Posted by
shahin
অন্যের দোষ নিয়ে কথা বলা ?
আমার ২৬ বছরের জীবনে নিজেকে দেখে এবং নিজের চারপাশের মানুষগুলোকে দেখে এই কথাটা এক শ ভাগ সত্যি মনে হয়। সেটা হলো অন্যের দোষ নিয়ে কথা বলা বা দেখা আমাদের দেশের মানুষের স্বভাব। এটা পৃথিবীর সব মানুষের ক্ষেত্রে হয়তো প্রযোজ্য নয়। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে বেশি প্রযোজ্য। আমার কাছে কেন জানি মনে হয়, জাতি হিসেবে আমরা এই কাজে একটু বেশি পটু। বিরোধী দল বলে সরকার দেশের বারটা বাজাচ্ছে আর সরকার বলে বিরোধীরাই এর জন্য দায়ী। আর জনগণতো কোনো যুক্তি ছাড়াই যে কোনো ব্যাপারে সরকার ও বিরোধী দলকে দোষারোপ করে। একজন ফরাসি দার্শনিকের উক্তি—এভরি নেশন গেটস গভর্নমেন্ট ইট ডিসার্ভস। অর্থাৎ জনগণ যেমন হবে সরকারও হবে তেমন।
আমাদের দেশে এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়। যারা ছোট বড় যে অন্যায়ই করুক না কেন, সকালে পত্রিকা পড়ে, টিভিতে কোনো দুর্নীতি, সন্ত্রাস বা অনিয়মের খবর দেখে কিংবা কোনো আলোচনায় নিজের সব দোষ ভুলে গিয়ে বলেন, এ কারণেই দেশটা এগোতে পারল না।
আমাদের দেশে এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়। যারা ছোট বড় যে অন্যায়ই করুক না কেন, সকালে পত্রিকা পড়ে, টিভিতে কোনো দুর্নীতি, সন্ত্রাস বা অনিয়মের খবর দেখে কিংবা কোনো আলোচনায় নিজের সব দোষ ভুলে গিয়ে বলেন, এ কারণেই দেশটা এগোতে পারল না।
নিজেকে দিয়ে শুরু করি। আমার গ্রামের বাড়ি ফেনীতে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম ফেনী থেকে চট্টগ্রাম কাছে হওয়ার সুবাদে। ঈদে অথবা যেকোনো সময় বাড়ি যেতে কখনই অগ্রিম টিকিট কাটতে হতো না। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ দিকে বিভিন্ন প্রয়োজনে ঢাকা যেতে হতো। ট্রেনের প্রতি আমার অদ্ভুত একটা টান থাকায় ট্রেনে যেতে ভালো লাগত। কিন্তু ট্রেনের টিকিট তো সোনার হরিণ! দশ দিন আগে গেলেও টিকিট নাই। পরে রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে টিকিটের ব্যবস্থা করলাম। এরপর যতবারই ঢাকা গিয়েছি এভাবে টিকিটের ব্যবস্থা করেছি। এটা অন্যায় নয় কি? কিন্তু মনেই হতো না অন্যায় করছি।
অনেক বন্ধুদের দেখতাম, যখন বাড়ি যেতো কালোবাজারে টিকিট কিনত। উপায় নেই। টিকিট কাউন্টারে গেলে টিকিট নেই। আমাদের মনেই হয় না এটা অন্যায়! আমরা বলি আমি না নিলে অন্য কেউ নিবে। এভাবে সবাই মনে করেন আমি না নিলে অন্য কেউ নিবে। সুতরাং আমি নেব না কেন? এভাবে আমরা একটা অন্যায়কে বৈধতা দিচ্ছি। এই কারণেই টিকিট কাউনটারে টিকিট পাওয়া যায় না। কালোবাজারে পাওয়া যায়।
একবার বাসে প্রায় পাঁচ থেকে সাতজন যাত্রীর সঙ্গে তর্ক শুরু হলো। তাদের কথা সবকিছু সরকারকেই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, খুন সব সরকার চাইলেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আমার যুক্তি ছিল সরকার চাইলেই সবকিছু ঠিক করতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি আপনি ঠিক হব। তাদের অনেক যুক্তিই দিয়েছি, কোনো কাজ হয়নি। তাদের যুক্তি একটাই এসব সরকারের দায়িত্ব।
আচ্ছা দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, খুন, সন্ত্রাস ও অনিয়ম যারা করে তারা জনগণের বাইরের কেউ? নাকি সরকার জনগণের বাইরের কেউ? আমাদের মধ্য থেকেই কেউ এমপি হয়, কেউ মন্ত্রী হয়, কেউ প্রশাসনের বড় পদে চাকরি করে। আমাদের সন্তানই ভবিষ্যতে এমপি-মন্ত্রী হবে অথবা প্রশাসনের বড় পদে চাকরি করবে। সুতরাং, আমি আপনি যত দিন ঠিক হব না কিছুই ঠিক হবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ে জীবনের শেষ দিকে সব বন্ধুদের একটাই কথা, মামা-খালু নেই, চাকরি কেমনে হবে। মামা-খালু যাদের আছে তারা যেভাবে পারছে সুবিধা নিচ্ছে। যাদের নেই তাদের থাকলে এই সুবিধা তারাও হাতছাড়া করত না। আমরা কয়জন এ কথা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারব যে আমাদের মামা-খালু থাকলেও আমরা এই সুবিধা নেব না। সবাই না হোক বেশিরভাগই মামা-খালুর কথাই বলবে। তাদের যুক্তি একটাই, আমি না নিলে অন্য কেউ নিবে! এভাবে আমি আপনি অনেকেই চাকরি নিচ্ছি। যারা এভাবে চাকরিতে ঢুকছেন তারা কি জনগণের বাইরের কেউ? নাকি যারা দিচ্ছেন তারা জনগণের বাইরের কেউ? এভাবেই আমি আপনি এই সব অন্যায়ের বৈধতা দিচ্ছি। অন্যের দোষ খোঁজার আগে, যত দিন নিজে যে অন্যায়গুলো করছি ওই অন্যায়গুলো অন্যায় বলে স্বীকার করে নিয়ে বিরত হতে পারব না তত দিন আমাদের এই সিস্টেমের মধ্যেই বেঁচে থাকতে হবে।
অনেক বন্ধুদের দেখতাম, যখন বাড়ি যেতো কালোবাজারে টিকিট কিনত। উপায় নেই। টিকিট কাউন্টারে গেলে টিকিট নেই। আমাদের মনেই হয় না এটা অন্যায়! আমরা বলি আমি না নিলে অন্য কেউ নিবে। এভাবে সবাই মনে করেন আমি না নিলে অন্য কেউ নিবে। সুতরাং আমি নেব না কেন? এভাবে আমরা একটা অন্যায়কে বৈধতা দিচ্ছি। এই কারণেই টিকিট কাউনটারে টিকিট পাওয়া যায় না। কালোবাজারে পাওয়া যায়।
একবার বাসে প্রায় পাঁচ থেকে সাতজন যাত্রীর সঙ্গে তর্ক শুরু হলো। তাদের কথা সবকিছু সরকারকেই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, খুন সব সরকার চাইলেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আমার যুক্তি ছিল সরকার চাইলেই সবকিছু ঠিক করতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি আপনি ঠিক হব। তাদের অনেক যুক্তিই দিয়েছি, কোনো কাজ হয়নি। তাদের যুক্তি একটাই এসব সরকারের দায়িত্ব।
আচ্ছা দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, খুন, সন্ত্রাস ও অনিয়ম যারা করে তারা জনগণের বাইরের কেউ? নাকি সরকার জনগণের বাইরের কেউ? আমাদের মধ্য থেকেই কেউ এমপি হয়, কেউ মন্ত্রী হয়, কেউ প্রশাসনের বড় পদে চাকরি করে। আমাদের সন্তানই ভবিষ্যতে এমপি-মন্ত্রী হবে অথবা প্রশাসনের বড় পদে চাকরি করবে। সুতরাং, আমি আপনি যত দিন ঠিক হব না কিছুই ঠিক হবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ে জীবনের শেষ দিকে সব বন্ধুদের একটাই কথা, মামা-খালু নেই, চাকরি কেমনে হবে। মামা-খালু যাদের আছে তারা যেভাবে পারছে সুবিধা নিচ্ছে। যাদের নেই তাদের থাকলে এই সুবিধা তারাও হাতছাড়া করত না। আমরা কয়জন এ কথা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারব যে আমাদের মামা-খালু থাকলেও আমরা এই সুবিধা নেব না। সবাই না হোক বেশিরভাগই মামা-খালুর কথাই বলবে। তাদের যুক্তি একটাই, আমি না নিলে অন্য কেউ নিবে! এভাবে আমি আপনি অনেকেই চাকরি নিচ্ছি। যারা এভাবে চাকরিতে ঢুকছেন তারা কি জনগণের বাইরের কেউ? নাকি যারা দিচ্ছেন তারা জনগণের বাইরের কেউ? এভাবেই আমি আপনি এই সব অন্যায়ের বৈধতা দিচ্ছি। অন্যের দোষ খোঁজার আগে, যত দিন নিজে যে অন্যায়গুলো করছি ওই অন্যায়গুলো অন্যায় বলে স্বীকার করে নিয়ে বিরত হতে পারব না তত দিন আমাদের এই সিস্টেমের মধ্যেই বেঁচে থাকতে হবে।
- Get link
- X
- Other Apps
Comments
Post a Comment