গণিতে সৃজনশীল প্রশ্নের কারণেই ফল বিপর্যয়
পাবলিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের নিয়ামক মূলত নির্বাচিত বিষয়ের ভিত্তিতে হয়ে থাকে। প্রতি বছর এমন চিত্রটি দেখা যায়। নির্বাচিত বিষয়ের মধ্যে গণিত ও উচ্চতর গণিত বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নপদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে। এটি প্রথমবারের মতো চালু হয়েছে এসএসসিতে। পরীক্ষার প্রকাশিত ফল বিশ্লেষণে এটিই উঠে এসেছে। এ ছাড়া খোদ শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানরাও এ কথারই প্রতিধ্বনি করেছেন। ঢাকা বোর্ড চেয়ারম্যান নয়া দিগন্তকে বলেন, গণিতে ১২ শতাংশ পরীক্ষার্থী কম পাস করেছে এবার আমার বোর্ডে। গণিতই ছিল আসলে মূল নিয়ামক ফল বিপর্যয়ের জন্য।
তবে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলছেন ভিন্ন কথা। তার মত হচ্ছে পরীক্ষা চলাকালে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির কারণে ফল বিপর্যয় ঘটেছে। তিনি বলেন, অস্বাভাবিক পরিস্থিতি ছিল, যা এর আগে কখনো আমরা দেখিনি। পরীক্ষা চলাকালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের লাগাতার হরতাল-অবরোধের কারণে অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে। হরতালের কারণে বারবার পরীক্ষা পেছাতে হয়েছে। এ জন্য শিক্ষার্থীরা কোন পরীক্ষা কবে হবে তা নিয়ে অন্ধকারে ছিল। এ জন্য তাদের প্রস্তুতিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরীক্ষার ফল কিছুটা খারাপ হওয়ার পেছনে তিনি এটিকেই কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান বিষয় পরীক্ষার ফলাফলে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এ বছর প্রথমবারের মতো সাধারণ গণিত ও উচ্চতর গণিত বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নপদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়া হয়। আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে বিষয়ভিত্তিক ফলাফলে গণিতে পাসের হার সর্বনিম্ন। ঢাকা বোর্ডে ইংরেজিতে ৯৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ, গণিতে ৯২ দশমিক ৮০ শতাংশ, পদার্থবিজ্ঞানে ৯৯ দশমিক ৫১ শতাংশ ও রসায়নে ৯৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। পাসের হারে শীর্ষে রাজশাহী বোর্ডে ইংরেজিতে ৯৯ দশমিক ০৫ শতাংশ, গণিতে ৯৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ, পদার্থবিজ্ঞানে ৯৯ দশমিক ৮১ শতাংশ ও রসায়নে ৯৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। সবচেয়ে খারাপ করেছে সিলেট বোর্ড। বোর্ডে গড় পাসের হার ৮১ দশমিক ৮২ শতাংশ। এই বোর্ডে ইংরেজিতে ৯৭ দশমিক ৭১ শতাংশ, গণিতে ৮৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ, পদার্থবিজ্ঞানে ৯৯ দশমিক ০১ শতাংশ ও রসায়নে ৯৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে।
দিনাজপুর বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহমেদ হোসেন বলেন, গণিতে সৃজনশীল চালু করার কারণেই ফল খারাপ হয়েছে। সৃজনশীল চালু করা হলেও এবার গণিতে প্রশ্ন ছিল কঠিন। প্রশ্ন করা হয়েছে, পাঠ্যসূচি ও পাঠ্যক্রমবহির্ভূতভাবে। এ কারণে বেশির ভাগ পরীক্ষার্থীর প্রশ্ন বুঝতে কষ্ট হয়েছে।
সিলেট বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আব্দুল মান্নান খান বলেন, এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় অনেক শিক্ষার্থী গণিতে অকৃতকার্য হওয়ায় সিলেট বোর্ডের ফল খারাপ হয়েছে। তিনি বলেন, প্রথমবারের মতো সৃজনশীল পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত গণিত পরীক্ষায় খারাপ ফলই সার্বিক ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে। এর মূল কারণ, সব স্কুলে প্রশিক্ষিত গণিত শিক্ষকের স্বল্পতা রয়েছে। শহরের স্কুলগুলো গণিতে ভালো ফল করলেও গ্রামের স্কুলগুলোতে এ বিষয়ে বেশি হারে ফেল করেছে। তিনি আরো বলেন, এবার প্রথমবারের মতো গণিতে সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু প্রথমবারের মতো এ প্রক্রিয়া শুরু করতে গিয়ে ধাক্কা খেয়েছি আমরা।
কুমিল্লা বোর্ড চেয়ারম্যান ইন্দ্র ভূষণ ভৌমিক নয়া দিগন্তকে বলেন, কিছু বিষয় শুক্রবার ও শনিবার হয়েছে। যে কারণে পরীক্ষার্থীরা প্রস্তুতি সেভাবে নিতে পারেনি। এ ছাড়া গণিতে প্রথমবারের মতো সৃজনশীল চালু করার কারণে আসলে পরীক্ষার্থীরা খারাপ করেছে। প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটেছে। ফলে সার্বিক ফলাফলে প্রভাব পড়েছে।
যশোর বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র বলেন, এ বছর গণিতে খারাপ করেছে পরীক্ষার্থীরা। গত বছর যশোর বোর্ডে গণিত বিষয়ে পাসের হার ছিল ৯৭ দশমিক ০৩ শতাংশ। এ বছর সেই হার ৮৭ দশমিক ০৪ শতাংশ। তিনি জানান, হরতালের প্রভাবও ফলাফলে পড়েছে। আতঙ্কের কারণে শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে পরীক্ষা দিতে পারেনি।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির আহবায়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো: আবু বক্কর ছিদ্দিক নয়া দিগন্তকে বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার যে কথা শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন তা তো রয়েছেই। তার পরও এবার ঢাকা বোর্ডে ১২ শতাংশ পরীক্ষা গত বছরের চেয়ে গণিতেই কম পাস করেছে। আমরা এবার প্রথমবারের মতো সৃজনশীল পদ্ধতিতে গণিত পরীক্ষা নিয়েছি। এটিও সার্বিক ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে। শিক্ষার্থীরা গণিত বিষয়ের পরীক্ষায় বেশি ফেল করেছে।
এ ছাড়াও মাদরাসা বোর্ডে পাসের হার বাড়লেও মেধাবী অর্থাৎ জিপিএ ৫ কমেছে। এর কারণ হিসেবে বোর্ড চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) এ কে এম ছাইফুল্লাহ নয়া দিগন্তকে বলেন, এবার মাদরাসা শিক্ষার্থীরা বাংলা ও ইংরেজিতে ২০০ নাম্বারে পরীক্ষা দিয়েছে। আর এবার গণিত, জীববিজ্ঞান ও উচ্চতর গণিত আবশ্যকীয় নিতে পেরেছে শিক্ষার্থীরা। এ কারণেই পরীক্ষায় পাসের হার বেড়েছে। জিপিএ ৫ কমেছে নতুন এ বিষয়গুলোতে আমরা ভালো শিক্ষক দিতে পারিনি।
ফল বিশ্লেষণে আরো দেখা গেছে, সব বোর্ডের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ, উত্তীর্ণের সংখ্যা, পাসের হার ও জিপিএ ৫ প্রাপ্তির দিক দিয়ে ভালো করেছে ছেলেরা। ছেলেদের পাসের হার ৮৭ দশমিক ৪১ এবং মেয়েদের ৮৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ। ৬০ হাজার ৩৭০ জন ছেলে পেয়েছে জিপিএ ৫, অন্য দিকে মেয়েদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৫১ হাজার ৫৩১ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ও জিপিএ ৫ এর সংখ্যার পাশাপাশি এবার কমেছে শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও। এবার শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে ৫ হাজার ৯৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে, যা গত বছরের চেয়ে ১ হাজার ১১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কম।
বিদেশের প্রতিষ্ঠান ভালো করেছে : এসএসসি পরীক্ষায় বিদেশের আটটি কেন্দ্রে পাস করেছে ৯৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৭২ জন। বিদেশের আটটি কেন্দ্রে অংশ নেয়া ২৯৯ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৯২ জন পাস করেছে, পাসের হার ৯৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ। গত বছর বিদেশের সাতটি কেন্দ্র থেকে ৯৮ দশমিক ২৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিল। সেই হিসাবে এবার বিদেশের কেন্দ্রে পাসের হার কমেছে শূন্য দশমিক ৬৩ শতাংশ। তবে বিদেশী আট কেন্দ্রের মধ্যে ছয়টি কেন্দ্র থেকে শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করেছে। এর মধ্যে রয়েছেÑ জেদ্দার বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, দোহার বাংলাদেশ মাশহুর উল হক মেমোরিয়াল হাইস্কুল, আবুধাবির শেখ খলিফা বিন জায়েদ বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুল, মানামার বাংলাদেশ স্কুল, রাসআল খেইমার বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুল, ওমানের বাংলাদেশ স্কুল সাহাম। তবে দু’টি কেন্দ্র থেকে শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করেনি। এর মধ্যে রিয়াদের বাংলাদেশ অ্যাম্বাসি স্কুল ও ত্রিপলির বাংলাদেশ কমিউনিটি স্কুল।
তবে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলছেন ভিন্ন কথা। তার মত হচ্ছে পরীক্ষা চলাকালে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির কারণে ফল বিপর্যয় ঘটেছে। তিনি বলেন, অস্বাভাবিক পরিস্থিতি ছিল, যা এর আগে কখনো আমরা দেখিনি। পরীক্ষা চলাকালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের লাগাতার হরতাল-অবরোধের কারণে অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে। হরতালের কারণে বারবার পরীক্ষা পেছাতে হয়েছে। এ জন্য শিক্ষার্থীরা কোন পরীক্ষা কবে হবে তা নিয়ে অন্ধকারে ছিল। এ জন্য তাদের প্রস্তুতিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরীক্ষার ফল কিছুটা খারাপ হওয়ার পেছনে তিনি এটিকেই কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান বিষয় পরীক্ষার ফলাফলে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এ বছর প্রথমবারের মতো সাধারণ গণিত ও উচ্চতর গণিত বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নপদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়া হয়। আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে বিষয়ভিত্তিক ফলাফলে গণিতে পাসের হার সর্বনিম্ন। ঢাকা বোর্ডে ইংরেজিতে ৯৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ, গণিতে ৯২ দশমিক ৮০ শতাংশ, পদার্থবিজ্ঞানে ৯৯ দশমিক ৫১ শতাংশ ও রসায়নে ৯৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। পাসের হারে শীর্ষে রাজশাহী বোর্ডে ইংরেজিতে ৯৯ দশমিক ০৫ শতাংশ, গণিতে ৯৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ, পদার্থবিজ্ঞানে ৯৯ দশমিক ৮১ শতাংশ ও রসায়নে ৯৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। সবচেয়ে খারাপ করেছে সিলেট বোর্ড। বোর্ডে গড় পাসের হার ৮১ দশমিক ৮২ শতাংশ। এই বোর্ডে ইংরেজিতে ৯৭ দশমিক ৭১ শতাংশ, গণিতে ৮৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ, পদার্থবিজ্ঞানে ৯৯ দশমিক ০১ শতাংশ ও রসায়নে ৯৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে।
দিনাজপুর বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহমেদ হোসেন বলেন, গণিতে সৃজনশীল চালু করার কারণেই ফল খারাপ হয়েছে। সৃজনশীল চালু করা হলেও এবার গণিতে প্রশ্ন ছিল কঠিন। প্রশ্ন করা হয়েছে, পাঠ্যসূচি ও পাঠ্যক্রমবহির্ভূতভাবে। এ কারণে বেশির ভাগ পরীক্ষার্থীর প্রশ্ন বুঝতে কষ্ট হয়েছে।
সিলেট বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আব্দুল মান্নান খান বলেন, এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় অনেক শিক্ষার্থী গণিতে অকৃতকার্য হওয়ায় সিলেট বোর্ডের ফল খারাপ হয়েছে। তিনি বলেন, প্রথমবারের মতো সৃজনশীল পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত গণিত পরীক্ষায় খারাপ ফলই সার্বিক ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে। এর মূল কারণ, সব স্কুলে প্রশিক্ষিত গণিত শিক্ষকের স্বল্পতা রয়েছে। শহরের স্কুলগুলো গণিতে ভালো ফল করলেও গ্রামের স্কুলগুলোতে এ বিষয়ে বেশি হারে ফেল করেছে। তিনি আরো বলেন, এবার প্রথমবারের মতো গণিতে সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু প্রথমবারের মতো এ প্রক্রিয়া শুরু করতে গিয়ে ধাক্কা খেয়েছি আমরা।
কুমিল্লা বোর্ড চেয়ারম্যান ইন্দ্র ভূষণ ভৌমিক নয়া দিগন্তকে বলেন, কিছু বিষয় শুক্রবার ও শনিবার হয়েছে। যে কারণে পরীক্ষার্থীরা প্রস্তুতি সেভাবে নিতে পারেনি। এ ছাড়া গণিতে প্রথমবারের মতো সৃজনশীল চালু করার কারণে আসলে পরীক্ষার্থীরা খারাপ করেছে। প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটেছে। ফলে সার্বিক ফলাফলে প্রভাব পড়েছে।
যশোর বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র বলেন, এ বছর গণিতে খারাপ করেছে পরীক্ষার্থীরা। গত বছর যশোর বোর্ডে গণিত বিষয়ে পাসের হার ছিল ৯৭ দশমিক ০৩ শতাংশ। এ বছর সেই হার ৮৭ দশমিক ০৪ শতাংশ। তিনি জানান, হরতালের প্রভাবও ফলাফলে পড়েছে। আতঙ্কের কারণে শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে পরীক্ষা দিতে পারেনি।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির আহবায়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো: আবু বক্কর ছিদ্দিক নয়া দিগন্তকে বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার যে কথা শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন তা তো রয়েছেই। তার পরও এবার ঢাকা বোর্ডে ১২ শতাংশ পরীক্ষা গত বছরের চেয়ে গণিতেই কম পাস করেছে। আমরা এবার প্রথমবারের মতো সৃজনশীল পদ্ধতিতে গণিত পরীক্ষা নিয়েছি। এটিও সার্বিক ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে। শিক্ষার্থীরা গণিত বিষয়ের পরীক্ষায় বেশি ফেল করেছে।
এ ছাড়াও মাদরাসা বোর্ডে পাসের হার বাড়লেও মেধাবী অর্থাৎ জিপিএ ৫ কমেছে। এর কারণ হিসেবে বোর্ড চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) এ কে এম ছাইফুল্লাহ নয়া দিগন্তকে বলেন, এবার মাদরাসা শিক্ষার্থীরা বাংলা ও ইংরেজিতে ২০০ নাম্বারে পরীক্ষা দিয়েছে। আর এবার গণিত, জীববিজ্ঞান ও উচ্চতর গণিত আবশ্যকীয় নিতে পেরেছে শিক্ষার্থীরা। এ কারণেই পরীক্ষায় পাসের হার বেড়েছে। জিপিএ ৫ কমেছে নতুন এ বিষয়গুলোতে আমরা ভালো শিক্ষক দিতে পারিনি।
ফল বিশ্লেষণে আরো দেখা গেছে, সব বোর্ডের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ, উত্তীর্ণের সংখ্যা, পাসের হার ও জিপিএ ৫ প্রাপ্তির দিক দিয়ে ভালো করেছে ছেলেরা। ছেলেদের পাসের হার ৮৭ দশমিক ৪১ এবং মেয়েদের ৮৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ। ৬০ হাজার ৩৭০ জন ছেলে পেয়েছে জিপিএ ৫, অন্য দিকে মেয়েদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৫১ হাজার ৫৩১ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ও জিপিএ ৫ এর সংখ্যার পাশাপাশি এবার কমেছে শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও। এবার শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে ৫ হাজার ৯৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে, যা গত বছরের চেয়ে ১ হাজার ১১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কম।
বিদেশের প্রতিষ্ঠান ভালো করেছে : এসএসসি পরীক্ষায় বিদেশের আটটি কেন্দ্রে পাস করেছে ৯৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৭২ জন। বিদেশের আটটি কেন্দ্রে অংশ নেয়া ২৯৯ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৯২ জন পাস করেছে, পাসের হার ৯৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ। গত বছর বিদেশের সাতটি কেন্দ্র থেকে ৯৮ দশমিক ২৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিল। সেই হিসাবে এবার বিদেশের কেন্দ্রে পাসের হার কমেছে শূন্য দশমিক ৬৩ শতাংশ। তবে বিদেশী আট কেন্দ্রের মধ্যে ছয়টি কেন্দ্র থেকে শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করেছে। এর মধ্যে রয়েছেÑ জেদ্দার বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, দোহার বাংলাদেশ মাশহুর উল হক মেমোরিয়াল হাইস্কুল, আবুধাবির শেখ খলিফা বিন জায়েদ বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুল, মানামার বাংলাদেশ স্কুল, রাসআল খেইমার বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুল, ওমানের বাংলাদেশ স্কুল সাহাম। তবে দু’টি কেন্দ্র থেকে শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করেনি। এর মধ্যে রিয়াদের বাংলাদেশ অ্যাম্বাসি স্কুল ও ত্রিপলির বাংলাদেশ কমিউনিটি স্কুল।
Comments
Post a Comment