কর্মসংস্থান না থাকায় এত সাংবাদিক
দলীয় চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বক্তব্য এবং বিরোধী দলের নেতার বক্তব্যে ভিন্নতার বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন রওশন এরশাদকে। এর জবাবে রওশন কিছুই বলেননি। একপর্যায়ে তিনি সাংবাদিকদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, দেশে কর্মসংস্থান নেই বলে সবাই মিডিয়ায় কাজ করতে আসে। তাই ছোটখাটো সব বিষয় নিয়ে নিউজ করা হয়। এত মিডিয়া। এত সাংবাদিক। কোনো ঘটনাই বাদ পড়ে না। তার এ বক্তব্যে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকরা রওশনের বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন। জাতীয় পার্টির এমপি ও শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু এবং কাজী ফিরোজ রশীদ এ সময় সাংবাদিকদের থামানোর চেষ্টা করেন। শেষে রওশন বলেন, না, না আমি বলতেছি কি শোনেন। সাংবাদিকতা ভালো, নোবেল জব। আমি আপনাদের ডিসকারেজ করছি না। কারণ আমাদের ছেলেরা ভালো চাকরি না পেয়ে বিপথে যাচ্ছে। ড্রাগ খাচ্ছে। আপনারা যে কজন সাংবাদিক আছেন, অনেক ভালো করছেন।
রওশন বলেন, প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এ নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়, সেজন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এ সময় সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে বলে কি আপনি মনে করেন? জবাবে রওশন বলেন, সেটা কোনো কথা না। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। দলের চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন, আপনি কি তার সঙ্গে একমত? এক সাংবাদিকের এ প্রশ্নের জবাবে রওশন বলেন, আপনি একটু বেশি পেঁচান। বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, ‘আমাদের দলও এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। তবে সব জায়গায় প্রার্থী দিতে পারিনি আমরা। এ সময় প্রার্থী দিতে না পারার কারণ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে রওশন বলেন, অমাদের সচ্ছলতা নেই। আমরা ছোট দল।’ কিন্তু দলের চেয়ারম্যান বলেছেন ক্ষমতাসীনদের বাধার মুখে অর্ধেক প্রার্থী কমে গেছে। এমনকি বর্তমান প্রার্থীরা ক্ষমতাসীনদের দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে বলে ইসিতে অভিযোগ করা হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রওশন বলেন, ‘তিনি দলীয় চেয়ারম্যান হিসেবে কথা বলেছেন। চেয়ারম্যানকে অনেক কথা বলতে হয়। আর নির্বাচনে ছোটখাটো হামলার ঘটনা ঘটেই।’ নির্বাচন কমিশনের ভূমিকায় আপনি সন্তুষ্ট কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে রওশন বলেন, উনারা তো চেষ্টা করছেন। আমরা সন্তুষ্ট। কিন্তু দলের চেয়ারম্যান বলেছেন নির্বাচন কমিশন মেরুদণ্ডহীন এবং এই কমিশন দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
এমন প্রশ্নের জবাবে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, তিনি দলকে চাঙ্গা রাখার জন্য এসব কথা বলেন। দেশে গণতন্ত্র নেই, এরশাদের এই বক্তব্যের সঙ্গে আপনি একমত কিনা? এর জবাবেও রওশন বলেন, উনি (এরশাদ) দলকে চাঙ্গা রাখার জন্যই এসব কথা বলেন। দলকে চাঙ্গা রাখার জন্য একটা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে এভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করা সঠিক কিনা? এর জবাবে তিনি বলেন, কই তিনি তো প্রশ্নবিদ্ধ করেন নি।
দু’বছরেও বিরোধীদলীয় উপনেতা বানাতে না পারার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের দলে সবাই উপনেতা হতে চায়। তাই আমরা কাউকেই বানাতে পারিনি। পৌর নির্বাচন নিয়ে দলের সম্ভাবনার বিষয়ে তিনি বলেন, সবাই তো আর জিতে আসতে পারে না। তবে আমরা চেষ্টা করছি।
সংবাদ সম্মলনে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান রওশন। তিনি বলেন, এত বছর পরে এটা নিয়ে প্রশ্ন তোলা মোটেও সম্মানজনক নয়। এটা কোনোভাবেই ঠিক না। একটা স্যাটেল ইস্যু নিয়ে বিতর্ক করা উচিত নয়।
Comments
Post a Comment