Posted by
shahin
মুস্তাফিজুর রহমান, সৌম্য সরকার ও সাব্বির রহমান। আজকে যাঁরা ক্রিকেট বিশ্ব কাঁপাচ্ছেন, একদিন তাঁরাও খেলেছেন পাড়ার মাঠে। কেমন ছিল তাঁদের সেই জীবন? তাঁদের ক্রিকেট জীবনের শুরুর গুরুরাই বা কারা?
মুস্তাফিজুর রহমান যখন দুর্বোধ্য স্লোয়ার বা কাটার দিয়ে টপাটপ ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের উইকেট তুলে নিচ্ছিলেন তখন কী করছিলেন মুফাচ্ছিনুল ইসলাম ও আলতাফ হোসেন? কিংবা সাব্বির রহমান যখন ভারতীয় বোলারদের বাউন্ডারির ওপারে পাঠিয়ে দিচ্ছিলেন নির্বিকার ভঙ্গিতে, কী করছিলেন আবদুর রশিদ?
হয়তো কেউ বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন। কেউবা স্বভাবসুলভ রাশভারী চেহারায় নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে সাবেক শিষ্যের কীর্তি দেখছিলেন। যেভাবেই দেখুন না কেন, হৃদয়ে যে আনন্দের প্লাবন বয়ে যাচ্ছিল, বলার অপেক্ষা রাখে না। এই মুফাচ্ছিনুল ইসলাম, আলতাফ হোসেন কিংবা আবদুর রশিদ কে? তিনজনই কোচ। দুজন জড়িয়ে আছেন মুস্তাফিজ ও সৌম্যের সঙ্গে, আরেকজন সাব্বিরের।
দুই ‘দেশি’র একই গুরুভারত-সিরিজে একের পর এক কীর্তি গড়ে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মুস্তাফিজ। ১৩ উইকেট নিয়ে হয়েছেন সিরিজসেরা। অন্যদিকে এ সিরিজে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ১২৮ রান করেছেন সৌম্য। দুজনই উঠে এসেছেন সাতক্ষীরা থেকে। এ কারণে নাকি একে অপরকে ডাকেন ‘দেশি’ বলে! দুজনের গুরু আবার এক। মুস্তাফিজ ও সৌম্য দুজনের শুরু আলতাফ হোসেনের কাছে।
বছর তিনেক আগের কথা। সাতক্ষীরা অনূর্ধ্ব–১৪ দলের বাছাইয়ের আগে জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাহী সদস্য আলতাফ গিয়েছিলেন মুস্তাফিজের গ্রামে। দেখেন মাঠে টেনিস বলে দারুণ খেলছেন মুস্তাফিজ। তিনি তখন মুস্তাফিজকে বাছাইপর্বে অংশ নিতে সাতক্ষীরায় আসতে বলেন।
তবে মুস্তাফিজের আসল ধাপটা শুরু হয় মুফাচ্ছিনুল ইসলামের হাতে। বিসিবির এই সাতক্ষীরা জেলা সহকারী কোচ মুস্তাফিজের মতো প্রতিভা খুঁজে বের করায় কৃতজ্ঞতা জানালেন আলতাফকে। দুজন অবশ্য কাজ করেন একই সঙ্গে। মুস্তাফিজ কীভাবে দারুণ বোলার হয়ে উঠলেন, ২৪ জুন সকালে মুফাচ্ছিনুল মুঠোফোনে সে গল্প শোনালেন এভাবে, ‘ওর শুরুতে ব্যাটিংয়ে ঝোঁক ছিল। তবে তার বোলিং দেখে বেশ ভালো লাগল। বললাম, তুমি বল করো। ভালো করবে। এরপর ওকে নিয়ে আলাদা কাজ করতাম। যেটা বলতাম, সেটাই ঠিকঠাক করত।’ মুফাচ্ছিনুলের নিজের একাডেমি ‘সাতক্ষীরা ক্রিকেট একাডেমি’তে দীর্ঘ দিন অনুশীলন করেছেন মুস্তাফিজ। আয়ত্ত করেছেন ভয়ংকর সব স্লোয়ার-কাটার। এ ডেলিভারিগুলো কীভাবে শিখলেন মুস্তাফিজ? মুফাচ্ছিনুল বললেন, ‘কিছু কিছু জিনিস সে জন্মগতভাবেই পেয়েছে। ছোট বেলা থেকেই বল সামনাসামনি করত। আমরা উৎসাহিত করতাম। ও যখন এ ধরনের বোলিং প্র্যাকটিস করত, নিষেধ করতাম না। স্বাধীনভাবে বোলিংয়ের সুযোগ দিতাম।’
সৌম্যকেও আবিষ্কার করেছিলেন আলতাফ। সৌম্যের বড় ভাই পুষ্পেন সরকার তখন খেলতেন স্থানীয় গণমুখী ক্লাবে। পুষ্পেনের হাত ধরেই ওই ক্লাবে সৌম্যের যাতায়াত। ক্লাবের কর্মকর্তা আলতাফ বললেন, ‘ওই সময় সে তার ভাইয়ের সঙ্গে মাঠে আসত। অনুশীলন করত। দেখতাম তার খেলার স্টাইল অন্যদের চেয়ে আলাদা।’ এরপর কিছুদিন অনুশীলন করেছেন মুফাচ্ছিনুলের একাডেমিতে। অবশ্য সৌম্য বেশি দিন সাতক্ষীরায় থাকেননি। কেননা, এরপরই সুযোগ পেয়ে গেলেন বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিকেএসপিতে।
হয়তো কেউ বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন। কেউবা স্বভাবসুলভ রাশভারী চেহারায় নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে সাবেক শিষ্যের কীর্তি দেখছিলেন। যেভাবেই দেখুন না কেন, হৃদয়ে যে আনন্দের প্লাবন বয়ে যাচ্ছিল, বলার অপেক্ষা রাখে না। এই মুফাচ্ছিনুল ইসলাম, আলতাফ হোসেন কিংবা আবদুর রশিদ কে? তিনজনই কোচ। দুজন জড়িয়ে আছেন মুস্তাফিজ ও সৌম্যের সঙ্গে, আরেকজন সাব্বিরের।
দুই ‘দেশি’র একই গুরুভারত-সিরিজে একের পর এক কীর্তি গড়ে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মুস্তাফিজ। ১৩ উইকেট নিয়ে হয়েছেন সিরিজসেরা। অন্যদিকে এ সিরিজে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ১২৮ রান করেছেন সৌম্য। দুজনই উঠে এসেছেন সাতক্ষীরা থেকে। এ কারণে নাকি একে অপরকে ডাকেন ‘দেশি’ বলে! দুজনের গুরু আবার এক। মুস্তাফিজ ও সৌম্য দুজনের শুরু আলতাফ হোসেনের কাছে।
বছর তিনেক আগের কথা। সাতক্ষীরা অনূর্ধ্ব–১৪ দলের বাছাইয়ের আগে জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাহী সদস্য আলতাফ গিয়েছিলেন মুস্তাফিজের গ্রামে। দেখেন মাঠে টেনিস বলে দারুণ খেলছেন মুস্তাফিজ। তিনি তখন মুস্তাফিজকে বাছাইপর্বে অংশ নিতে সাতক্ষীরায় আসতে বলেন।
তবে মুস্তাফিজের আসল ধাপটা শুরু হয় মুফাচ্ছিনুল ইসলামের হাতে। বিসিবির এই সাতক্ষীরা জেলা সহকারী কোচ মুস্তাফিজের মতো প্রতিভা খুঁজে বের করায় কৃতজ্ঞতা জানালেন আলতাফকে। দুজন অবশ্য কাজ করেন একই সঙ্গে। মুস্তাফিজ কীভাবে দারুণ বোলার হয়ে উঠলেন, ২৪ জুন সকালে মুফাচ্ছিনুল মুঠোফোনে সে গল্প শোনালেন এভাবে, ‘ওর শুরুতে ব্যাটিংয়ে ঝোঁক ছিল। তবে তার বোলিং দেখে বেশ ভালো লাগল। বললাম, তুমি বল করো। ভালো করবে। এরপর ওকে নিয়ে আলাদা কাজ করতাম। যেটা বলতাম, সেটাই ঠিকঠাক করত।’ মুফাচ্ছিনুলের নিজের একাডেমি ‘সাতক্ষীরা ক্রিকেট একাডেমি’তে দীর্ঘ দিন অনুশীলন করেছেন মুস্তাফিজ। আয়ত্ত করেছেন ভয়ংকর সব স্লোয়ার-কাটার। এ ডেলিভারিগুলো কীভাবে শিখলেন মুস্তাফিজ? মুফাচ্ছিনুল বললেন, ‘কিছু কিছু জিনিস সে জন্মগতভাবেই পেয়েছে। ছোট বেলা থেকেই বল সামনাসামনি করত। আমরা উৎসাহিত করতাম। ও যখন এ ধরনের বোলিং প্র্যাকটিস করত, নিষেধ করতাম না। স্বাধীনভাবে বোলিংয়ের সুযোগ দিতাম।’
সৌম্যকেও আবিষ্কার করেছিলেন আলতাফ। সৌম্যের বড় ভাই পুষ্পেন সরকার তখন খেলতেন স্থানীয় গণমুখী ক্লাবে। পুষ্পেনের হাত ধরেই ওই ক্লাবে সৌম্যের যাতায়াত। ক্লাবের কর্মকর্তা আলতাফ বললেন, ‘ওই সময় সে তার ভাইয়ের সঙ্গে মাঠে আসত। অনুশীলন করত। দেখতাম তার খেলার স্টাইল অন্যদের চেয়ে আলাদা।’ এরপর কিছুদিন অনুশীলন করেছেন মুফাচ্ছিনুলের একাডেমিতে। অবশ্য সৌম্য বেশি দিন সাতক্ষীরায় থাকেননি। কেননা, এরপরই সুযোগ পেয়ে গেলেন বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিকেএসপিতে।
এখন একই সঙ্গে দুজন সাবেক ছাত্র খেলছেন জাতীয় দলে। এটা ভাবতেই পারেননি আলতাফ, ‘প্রথম দেখায় ভেবেছিলাম, এদের নিয়ে একটু কাজ করতে পারলে জাতীয় দলে না হলেও অন্তত ভালো জায়গায় খেলবে। কিন্তু দুজনই রীতিমতো চমকে দিয়ে জাতীয় দলে দারুণ খেলছে।’
সাতক্ষীরা থেকে প্রায় একই সময়ে দুজন অসাধারণ প্রতিভা উঠে আসার পেছনে জেলার বর্তমান ক্রিকেট কাঠামোর ভূমিকাও দেখছেন আলতাফ ও মুফাচ্ছিনুল। জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাহী সদস্য আলতাফ বললেন, ‘এ মুহূর্তে সাতক্ষীরার ক্রিকেট অবকাঠামোটা বেশ ভালো। আমরা সারা বছরই কাজ করি বয়সভিত্তিক ক্রিকেটারদের নিয়ে। টাকা-পয়সার জন্য কাজ করি না। প্রতিভাবানদের তুলে নিয়ে আসাটাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।’
মুফাচ্ছিনুল অবশ্য জানালেন খেলোয়াড় বাছাইয়ে স্বচ্ছতা বজায় রাখাও আরেকটা কারণ, ‘বয়সভিত্তিক খেলোয়াড় বাছাইয়ে স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়। কেবল শহরের খেলোয়াড়দের সুযোগ দেওয়া হয়, তা নয়। শহর-গ্রাম যেখান থেকে আসুক না কেন, আমরা প্রতিভাকে গুরুত্ব দিই। সবাইকে সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা করি। সারা বছর ছেলেদের খেলার মধ্যে রাখি। এমনকি বর্ষাতেও কাজ করি।’
নিকট ভবিষ্যতে মুস্তাফিজ-সৌম্যের মতো আরও প্রতিভা কি পাবে বাংলাদেশ? মুফাচ্ছিনুল জানালেন, ‘পাইপলাইনে আরও কয়েকজন প্রতিভাবান খেলোয়াড় রয়েছে। আশা করি, অনূর্ধ্ব ১৪ ও ১৬ দল থেকে দুই-তিনজন বেরিয়ে আসবে।’
সাতক্ষীরা থেকে প্রায় একই সময়ে দুজন অসাধারণ প্রতিভা উঠে আসার পেছনে জেলার বর্তমান ক্রিকেট কাঠামোর ভূমিকাও দেখছেন আলতাফ ও মুফাচ্ছিনুল। জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাহী সদস্য আলতাফ বললেন, ‘এ মুহূর্তে সাতক্ষীরার ক্রিকেট অবকাঠামোটা বেশ ভালো। আমরা সারা বছরই কাজ করি বয়সভিত্তিক ক্রিকেটারদের নিয়ে। টাকা-পয়সার জন্য কাজ করি না। প্রতিভাবানদের তুলে নিয়ে আসাটাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।’
মুফাচ্ছিনুল অবশ্য জানালেন খেলোয়াড় বাছাইয়ে স্বচ্ছতা বজায় রাখাও আরেকটা কারণ, ‘বয়সভিত্তিক খেলোয়াড় বাছাইয়ে স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়। কেবল শহরের খেলোয়াড়দের সুযোগ দেওয়া হয়, তা নয়। শহর-গ্রাম যেখান থেকে আসুক না কেন, আমরা প্রতিভাকে গুরুত্ব দিই। সবাইকে সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা করি। সারা বছর ছেলেদের খেলার মধ্যে রাখি। এমনকি বর্ষাতেও কাজ করি।’
নিকট ভবিষ্যতে মুস্তাফিজ-সৌম্যের মতো আরও প্রতিভা কি পাবে বাংলাদেশ? মুফাচ্ছিনুল জানালেন, ‘পাইপলাইনে আরও কয়েকজন প্রতিভাবান খেলোয়াড় রয়েছে। আশা করি, অনূর্ধ্ব ১৪ ও ১৬ দল থেকে দুই-তিনজন বেরিয়ে আসবে।’
একজন রশিদ ভাই
বিশ্বকাপের আগে সাব্বির রহমান বলছিলেন তাঁর ক্রিকেটার হওয়ার গল্প। অনুরোধ করছিলেন, রশিদ ভাইয়ের কথাটা যেন লেখা হয়। রশিদ ভাই কে? জানতে চাইলে সাব্বিরের চটপটে উত্তর, ‘আমার প্রথম গুরু। ওনার কাছেই ক্রিকেটের হাতেখড়ি।’ বর্তমান দলের অন্যতম সেরা ফিল্ডার তিনি। এর পেছনেও রয়েছে রশিদ ভাইয়ের বিরাট অবদান। সাব্বির জানিয়েছিলেন, ‘পাড়ার ক্রিকেটে দারুণ একটা ক্যাচ ধরেছিলাম ডাইভ দিয়ে। খেলাটা দেখছিলেন রশিদ ভাই। তিনি পরামর্শ দিলেন উইকেটরক্ষক হতে। পাঁচ-ছয় মাস পর তিনি পরামর্শ দিলেন, পেস বল করতে। তখন পেস বোলার হয়ে গেলাম। এরপর তিনি আবার বললেন, উচ্চতা পেসার হওয়ার জন্য আদর্শ নয়। তিনি স্পিন করতে বললেন। এরপর থেকেই শুরু করলাম স্পিন।’
সাব্বিরের সেই রশিদ ভাইয়ের সঙ্গে কথা হলো ২৪ জুন দুপুরে। সাব্বিরের দারুণ ফিল্ডার হওয়ার পেছনে সে ঘটনা মনে করে হাসলেন। বললেন, ‘হ্যাঁ, ওর ফিল্ডিং আমাকে মুগ্ধ করেছিল। রাজশাহীর মডেল স্কুলের কাকলী মাঠে টেনিস বলে খেলছিল। ওখানে দেখেই আমার ফ্রেন্ডস আইডিয়াল ক্রিকেট স্কুলে নিয়ে আসি। একাডেমির নামটা কিন্তু সাব্বিরদের ব্যাচই দিয়েছিল। এরপর দৈনিক বার্তার মাঠে অনুশীলন করাতাম। নিজেও ক্রিকেটার ছিলাম। নিজের খেলোয়াড়ি জীবন বিসর্জন দিয়ে সাব্বিরদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলাম। কেবল সাব্বির নয়, তখন আরও কিছু প্রতিভা ছিল আমার অধীনে। দুর্ভাগ্য, তারা নিজেদের এগিয়ে নিতে পারেনি।’
রশিদ অবশ্য কৃতজ্ঞতা জানালেন সাব্বিরের মা-বাবাকেও। বললেন, ‘ওই সময় প্রায় সব ছেলেদের পরিবার থেকেই বাধা আসত। বেশির ভাগই চাইতেন না ছেলে ক্রিকেটার হোক। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম সাব্বিরের মা-বাবা। খুব একটা বাধা দিতে দেখিনি। অবশ্য সাব্বিরও খুব জেদি। একবার এগিয়ে পিছিয়ে যাওয়ার ছেলে নয়। সহজেই হার মানবে না। এ গুণটা ওর ছেলেবেলা থেকেই দেখেছি।’
সাব্বিরের এই নির্ভীক মনোভাব এখন টের পাচ্ছে প্রতিপক্ষের বোলাররা। ভারতের বিপক্ষে সাব্বির কতটা ধারাবাহিক তার ইনিংসগুলো প্রমাণ—৪১, ২২*, ৪৩। যখন ব্যাট করতে নামেন, বল ও সময় কোনোটাই হাতে থাকে না পর্যাপ্ত। তবু নির্ভারচিত্তে চালিয়ে যান ব্যাট।
১৭ বছর ধরে ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন রশিদ। একসময় খেলতেন ক্রিকেট। খেলোয়াড়ি জীবন ছেড়ে শুরু করলেন কোচিং। তবে মাঝে ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে ক্রিকেট থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন। কিছুটা অভিমান ভর করেছিল মনে। বললেন, ‘অনেককে নিয়ে আশা করেছিলাম। ভেবেছিলাম অনেক বড় ক্রিকেটার হবে। কিন্তু প্রত্যাশার প্রতিদান তারা দেয়নি। কেউ কেউ বখে গিয়েছে। এ কারণে ক্রিকেট থেকে দূরে সরে গিয়েছিলাম। সাব্বির সে অভিমান ভাঙিয়েছে।’
জানালেন খানিকটা বিরতি দিয়ে আবারও শুরু করেছেন একাডেমির কাজ, ‘আবারও চেষ্টা করছি। একটু সাংসারিক টানাপোড়েন রয়েছে। তবু চেষ্টা করছি কিছু ছেলেকে নিয়ে। বিসিবি অবশ্য আমাকে উত্সাহিত করেছে এ ব্যাপারে।’
নিকট ভবিষ্যতে রাজশাহী থেকে আরও সাব্বির পাবে বাংলাদেশ? রশিদ জানালেন, ‘বর্তমান রাজশাহীর ক্রিকেট-কাঠামোর অবস্থা বেশ ভালোই। অনেক একাডেমি হয়েছে। সবাই চেষ্টা করছে। সমস্যা হচ্ছে, পরিচর্যার অভাবে অনেক প্রতিভা বিকশিত হওয়ার আগে হারিয়ে যায়। তবে সঠিক পরিচর্যা করতে পারলে আশা করি, আরও সাব্বির বেরিয়ে আসবে।’
একই আশা গোটা দেশেরও। আরও মুস্তাফিজ, সৌম্য, সাব্বির উঠে আসুক বাংলাদেশের নানা প্রান্ত থেকে।
বিশ্বকাপের আগে সাব্বির রহমান বলছিলেন তাঁর ক্রিকেটার হওয়ার গল্প। অনুরোধ করছিলেন, রশিদ ভাইয়ের কথাটা যেন লেখা হয়। রশিদ ভাই কে? জানতে চাইলে সাব্বিরের চটপটে উত্তর, ‘আমার প্রথম গুরু। ওনার কাছেই ক্রিকেটের হাতেখড়ি।’ বর্তমান দলের অন্যতম সেরা ফিল্ডার তিনি। এর পেছনেও রয়েছে রশিদ ভাইয়ের বিরাট অবদান। সাব্বির জানিয়েছিলেন, ‘পাড়ার ক্রিকেটে দারুণ একটা ক্যাচ ধরেছিলাম ডাইভ দিয়ে। খেলাটা দেখছিলেন রশিদ ভাই। তিনি পরামর্শ দিলেন উইকেটরক্ষক হতে। পাঁচ-ছয় মাস পর তিনি পরামর্শ দিলেন, পেস বল করতে। তখন পেস বোলার হয়ে গেলাম। এরপর তিনি আবার বললেন, উচ্চতা পেসার হওয়ার জন্য আদর্শ নয়। তিনি স্পিন করতে বললেন। এরপর থেকেই শুরু করলাম স্পিন।’
সাব্বিরের সেই রশিদ ভাইয়ের সঙ্গে কথা হলো ২৪ জুন দুপুরে। সাব্বিরের দারুণ ফিল্ডার হওয়ার পেছনে সে ঘটনা মনে করে হাসলেন। বললেন, ‘হ্যাঁ, ওর ফিল্ডিং আমাকে মুগ্ধ করেছিল। রাজশাহীর মডেল স্কুলের কাকলী মাঠে টেনিস বলে খেলছিল। ওখানে দেখেই আমার ফ্রেন্ডস আইডিয়াল ক্রিকেট স্কুলে নিয়ে আসি। একাডেমির নামটা কিন্তু সাব্বিরদের ব্যাচই দিয়েছিল। এরপর দৈনিক বার্তার মাঠে অনুশীলন করাতাম। নিজেও ক্রিকেটার ছিলাম। নিজের খেলোয়াড়ি জীবন বিসর্জন দিয়ে সাব্বিরদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলাম। কেবল সাব্বির নয়, তখন আরও কিছু প্রতিভা ছিল আমার অধীনে। দুর্ভাগ্য, তারা নিজেদের এগিয়ে নিতে পারেনি।’
রশিদ অবশ্য কৃতজ্ঞতা জানালেন সাব্বিরের মা-বাবাকেও। বললেন, ‘ওই সময় প্রায় সব ছেলেদের পরিবার থেকেই বাধা আসত। বেশির ভাগই চাইতেন না ছেলে ক্রিকেটার হোক। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম সাব্বিরের মা-বাবা। খুব একটা বাধা দিতে দেখিনি। অবশ্য সাব্বিরও খুব জেদি। একবার এগিয়ে পিছিয়ে যাওয়ার ছেলে নয়। সহজেই হার মানবে না। এ গুণটা ওর ছেলেবেলা থেকেই দেখেছি।’
সাব্বিরের এই নির্ভীক মনোভাব এখন টের পাচ্ছে প্রতিপক্ষের বোলাররা। ভারতের বিপক্ষে সাব্বির কতটা ধারাবাহিক তার ইনিংসগুলো প্রমাণ—৪১, ২২*, ৪৩। যখন ব্যাট করতে নামেন, বল ও সময় কোনোটাই হাতে থাকে না পর্যাপ্ত। তবু নির্ভারচিত্তে চালিয়ে যান ব্যাট।
১৭ বছর ধরে ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন রশিদ। একসময় খেলতেন ক্রিকেট। খেলোয়াড়ি জীবন ছেড়ে শুরু করলেন কোচিং। তবে মাঝে ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে ক্রিকেট থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন। কিছুটা অভিমান ভর করেছিল মনে। বললেন, ‘অনেককে নিয়ে আশা করেছিলাম। ভেবেছিলাম অনেক বড় ক্রিকেটার হবে। কিন্তু প্রত্যাশার প্রতিদান তারা দেয়নি। কেউ কেউ বখে গিয়েছে। এ কারণে ক্রিকেট থেকে দূরে সরে গিয়েছিলাম। সাব্বির সে অভিমান ভাঙিয়েছে।’
জানালেন খানিকটা বিরতি দিয়ে আবারও শুরু করেছেন একাডেমির কাজ, ‘আবারও চেষ্টা করছি। একটু সাংসারিক টানাপোড়েন রয়েছে। তবু চেষ্টা করছি কিছু ছেলেকে নিয়ে। বিসিবি অবশ্য আমাকে উত্সাহিত করেছে এ ব্যাপারে।’
নিকট ভবিষ্যতে রাজশাহী থেকে আরও সাব্বির পাবে বাংলাদেশ? রশিদ জানালেন, ‘বর্তমান রাজশাহীর ক্রিকেট-কাঠামোর অবস্থা বেশ ভালোই। অনেক একাডেমি হয়েছে। সবাই চেষ্টা করছে। সমস্যা হচ্ছে, পরিচর্যার অভাবে অনেক প্রতিভা বিকশিত হওয়ার আগে হারিয়ে যায়। তবে সঠিক পরিচর্যা করতে পারলে আশা করি, আরও সাব্বির বেরিয়ে আসবে।’
একই আশা গোটা দেশেরও। আরও মুস্তাফিজ, সৌম্য, সাব্বির উঠে আসুক বাংলাদেশের নানা প্রান্ত থেকে।
ওঁদের বড় হওয়া
কল্যাণ ব্যানার্জি, সাতক্ষীরা
সেজো ভাই মোখলেছুর রহমান শুরু থেকে মুস্তাফিজকে খেলার সমর্থন দিয়েছেন। মোখলেছুর প্রথম মুস্তাফিজকে নিয়ে সাতক্ষীরা গণমুখী ক্লাবের ক্রিকেট কোচ আলতাফ ভাইয়ের কাছে যান। কয়েক দিন আলতাফ তাঁকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর ধরতে পেরেছিলেন মুস্তাফিজের ভেতরের ‘ধারটা’। এর মধ্যে সাতক্ষীরায় বয়সভিত্তিক ক্রিকেটার বাছাই শুরু হয়। আলতাফ ভাইয়ের পরামর্শে অংশ নিয়ে মুস্তাফিজ সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে অনূর্ধ্ব-১৪ প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হন। এরপর সাতক্ষীরায় ক্রিকেট একাডেমির মুফচ্ছিনুল ইসলাম, পরে একরামুল ইসলামের কাছে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেন। প্রতিদিন ভোরে তেঁতুলিয়া থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে মোটরসাইকেলে করে সাতক্ষীরা নিয়ে আসতেন প্রশিক্ষণের জন্য। মা রুটি বানিয়ে দিতেন। মোটরসাইকেলে বসে তাই খেতেন। এরপর অনূর্ধ্ব-১৪ ও ১৭ খেলেছেন। ভালো খেলে সবার নজর কাড়েন। খুলনা বিভাগীয় দলে খেলেছেন। ধারাবাহিকভাবে সফল হয়েছেন। বছর তিনেক আগে খুলনা বিভাগীয় দলের সালাউদ্দিন ভাই তাঁকে পাঠান ঢাকার শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বোলিং ক্যাম্পে ট্রায়াল দিতে। সেখানে এসে কোচদের নজর কাড়েন। এরপর অনূর্ধ্ব-১৯ খেলেছেন নিয়মিত।
বিভিন্ন লিগ খেলে সাফল্য পেয়েছেন। গত বছর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ভালো খেলে সবার নজর কেড়েছেন। আর এখন আলো ছড়াচ্ছেন জাতীয় দলে। আর সৌম্য? ১১ বছর বয়সে সাতক্ষীরা সরকারি বিদ্যালয়ের হয়ে স্কুল ক্রিকেট টুর্নামেন্টে নৈপুণ্য দেখান। স্থানীয় গণমুখী ক্লাবে ভাই পুষ্পেন সরকার নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন সেই সুবাদে সৌম্যরও ওই ক্লাবে যাতায়াত। তবে স্থানীয় কোনো ক্লাবে নিয়মিত খেলেননি তিনি। পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁকে বিকেএসপিতে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ সময় সৌম্য সাতক্ষীরা ক্রিকেট একাডেমিতে কিছুদিন প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। সাতক্ষীরা জেলা ক্রিকেট দলের কোচ ও গণমুখী ক্লাবের কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন বলেন, ‘মাঠে আসত। অনুশীলন করত তাঁর কাছে। ছোটবেলা থেকে সৌম্যর খেলায় ছিল আলাদা স্টাইল। আর দশজনের চেয়ে ওর খেলার ভঙ্গি ছিল আলাদা। মাঠে চার ও ছয় মারতে ওর জুড়ি ছিল না। ছোটবেলায়ই বোঝা গিয়েছিল ও একদিন বড় খেলোয়াড় হবে।’ সৌম্যর বাবা কিশোরীমোহন সরকার বলেন, মেজো ছেলে পুষ্পেনের খেলা দেখে ভালো ক্রিকেটার হওয়ার আগ্রহ প্রথম মাথায় জেঁকে বসে তাঁর ছোট ছেলে সৌম্যর। ওর মেজো ভাইয়ের খেলায় একটা আলাদা ছন্দ ছিল। দাদার অনুপ্রেরণায় বিকেএসপিতে ভর্তি হওয়ার পর সেখানেই মূলত তার ক্রিকেটের ভিত শক্ত হয়।
কল্যাণ ব্যানার্জি, সাতক্ষীরা
সেজো ভাই মোখলেছুর রহমান শুরু থেকে মুস্তাফিজকে খেলার সমর্থন দিয়েছেন। মোখলেছুর প্রথম মুস্তাফিজকে নিয়ে সাতক্ষীরা গণমুখী ক্লাবের ক্রিকেট কোচ আলতাফ ভাইয়ের কাছে যান। কয়েক দিন আলতাফ তাঁকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর ধরতে পেরেছিলেন মুস্তাফিজের ভেতরের ‘ধারটা’। এর মধ্যে সাতক্ষীরায় বয়সভিত্তিক ক্রিকেটার বাছাই শুরু হয়। আলতাফ ভাইয়ের পরামর্শে অংশ নিয়ে মুস্তাফিজ সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে অনূর্ধ্ব-১৪ প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হন। এরপর সাতক্ষীরায় ক্রিকেট একাডেমির মুফচ্ছিনুল ইসলাম, পরে একরামুল ইসলামের কাছে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেন। প্রতিদিন ভোরে তেঁতুলিয়া থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে মোটরসাইকেলে করে সাতক্ষীরা নিয়ে আসতেন প্রশিক্ষণের জন্য। মা রুটি বানিয়ে দিতেন। মোটরসাইকেলে বসে তাই খেতেন। এরপর অনূর্ধ্ব-১৪ ও ১৭ খেলেছেন। ভালো খেলে সবার নজর কাড়েন। খুলনা বিভাগীয় দলে খেলেছেন। ধারাবাহিকভাবে সফল হয়েছেন। বছর তিনেক আগে খুলনা বিভাগীয় দলের সালাউদ্দিন ভাই তাঁকে পাঠান ঢাকার শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বোলিং ক্যাম্পে ট্রায়াল দিতে। সেখানে এসে কোচদের নজর কাড়েন। এরপর অনূর্ধ্ব-১৯ খেলেছেন নিয়মিত।
বিভিন্ন লিগ খেলে সাফল্য পেয়েছেন। গত বছর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ভালো খেলে সবার নজর কেড়েছেন। আর এখন আলো ছড়াচ্ছেন জাতীয় দলে। আর সৌম্য? ১১ বছর বয়সে সাতক্ষীরা সরকারি বিদ্যালয়ের হয়ে স্কুল ক্রিকেট টুর্নামেন্টে নৈপুণ্য দেখান। স্থানীয় গণমুখী ক্লাবে ভাই পুষ্পেন সরকার নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন সেই সুবাদে সৌম্যরও ওই ক্লাবে যাতায়াত। তবে স্থানীয় কোনো ক্লাবে নিয়মিত খেলেননি তিনি। পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁকে বিকেএসপিতে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ সময় সৌম্য সাতক্ষীরা ক্রিকেট একাডেমিতে কিছুদিন প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। সাতক্ষীরা জেলা ক্রিকেট দলের কোচ ও গণমুখী ক্লাবের কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন বলেন, ‘মাঠে আসত। অনুশীলন করত তাঁর কাছে। ছোটবেলা থেকে সৌম্যর খেলায় ছিল আলাদা স্টাইল। আর দশজনের চেয়ে ওর খেলার ভঙ্গি ছিল আলাদা। মাঠে চার ও ছয় মারতে ওর জুড়ি ছিল না। ছোটবেলায়ই বোঝা গিয়েছিল ও একদিন বড় খেলোয়াড় হবে।’ সৌম্যর বাবা কিশোরীমোহন সরকার বলেন, মেজো ছেলে পুষ্পেনের খেলা দেখে ভালো ক্রিকেটার হওয়ার আগ্রহ প্রথম মাথায় জেঁকে বসে তাঁর ছোট ছেলে সৌম্যর। ওর মেজো ভাইয়ের খেলায় একটা আলাদা ছন্দ ছিল। দাদার অনুপ্রেরণায় বিকেএসপিতে ভর্তি হওয়ার পর সেখানেই মূলত তার ক্রিকেটের ভিত শক্ত হয়।
বাড়ির পাশের সেই ছোট্ট মাঠ
আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ, রাজশাহী
রাজশাহীতে বাড়ির পাশেই ছিল দৈনিক বার্তার ছোট্ট মাঠ। এই মাঠেই কোচ আবদুর রশিদের কাছে হাতেখড়ি হয়েছিল বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটার সাব্বির রহমানের। আজ আর সেই মাঠ নেই। সেখানে এখন বহুতল দৈনিক বার্তা কমপ্লেক্স। পাশে দাঁড়িয়ে কোচ আবদুর রশিদ, সাব্বিরের সতীর্থ খেলোয়াড় সাগর রজব ও নূর আলী গত বুধবার বিকেলে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পুরোনো দিনের স্মৃতিচারণা করছিলেন। এই তিনজনের গল্পের ভেতরে ঘুরে-ফিরেই আসছিল সাব্বির রহমান। ২৪ জুন বিকেলে নগরের আলুপট্টি এলাকায় সাবেক দৈনিক বার্তা মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে কোচ আবদুর রশিদের সঙ্গে কথা বলতে বলতেই এলেন সাব্বিরের সহপাঠী ও সতীর্থ ক্রিকেটার খেলোয়াড় সাগর রজব ও নূর আলী টিয়া। সেই শৈশবের দৈনিক বার্তার ছোট্ট মাঠের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে কখনো তিনজন হেসে গড়িয়ে পড়ছেন, আবার কখনো কোচ আবদুর রশিদের চোখ ছলছল করে উঠছে। আবদুর রশিদ বলেন, মাঠে ঘাস ছিল না। বৃষ্টির মধ্যে ওরা সবাই রাস্তা থেকে ঘাস তুলে এনে মাঠে লাগিয়ে দিত। এই কাজের ফাঁকেই সাব্বিরের কাজ ছিল দুষ্টামি করা। সবার সঙ্গে মজা করত। আবার এমনও করত। রানের জন্য কল করে ও ঠায় দাঁড়িয়ে থাকত। সাগর সাব্বিরের সঙ্গেই রাজশাহীর বি বি হিন্দু একাডেমিতে পড়ত। অষ্টম কি নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় পরীক্ষা চলছিল। হঠাৎ সাব্বির নেই। পরে জানা গেছে, পরীক্ষা বাদ দিয়ে ঢাকায় খেলতে চলে গেছে। আবদুর রশিদ বলেন, ‘খেলোয়াড় তৈরি করাই আমার ধ্যান-জ্ঞান ছিল কিন্তু পরীক্ষা বাদ দিয়ে খেলতে যাওয়ার কথা শুনে আমার বুকের মধ্যে কেঁপে উঠল। খেলাধুলা যা-ই করি না কেন পড়াশোনাটা নষ্ট করা যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘তখন বুঝতে পারিনি, সাব্বির এত দূর যাবে।’ নূর আলী বলেন, ‘আমি ছিলাম উইকেটকিপার আর সাব্বির ছিল স্পিনার। ওকে ব্যাটিং থেকে সরানো যেত না।’ মুখের কথা কেড়ে নিয়ে আবদুর রশিদ আবার বলতে থাকেন, ‘আমি সব সময় ওদের একটা কথা বলতাম, তোমরা মা-বাবাকে খুশি রাখবে। তাহলে বড় হতে পারবে। সাব্বির সব সময় সেটা মনে রেখেছে।’
আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ, রাজশাহী
রাজশাহীতে বাড়ির পাশেই ছিল দৈনিক বার্তার ছোট্ট মাঠ। এই মাঠেই কোচ আবদুর রশিদের কাছে হাতেখড়ি হয়েছিল বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটার সাব্বির রহমানের। আজ আর সেই মাঠ নেই। সেখানে এখন বহুতল দৈনিক বার্তা কমপ্লেক্স। পাশে দাঁড়িয়ে কোচ আবদুর রশিদ, সাব্বিরের সতীর্থ খেলোয়াড় সাগর রজব ও নূর আলী গত বুধবার বিকেলে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পুরোনো দিনের স্মৃতিচারণা করছিলেন। এই তিনজনের গল্পের ভেতরে ঘুরে-ফিরেই আসছিল সাব্বির রহমান। ২৪ জুন বিকেলে নগরের আলুপট্টি এলাকায় সাবেক দৈনিক বার্তা মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে কোচ আবদুর রশিদের সঙ্গে কথা বলতে বলতেই এলেন সাব্বিরের সহপাঠী ও সতীর্থ ক্রিকেটার খেলোয়াড় সাগর রজব ও নূর আলী টিয়া। সেই শৈশবের দৈনিক বার্তার ছোট্ট মাঠের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে কখনো তিনজন হেসে গড়িয়ে পড়ছেন, আবার কখনো কোচ আবদুর রশিদের চোখ ছলছল করে উঠছে। আবদুর রশিদ বলেন, মাঠে ঘাস ছিল না। বৃষ্টির মধ্যে ওরা সবাই রাস্তা থেকে ঘাস তুলে এনে মাঠে লাগিয়ে দিত। এই কাজের ফাঁকেই সাব্বিরের কাজ ছিল দুষ্টামি করা। সবার সঙ্গে মজা করত। আবার এমনও করত। রানের জন্য কল করে ও ঠায় দাঁড়িয়ে থাকত। সাগর সাব্বিরের সঙ্গেই রাজশাহীর বি বি হিন্দু একাডেমিতে পড়ত। অষ্টম কি নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় পরীক্ষা চলছিল। হঠাৎ সাব্বির নেই। পরে জানা গেছে, পরীক্ষা বাদ দিয়ে ঢাকায় খেলতে চলে গেছে। আবদুর রশিদ বলেন, ‘খেলোয়াড় তৈরি করাই আমার ধ্যান-জ্ঞান ছিল কিন্তু পরীক্ষা বাদ দিয়ে খেলতে যাওয়ার কথা শুনে আমার বুকের মধ্যে কেঁপে উঠল। খেলাধুলা যা-ই করি না কেন পড়াশোনাটা নষ্ট করা যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘তখন বুঝতে পারিনি, সাব্বির এত দূর যাবে।’ নূর আলী বলেন, ‘আমি ছিলাম উইকেটকিপার আর সাব্বির ছিল স্পিনার। ওকে ব্যাটিং থেকে সরানো যেত না।’ মুখের কথা কেড়ে নিয়ে আবদুর রশিদ আবার বলতে থাকেন, ‘আমি সব সময় ওদের একটা কথা বলতাম, তোমরা মা-বাবাকে খুশি রাখবে। তাহলে বড় হতে পারবে। সাব্বির সব সময় সেটা মনে রেখেছে।’
- Get link
- X
- Other Apps
Comments
Post a Comment