নৃশংসতা অস্বীকার পাকিস্তানের

মানবতাবিরোধী অপরাধে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকরের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে পাকিস্তান। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নৃশংসতা চালানোর কথা অস্বীকার করেছে দেশটি। সোমবার এ প্রতিবাদ জানাতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয় সেখানে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে। গত ২৩শে নভেম্বর ঢাকায় পাকিস্তানের দূতকে তলব করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে বক্তব্য দিয়েছিল তা ভিত্তিহীন দাবি করা হয়েছে পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে নৃশংসতা ও অপরাধ সংঘটনের বিষয়টিও প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান। বলেছে, সত্যের চেয়ে বড় কিছু নেই। গতকাল পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশি ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করেন ডাইরেক্টর জেনারেল (এসএ অ্যান্ড সার্ক)। এ সময়ে বাংলাদেশি হাইকমিশনারকে জানানো হয় যে, গত ২৩শে নভেম্বর বাংলাদেশ সরকার যে বক্তব্য দিয়েছে তা ভিত্তিহীন ও অসত্য বলে প্রত্যাখ্যান করছে পাকিস্তান সরকার। ওই বিবৃতিতে পাকিস্তান আরও বলেছে, এটা দুঃখজনক যে, বাংলাদেশের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক উন্নয়নের জোর আকাঙ্ক্ষা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মানহানি করার উদ্যোগ নিয়েছে। দু’দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন শুধু অব্যাহত রাখাই নয় একই সঙ্গে তা আরও শক্তিশালী করায় বিশ্বাস করে পাকিস্তান। কিন্তু দুঃখজনক হলো, বাংলাদেশ সরকার সেই অনুভূতির প্রতি সম্মান দেখাচ্ছে না বলেই দৃশ্যত মনে হয়। ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কের ভিত্তি ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি। এর জবাবে বাংলাদেশ যুক্তি দেখাচ্ছে যে, ১৯৭৪ সালের চুক্তির একটি ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে পাকিস্তান। জোর দিয়ে বলা দরকার যে, ওই চুক্তি অনুযায়ী ক্ষমার যে সুযোগ রাখা হয়েছে তা না করে বাংলাদেশ সরকার বিচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পাকিস্তানের জনগণের হৃদস্পন্দনের সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের হৃদস্পন্দনের মিল রয়েছে। তাই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করার ইচ্ছা পাকিস্তান আবারও প্রকাশ করছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- দক্ষিণ এশিয়ার এই উপমহাদেশে মুসলিমদের জন্য একটি আলাদা দেশ প্রতিষ্ঠার জন্য নেতারা যে সংগ্রামের সময় যে ভূমিকা রেখেছিলেন তা দু’দেশের ভুলে যাওয়া উচিত নয়। তাই বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মানুষের মধ্যে সমন্বিতভাবে শুভবুদ্ধির চেতনা, বন্ধুত্ব ও সম্প্রীতি নিয়ে এগিয়ে যাওয়া উচিত। 
উল্লেখ্য, সম্প্রতি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। এ নিয়ে পাকিস্তান সরকারের তরফ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এক মুখপাত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রকাশিত বিবৃতিতে পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে ওই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়। এমন প্রতিক্রিয়া প্রকাশের পর এর ব্যাখ্যা চেয়ে ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির হাইকমিশনার সুজা আলমকে তলব করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাকিস্তানের বক্তব্যের কড়া প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ

Comments