যে ভুলগুলো সবাই করে

শীতকালে ঠাণ্ডাতে কিছুটা হলেও জমে যাই সবাই। ঠাণ্ডার সাথে আমাদের সঙ্গী হয়ে চলে আসে সর্দি, কাশি, জ্বর ইত্যাদি। ঠাণ্ডাতে যেন হাত-পা চলতেই চায় না। তখন প্রায় সবাই এমন কিছু কাজ করে যা শরীরের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক।
১. কম পানি পান করা
শীতকালে পানির তেষ্টা খুব কম পায়। তাই গরমকালের তুলনায় শীতকালে পানি খাওয়ার পরিমাণ অনেক কমে যায়। কিন্তু শরীর ঠিক রাখতে গেলে আমাদের প্রতিদিন কমপক্ষে দুই লিটার পানি খাওয়া প্রয়োজন। না খেলে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া কিডনির সমস্যা, হজমের সমস্যা প্রভৃতিও দেখা দেয়। তাই তেষ্টা না পেলেও কিছু সময়ের ব্যবধানে বেশি করে পানি খান। এতে দেখবেন শীতকালে শরীরে কোনো সমস্যাই হবে না।
২. বেশি গরম জামা পরা
শীতকালে ঠাণ্ডার হাত থেকে বাঁচতে আমরা অনেক গরম জামা পরি। কিন্তু প্রয়োজনের থেকে বেশি গরম জামা পরার ফলে আমাদের শরীরের ভেতরে ঘাম হয়ে যায়। যার জন্য ঠাণ্ডা লাগার সমস্যাও দেখা দেয়। তাই বেশি গরম জামা না পরে ঠাণ্ডা থেকে বাঁচতে যতটুকু দরকার ততটুকু পরুন।
৩. হাতের তালু এবং পায়ের পাতা ঢেকে রাখা
ঠাণ্ডার হাত থেকে বাঁচতে হাতের তালু এবং পায়ের পাতা ঢেকে রাখা কখনোই উচিত নয়। কারণ এর মধ্যে দিয়েই আমাদের শরীর নতুন আবহাওয়ার সাথে পরিচিত হয়। কিন্তু হাত এবং পা খুলে না রেখে ঢেকে রাখলে নতুন আবহাওয়া কখনোই শরীরের সাথে মিশে যেতে পারে না। এছাড়া রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় অনেকেই পায়ে মোজা পরে থাকেন। রাতে ঘুমানোর সময় মোজা পরলে শরীরে রক্তচলাচল ঠিক মতো হয় না। তাই বাইরে বেরনোর সময় ঢেকে রাখলেও ঘরে থাকার সময় ঢেকে না রাখাই ভালো।
৪. খাওয়া-দাওয়া
শীতকালে খাবার খুব তাড়াতাড়ি হজম হয়ে যায়। তাই খুব বেশি মশলাদার খাবার খাওয়া হয়। যার জন্য ওজন বেড়ে যাওয়ার একটা প্রবণতা দেখা যায়। এছাড়া শীতকালে খুব একটা ব্যায়াম করা হয় না। তার জন্যও অনেক সময় ওজন বেড়ে যায়। তাই হজম হয়ে গেলেও স্বাভাবিক নিয়ম অনুসারে খাওয়া-দাওয়া করাটাই ভালো। একটা ডায়েট বানিয়ে নিয়ে তবেই খান।
৫. অনেক বেশি ঘুমানো
শীতকালে ঘুম খুব তাড়াতাড়ি চলে আসে। এছাড়া বেশিক্ষণ ধরে ঘুমানোর একটা প্রবণতাও দেখতে পাওয়া যায়। সকালে যেন বিছানা ছাড়তে ভালোই লাগে না। যত ঘুমানোই হোক না কেন দুপুরের দিকে একটু ঝিমুনি চলে আসে সবারই। তাই অনেক সময় শীতকালেই ঘুমানো এবং ঘুম থেকে ওঠার সময়ের কোনো ঠিকই থাকে না। এতেও ওজন বেড়ে যেতে পারে। তাই যত খারাপই লাগুক না কেন একটা নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে ঘুমাতে যান এবং ঘুম থেকে উঠুন।
৬. ঘরে থাকা
ঠাণ্ডার জন্য অনেকেরই ঘর থেকে বের হতে ইচ্ছে করে না। বাইরে যদি খুব বেশি ঠাণ্ডা পড়ে তাহলে না বেরনোই ভালো। কিন্তু এমনি বেশিক্ষণ ঘরের মধ্যে থাকা উচিত নয়। বাইরের আবহাওয়ার সাথে শরীরকে খাপ খাওয়ানো খুব দরকার। তাই উপযুক্ত জামা পড়ে বাইরে গিয়ে কিছুক্ষণের জন্য ঘুরে আসতেই পারেন।
৭. অতিরিক্ত ক্রিম মাখা
শীতকালে ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়। তার জন্য ক্রিম মাখা দরকার। কিন্তু প্রয়োজনের থেকে বেশি ক্রিক মাখা কখনোই উচিত নয়। কারণ বেশি ক্রিম মাখার ফলে রোমকূপগুলো বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে মুখে ব্রণ এবং ত্বকে অ্যালার্জির সৃষ্টি হয়।
৮. সানস্ক্রিন না মাখা
শীতকালে আমরা অনেকেই মনে করে থাকি সানস্ক্রিন মাখার কোনো দরকার পরে না। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা। শীতকালে আরো বেশি করে সানস্ক্রিন মাখা দরকার। কারণ শীতকালে খুব বেশি পরিমাণে কালো হয়ে যাওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। সূর্য আমাদের অনেকটা কাছে চলে আসে।

৯. জামা কাপড় ঘরে শুকাতে দেয়া
শীতকালে টান আবহাওয়া থাকার জন্য অনেকেই ঘরের মধ্যে জামা-কাপড় শুকাতে দেন। কিন্তু জামা ধোয়ার পর তা রোদে না দেয়া হলে বাচ্চাদের ইনফেকশন হতে পারে। কারণ রোদই একমাত্র ইনফেকশান দূর করতে সাহায্য করে।
১০. অতিরিক্ত ওষুধ খাওয়া
অল্প ঠাণ্ডা লাগার পরেই ওষুধ খেয়ে নেন অনেকেই। কিন্তু সব সময় ওষুধ না খাওয়াই ভালো। বেশি ওষুধ খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে।

Comments