লড়াই করতে সিরিয়ায়, যৌনদাসী হয়ে মৃত্যু

মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস’র হয়ে লড়াই করতে সিরিয়ায় যাওয়া অস্ট্রিয়ান কিশোরীর পরিণতি জানা গেছে। কয়েকদিন পরই ইউরোপ থেকে সিরিয়ায় যাওয়া ওই কিশোরীকে যৌনদাসী বানায় আইএস। নতুন সদস্যদের মনোরঞ্জনের তাকে ‘উপহার’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পরে পালানোর চেষ্টা করায় তাকে বেদম পেটালে তার মৃত্যু হয়। এ খবর দিয়েছে দ্য সান। আইএস’র বন্দিশালা থেকে পালাতে সক্ষম হওয়া তিউনেশিয়ার এক নারী এ স¤পর্কে তথ্য দেন। সামরা কেসিনোভিচ ও সাবিনা সেলিমোভিচ নামে অস্ট্রিয়ার দুই বোনের সঙ্গে একত্রে ছিলেন তিউনেশিয়ার এ নারী। 
২০১৪ সালে সামরা (১৭) ও সাবিনা (১৫) ভিয়েনা থেকে নিখোঁজ হয়। পরিবারের জন্য রেখে যাওয়া একটি চিরকুটে লেখা ছিল: আমাদের খুঁজো না। আমরা আল্লাহ’র প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করবো। তার জন্য মৃত্যুবরণ করবো। বসনিয়ান বংশোদ্ভূত এ কিশোরীদ্বয় তুরস্ক হয়ে সিরিয়ায় প্রবেশ করে। এর আগে বসনিয়ার চরমপন্থী বক্তা এবু তেজমা ভিয়েনায় তাদের ব্রেইনওয়াশ করে বলে ভাবা হচ্ছে। সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটিতে যোগ দেওয়ার পর আইএস যোদ্ধাদের সঙ্গে তাদের জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়। কালাশনিকভ হাতে ও বোরখা পরিহিত এ দুই মেয়ের ছবি ব্যাপকভাবে প্রচারও করে আইএস। সদস্য সংগ্রহে ছবিগুলো কাজেও দিয়েছিল। 
পালিয়ে আসা তিউনেশিয়ান ওই নারী ১৭ বছর বয়সী সামরার সঙ্গে একই ঘরে ছিল। সে জানায়, সামিরাকে জিহাদিদের সঙ্গে যৌনমিলনে বাধ্য করা হয়েছে। নতুন যোদ্ধাদের জন্য সামরা ও তাকে যৌন-উপহার হিসেবে বিবেচনা করা হতো। তিনি জানান, বেশ কয়েকবার পালানোর চেষ্টা করে সামরা। তবে সর্বশেষ চেষ্টার পর তাকে হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হয়। আহতাবস্থায় তার মৃত্যু হয়। 
গত বছর আইএস-এ যোগ দিতে সিরিয়ায় পালিয়ে যাওয়ার পর সামরার ছোট বোন সাবিনা টুইটারে লিখেছিল, ‘আমি এখানে মুক্ত। আমি আমার ধর্ম পালন করতে পারবো। ভিয়েনায় তা পারছিলাম না।’ তবে আইএস’র শক্ত ঘাঁটি আল-রাক্কায় লড়াইয়ের সময় সাবিনা মারা যায়। এরপরই নিজের পরিবারের কাছে লেখা এক চিঠিতে সামরা জানায়, আইএস’র নৃশংসতায় সে অসুস্থ। সে পালাতে চাইলেও পারছিল না। অস্ট্রিয়ান মিডিয়া জানাচ্ছে, আল রাক্কা থেকে পালানোর সময় ধরা পড়লে তাকে বেদম মার দেওয়া হয়। পরে তার মৃত্যু হয়। অস্ট্রিয়ান সরকার এখনও এ খবর নিশ্চিত করেনি।

Comments