আমার গলায় দড়ি দিয়ে মরে যাওয়া উচিত
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে কার্যালয়ে ঢুকতে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে গতকাল রোববার আন্দোলনরত শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করেছে ছাত্রলীগ। এর আগে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ করেছেন উপাচার্য।
এদিকে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা আজ সকাল নয়টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালনের ডাক দিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্র ও দুই পক্ষের অভিযোগ থেকে জানা গেছে, গতকাল সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল ও বোর্ড অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। এ দুটি বৈঠককে প্রতিহত করতে উপাচার্যবিরোধী শিক্ষকেরা গতকাল সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। আগের রাতে বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল ভোর ছয়টার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ছাত্রলীগের কর্মীরা উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে আন্দোলনকারী পাঁচ-ছয়জন শিক্ষক সেখানে যান। তাঁরা ছাত্রলীগের কর্মীদের উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থানের কারণ জানতে চান। ছাত্রলীগের কর্মীরা বলেন, তাঁদের ভর্তি ও একাডেমিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ওই দুটি বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা রয়েছে। এ নিয়ে কথা বলার একপর্যায়ে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের সঙ্গে ছাত্রলীগের কর্মীদের বাগ্বিতণ্ডা হয়।
এরপর সকাল আটটার দিকে উপাচার্য আমিনুল হক তাঁর কার্যালয়ে ঢুকতে গেলে আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা তাঁকে বাধা দেন। উপাচার্যকে আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা ঘিরে ফেলেন। একপর্যায়ে টানাহেঁচড়া ও ধস্তাধস্তি শুরু হয়। তখন প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য ও ছাত্রলীগের কর্মীরা উপাচার্যকে সেখান থেকে মুক্ত করে তাঁর কার্যালয়ে নিয়ে যান। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে অধ্যাপক ইয়াসমিন হক, অধ্যাপক সৈয়দ শামসুল আলমসহ আন্দোলনকারী কয়েকজন শিক্ষক লাঞ্ছিত হন। এ ছাড়া ছাত্রলীগের একদল কর্মী শিক্ষকদের হাতে থাকা ব্যানার কেড়ে নিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর আন্দোলনকারী শিক্ষকদের কয়েকজন উপাচার্যের কার্যালয়ের প্রধান ফটক বন্ধ করে দিতে চাইলে নারী পুলিশ সদস্য অধ্যাপক ইয়াসমিন হককে সেখান থেকে নিয়ে যান।
পরে দুটো বৈঠক হলেও আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা দুপুর পর্যন্ত উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে থাকেন। আন্দোলনকারী শিক্ষকদের পক্ষে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালও উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে হামলাকারীরা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হয়, তাহলে তাদের শিক্ষক হিসেবে আমার গলায় দড়ি দিয়ে মরে যাওয়া উচিত। আমি এখনই গলায় দড়ি দিয়ে মরছি না, কিন্তু আমি তীব্র মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছি।’
উপাচার্যের বিরুদ্ধে কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ এনে তাঁর পদত্যাগের দাবিতে গত ১২ এপ্রিল থেকে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ ব্যানারে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষকদের একাংশ। আবার এ আন্দোলনকে বিশ্ববিদ্যালয় অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা হিসেবে আখ্যা দিয়ে সরকার-সমর্থক শিক্ষকদের আরেকটি অংশ ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ ব্যানারে উপাচার্যের পক্ষে অবস্থান নেন। এদিকে শিক্ষকদের আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ানোর দাবিতে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’র ব্যানারে আন্দোলন করছে ছাত্রলীগ। এ অবস্থায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২৪ আগস্ট এক নির্দেশনায় আন্দোলনরত শিক্ষকদের আন্দোলন বন্ধ রেখে শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখার আহ্বান জানায়।
উপাচার্য আমিনুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আন্দোলনকারী গুটিকয়েক শিক্ষক একাডেমিক কাউন্সিল ও বোর্ড অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজের বৈঠক প্রতিহত করার নাম করে আমাকে আমার কার্যালয়ে ঢুকতে বাধা দিয়েছেন। তাঁরা এ সময় আমার সঙ্গে যে ন্যক্কারজনক আচরণ করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এমন ঘটনা এর আগে ঘটেনি।’
তবে উপাচার্যকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ অস্বীকার করে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের অন্যতম নেতা অধ্যাপক সৈয়দ হাসানুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থী নামধারী ছাত্রলীগ কর্মীরা যেভাবে উপাচার্যকে তাঁর কার্যালয়ে ঢোকানোর ব্যবস্থা করে, তাতে আমরাই বরং হামলা ও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছি।’ এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ তাঁরা কর্মবিরতি পালন করবেন বলে জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান এ ঘটনায় ছাত্রলীগের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ঘটনায় ছাত্রলীগের কেউ অংশ নিয়ে থাকলে তা তাঁদের সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত-একাডেমিক বিষয়। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে সকলকে সহযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছি।’
এদিকে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা আজ সকাল নয়টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালনের ডাক দিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্র ও দুই পক্ষের অভিযোগ থেকে জানা গেছে, গতকাল সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল ও বোর্ড অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। এ দুটি বৈঠককে প্রতিহত করতে উপাচার্যবিরোধী শিক্ষকেরা গতকাল সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। আগের রাতে বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল ভোর ছয়টার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ছাত্রলীগের কর্মীরা উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে আন্দোলনকারী পাঁচ-ছয়জন শিক্ষক সেখানে যান। তাঁরা ছাত্রলীগের কর্মীদের উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থানের কারণ জানতে চান। ছাত্রলীগের কর্মীরা বলেন, তাঁদের ভর্তি ও একাডেমিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ওই দুটি বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা রয়েছে। এ নিয়ে কথা বলার একপর্যায়ে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের সঙ্গে ছাত্রলীগের কর্মীদের বাগ্বিতণ্ডা হয়।
এরপর সকাল আটটার দিকে উপাচার্য আমিনুল হক তাঁর কার্যালয়ে ঢুকতে গেলে আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা তাঁকে বাধা দেন। উপাচার্যকে আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা ঘিরে ফেলেন। একপর্যায়ে টানাহেঁচড়া ও ধস্তাধস্তি শুরু হয়। তখন প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য ও ছাত্রলীগের কর্মীরা উপাচার্যকে সেখান থেকে মুক্ত করে তাঁর কার্যালয়ে নিয়ে যান। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে অধ্যাপক ইয়াসমিন হক, অধ্যাপক সৈয়দ শামসুল আলমসহ আন্দোলনকারী কয়েকজন শিক্ষক লাঞ্ছিত হন। এ ছাড়া ছাত্রলীগের একদল কর্মী শিক্ষকদের হাতে থাকা ব্যানার কেড়ে নিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর আন্দোলনকারী শিক্ষকদের কয়েকজন উপাচার্যের কার্যালয়ের প্রধান ফটক বন্ধ করে দিতে চাইলে নারী পুলিশ সদস্য অধ্যাপক ইয়াসমিন হককে সেখান থেকে নিয়ে যান।
পরে দুটো বৈঠক হলেও আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা দুপুর পর্যন্ত উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে থাকেন। আন্দোলনকারী শিক্ষকদের পক্ষে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালও উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে হামলাকারীরা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হয়, তাহলে তাদের শিক্ষক হিসেবে আমার গলায় দড়ি দিয়ে মরে যাওয়া উচিত। আমি এখনই গলায় দড়ি দিয়ে মরছি না, কিন্তু আমি তীব্র মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছি।’
উপাচার্যের বিরুদ্ধে কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ এনে তাঁর পদত্যাগের দাবিতে গত ১২ এপ্রিল থেকে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ ব্যানারে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষকদের একাংশ। আবার এ আন্দোলনকে বিশ্ববিদ্যালয় অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা হিসেবে আখ্যা দিয়ে সরকার-সমর্থক শিক্ষকদের আরেকটি অংশ ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ ব্যানারে উপাচার্যের পক্ষে অবস্থান নেন। এদিকে শিক্ষকদের আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ানোর দাবিতে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’র ব্যানারে আন্দোলন করছে ছাত্রলীগ। এ অবস্থায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২৪ আগস্ট এক নির্দেশনায় আন্দোলনরত শিক্ষকদের আন্দোলন বন্ধ রেখে শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখার আহ্বান জানায়।
উপাচার্য আমিনুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আন্দোলনকারী গুটিকয়েক শিক্ষক একাডেমিক কাউন্সিল ও বোর্ড অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজের বৈঠক প্রতিহত করার নাম করে আমাকে আমার কার্যালয়ে ঢুকতে বাধা দিয়েছেন। তাঁরা এ সময় আমার সঙ্গে যে ন্যক্কারজনক আচরণ করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এমন ঘটনা এর আগে ঘটেনি।’
তবে উপাচার্যকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ অস্বীকার করে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের অন্যতম নেতা অধ্যাপক সৈয়দ হাসানুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থী নামধারী ছাত্রলীগ কর্মীরা যেভাবে উপাচার্যকে তাঁর কার্যালয়ে ঢোকানোর ব্যবস্থা করে, তাতে আমরাই বরং হামলা ও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছি।’ এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ তাঁরা কর্মবিরতি পালন করবেন বলে জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান এ ঘটনায় ছাত্রলীগের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ঘটনায় ছাত্রলীগের কেউ অংশ নিয়ে থাকলে তা তাঁদের সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত-একাডেমিক বিষয়। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে সকলকে সহযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছি।’
Comments
Post a Comment