিপদ নিয়ে সেই ১৯০৭ সালেই ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নোট লিখেছিলেন, ‘জার্মানি যতটা পারে তত শক্তিশালী নৌবাহিনী গড়ে তোলার চেষ্টায় আছে।’ সাত বছর বাদেই দুই ‘ভ্রাতৃপ্রতিম’ দেশ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।
চীন শত শত বাণিজ্যিক জাহাজকে সামরিক কাজে ব্যবহারের উপযোগী করে রূপান্তর করেছে। তৈরি করেছে ‘ক্যারিয়ার কিলার’ ক্ষেপণাস্ত্র- যা বিশেষভাবে আমেরিকার বিমানবাহী রণতরীকে ডুবিয়ে দেয়ার লক্ষ্য করে গড়া।
আমেরিকায় আঘাত হানতে সক্ষম এমন হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকলের পরীক্ষা চালিয়েছে চীন। দেশটি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রসমৃদ্ধ গোয়েন্দা ডুবোজাহাজ তৈরি করেছে।
চীনা প্রেসিডেন্ট তুসেডেডিস তত্ত্বকে উড়িয়ে দিলেও মনে রাখতে হবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধীর গতির বছরেও চীন সামরিক ব্যয় ১০ শতাংশ বাড়িয়েছে। দেশটির এক জেনারেল বলেছেন, চীন স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠলে ‘কোনো শত্রু তাকে ভয় দেখাতে পারবে না।’
আজ, এই ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে, দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে কোনো ছাড় না দেওয়ার অবস্থায়ই পৌঁছেছে চীন। যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গ্রাহাম অ্যালিসন গত ৫০০ বছরে ঘটা ‘তুসেডেডিসের ফাঁদ’-এর ১৬টি ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেছেন। এর মধ্যে ১২টি ক্ষেত্রেই যুদ্ধ হয়েছে। অ্যালিসনের বিশ্লেষণ, উভয় পক্ষ যখন মনোভাব ও কর্মকাণ্ডে বড় ধরনের ছাড় দিয়েছে, তখনই কেবল যুদ্ধ এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
সূত্র: দা ইন্ডিপেনডেন্ট
Comments
Post a Comment