পৃথিবী কি তাহলে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে?
ক্লকের দেখভালকারী সংস্থা দ্য বুলেটিন অব অ্যাটমিক সায়েন্টিস্টস মঙ্গলবার এই ঘড়ির কাঁটার অবস্থানের কথা জানায়। তাদের তথ্য অনুযায়ী এই কাঁটা এখন দাঁড়িয়ে রয়েছে রাত ১১টা ৫৭ মিনিটে। ১৯৯১ সালের পর থেকে এটাই ডুমসডে ক্লকে রাত ১২টার সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থান। কিন্তু এই ঘড়ির কাঁটাকে কেন পৃথিবী ধ্বংসের এক কাছাকাছি অবস্থানে নির্ধারণ করা হয়েছে? বুলেটিন অব অ্যাটমিক সায়েন্টিস্টস জানিয়েছে, পারমাণবিক অস্ত্র বা জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলোই প্রধানত এর জন্য দায়ী। এসব সঙ্কট মোকাবিলায় বিশ্ব নেতৃত্বের মনোযোগী হওয়ার ব্যর্থতাই মানবজাতির জন্য এই বিপদ ডেকে নিয়ে আসছে। আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্কের অবনতি, ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্কে বাড়তি উত্তেজনা, উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্রের গবেষণা প্রভৃতি বিষয়ও ঘড়ির কাঁটা ধ্বংসের কাছাকাছি সময়ে পৌঁছে যাওয়ার কারণ হিসেবে উঠে এসেছে। বুলেটিনের এক বার্তায় বলা হয়, ‘আমরা এসব ইস্যুকে মানবজাতির অস্তিত্বের জন্য বিপদজনক হিসেবে অভিহিত করেছি। এগুলো সত্যিই তাই। এগুলো সভ্যতার অস্তিত্বকেই হুমকির মুখে ঠেলে দিবে। তাই এসব বিষয়ই বিশ্ব নেতৃত্বের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসা উচিত।’ এর মধ্যে প্যারিসের জলবায়ু চুক্তি বা ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র গবেষণা সীমিত করার উদ্যোগ দেখা গেলেও এগুলোর সাফল্যের ধারাবাহিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা। তাই সার্বিকভাবে বিশ্ব এখন হুমকির মুখে রয়েছে বলেই মন্তব্য তাদের। নোবেলজয়ীসহ বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও গবেষকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি প্যানেল ডুমসডে ক্লকের কাঁটার অবস্থান নির্ধারণ করে থাকেন। পৃথিবীর বিপদের মাত্রা তাদের কাছে যত বেশি মনে হয়, এই ঘড়ির কাঁটাকে তারা রাত ১২টার তত কাছে নিয়ে আসেন। ১৯৪৭ সাল থেকে তারা এই ঘড়ি চালিয়ে আসছেন। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বিপদজনক অবস্থান দেখা যায় ১৯৫৩ সালে। ওই বছর রাত ১১টা ৫৮ মিনিটে পৌঁছে যায় এই ঘড়ি। পরে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বদলের সাথে সাথে এই কাঁটাও পেছাতে থাকে। সবশেষ ১৯৯১ সালে এই ঘড়ির সময় ছিল ১১টা ৪৩ মিনিট, যা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে নিরাপদ বছরের নির্দেশক। গত বছরেও এই ঘড়ির সময় ছিল রাত ১১টা ৫৫ মিনিট। কিন্তু এ বছরের পরিস্থিতি আরও বেশি উদ্বেগজনক মনে করায় ডুমসডে ক্লকের প্যানেলিস্টরা পৃথিবী ধ্বংসের তিন মিনিট আগে এর অবস্থান নির্ধারণ করে দিয়েছেন।
Comments
Post a Comment