ভারতকে আবার দ্বিধা বিভক্তির দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন
দেশটির উলামাদের সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ প্রধান মাওলানা আরশাদ মাদানী। গত শনিবার ভারতের উত্তর প্রদেশের লৌখনোতে জমিয়তের জেনারেল বডির মিটিংয়ে এক প্রস্তাব পাস করে বাবরী মসজিদ ধ্বংস করার জন্য আরএসএসকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ভারত গণতান্ত্রিক দেশ এবং এখানে যে কোনো ব্যক্তির নিজ ধর্ম পালনের অধিকার রয়েছে। কিন্তু এই দেশকে অন্যায়ভাবে অরাজকতা এবং ফ্যাসিবাদের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। জমিয়তে উলামা হিন্দের প্রধান মাওলানা আরশাদ মাদানী এ সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে ডানপন্থি শক্তির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য ঘর ওয়াপসির নামে বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, যে সব মানুষ ঘর ওয়াপসির নামে বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে তারা নিজ ধর্মের ভুল ছবি তুলে ধরছে। দেশের স্বাধীনতার জন্য মুসলিম সম্প্রদায়ের মতো আর কেউ বড় কুরবানী করে নি। তিনি সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, দেশ সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে একবার বিভক্ত হয়েছে, যদি সাম্প্রদায়িকতাকে প্রতিরোধ না করা হয় তাহলে ফের দেশ বিভক্ত হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা করে মাওলানা আরশাদ মাদানী বলেন, ডানপন্থিদের বিদ্বেষ ছড়ানোর বিরুদ্ধে তিনি সংসদে কোনো কথা বলেন নি। জমিয়তে উলামা হিন্দের পক্ষ থেকে অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, সংঘ পরিবার বাবরী মসজিদ ধ্বংস, ঘর ওয়াপসি, হিন্দু রাষ্ট্রের জন্য অভিযান চালানোসহ সাম্প্রদায়িক তৎপরতায় জড়িত রয়েছে। মুসলিম যুবকদের বিরুদ্ধেও তারা চক্রান্ত চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের পক্ষ থেকে উত্তর প্রদেশে ক্ষমতাসীন সমাজবাদী পার্টিরও সমালোচনা করা হয়েছে। তারা বলেছে, সমাজবাদী পার্টির পক্ষ থেকে মুসলিমদের কর্মসংস্থানের জন্য যে ১৮ শতাংশ সংরক্ষণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল, তা পালন করতে হবে। জমিয়তের পক্ষ থেকে শহর এবং গ্রামে সম্প্রীতি বাড়ানোর জন্য অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মুসলিম সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, তাদের মধ্যে সব মন্দ কাজ দূর করতে হবে, নইলে দুনিয়ার কোনো শক্তি তাদের সম্মান করবে না। প্রসঙ্গত, জমিয়ত প্রধান যে দিন এ কথা বলছেন, সেদিনই অন্যত্র শিখদের এক সভায় বিজিপি শীর্ষ স্থানীয় নেতা ও সাবেক সভাপতি এবং বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজানাথ সিং সমগ্র ভারতে গরু জবাইয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। অন্যদিকে সম্প্রতি আরএসএসের একটি শাখা সংগঠন থেকে দাবি তোলার পায়ঁতারা চলছে বাবরি মসজিদ রামের আর তাজ মহল এককালে শিবের মন্দির ছিল! এর আগ, ভারতের বিভিন্ন স্থানে জোর করে ধর্মান্তকরণের যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে তাতে দেশটির মুসলিম জনগোষ্ঠীকে চরমভাবে ভাবিয়ে তুলছে। বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনের তরফে ইতিমধ্যে এসব ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ ভারতে মুসলিম জনগোষ্ঠীর একটি বৃহত্তর সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ নড়েচড়ে বসেছে। তারা এসব অপতৎপরতা রুখতে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সতর্ক করে দিয়েছেন এর সম্ভাব্য পরিণতির ব্যাপারেও
Comments
Post a Comment