আপনারা আমাকে চিনেন না। আমি কিন্তু কাউকে ছাড় দেবো না।

'আপনি সিলেকশনের এমপি। ভোটে নির্বাচিত হননি। আর আমি প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক সিলেকটেড এমপি। শুধু আপনি বললে হবে না। সবার কথা শুনতে হবে' ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ঢাকা-১৪ আসনের এমপি মো: আসলামুল হককে উদ্দেশ্য করে এ কথাগুলো বললেন জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসন-৩৫ এর এমপি সাবিনা আক্তার তুহিন।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অঞ্চল-৪ এর আওতায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ও ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের নিয়ে মেয়র আনিসুল হকের এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। রোববার এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় ক্ষমতাসীন দলের এক এমপির প্রতি আরেক এমপির এ ধরনের বিদ্রুপাত্মক মন্তব্যে নবনির্বাচিত সিটি মেয়রসহ কাউন্সিলরদের বেশ অশ্বস্তিতে পড়তে হয়।

এমপি সাবিনা আক্তারের কথায় এক পর্যায়, আসলামু হক সভা থেকে চলে যেতে উদ্যত হলে মেয়র আনিসুল হকসহ কয়েক কাউন্সিলর তাকে নিভৃত করেন। তবে এ সময় আসলামুল হক এমপি সাবিনা আক্তারকে ইঙ্গিত করে ক্ষুব্ধ কন্ঠে বলেন, আমার সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণœ করা হচ্ছে।আপনারা আমাকে চিনেন না। আমি কিন্তু কাউকে ছাড় দেবো না।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, রোববার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অঞ্চল-৪ এর আওতায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ও ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের নিয়ে মেয়র আনিসুল হক এক মতবিনিময় সভা আয়োজন করেন।

এতে মেয়র আনিসুল হক কাউন্সিলরদের উদ্দেশ করে বলেন, আমরা ফুটপাথসহ সব ধরনের দখলমুক্ত করতে চাই। আপনারা কিভাবে সহযোগিতা করবেন?

জবাবে স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিন বলেন, ‘শুধু মতের বিরোধীদের দোকানপাট উচ্ছেদ করলে হবে না; উচ্ছেদ করলে সব অবৈধ দখলই উচ্ছেদ করতে হবে। শুধু প্রতিহিংসাবশত যারা আমার মিছিলে যায় তাদের দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়। বাকিদের উচ্ছেদ করা হয় না।’
তুহিন অভিযোগ করে বলেন, ‘এ মাস থেকে নতুন করে দখল শুরু হয়েছে। ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী টিপু সুলতান গিয়ে ফুটপাথের দোকানদারদের কাছে টাকা চান। টাকা না দিলে তাদেরকে উচ্ছেদের হুমকি দেন। উচ্ছেদে গেলে অনেকেই বলে আমার ভাই এমপি-মন্ত্রী। আমি দখল ছাড়বো না।’
তখন আনিসুল হক বলেন, ‘এ এলাকায় স্থানীয় কাউন্সিলর ছাড়া অন্য কারো কথা শোনা হবে না। একমাত্র প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কোনো ফোন কাজে আসবে না।’ এ সময় কাউন্সিলর কাজী টিপু সুলতান জানতে চান ওয়ার্ডে তার ক্ষমতা কী?
জবাবে সংসদ সদস্য আসলামুল হক বলেন, ‘তুমি একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি। ওয়ার্ডের সব তুমিই দেখবা। এখন নির্বাচিত কাউন্সিলর, স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং মেয়রকে এই তিনজন ছাড়া কারো কথা শোনা যাবে না।’
আসলামুল হকের এমন বক্তব্যে ক্ষেপে যান সাবিনা আক্তার তুহিন। তিনি আঙ্গুল উঁচিয়ে বলেন, ‘কেন আমাদেরকে অসম্মান করেন। আমাদের কথা শুনবেন না কেন। আপনি কিন্তু সিলেকশনের এমপি। ভোটে নির্বাচিত হননি। আর আমাকে স্বয়ং নেত্রী নিজেই নির্বাচিত করেছেন। আজ তাকে গিয়ে সব বলবো।’
জবাবে আসলামুল হক আসন থেকে উঠে বলেন, ‘আমি এখানে থাকবো না। আমি চলে যাচ্ছি।’ পরে মেয়র আনিসুল হকসহ কাউন্সিলররা তাকে অনুরোধ করলে আবার নিজের আসনে বসেন। এ সময় তিনি উচ্চস্বরে বলেন, ‘আমার সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণœ করা হচ্ছে।’ মেয়র আনিসুল হক সাবিনা আক্তার তুহিনকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনারা আমাকে চিনেন না। আমি কিন্তু কাউকে ছাড় দেবো না।’
কর্মকর্তাদের সতর্ক করলেন মেয়র : সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে এ সভায় মেয়র আনিসুল হক বলেন, ‘সাবধান! চাকরি হারাবেন না। আমি চাকরি খাইলে প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কেউ দিতে পারবে না।’
বৈঠকে কাউন্সিলররা অভিযোগ করেন, ‘সড়কে স্ট্রিট লাইটের স্টাটারগুলো অত্যন্ত নিম্নমানের। বাজারের চতুর্থ শ্রেণীর স্টাটারগুলো সড়কে লাগানো হচ্ছে, যা লাগানোর সাথে সাথে নষ্ট হয়ে যায়

Comments