শুরু হয়েছিল পশ্চিম পাকিস্তানের প্রতি আমাদের ঘৃণা। সেই পুঞ্জীভূত ঘৃণার শেষে পূর্ব পাকিস্তান রূপান্তরিত হয় আজকের বাংলাদেশে।
শফিক রেহমান
পঞ্চাশের দশকের গোড়াতে ঢাকায় আমার স্কুল ও কলেজ জীবনের খুব প্রিয় বন্ধু ছিলেন মইনুদ্দিন মাহমুদ। আমরা পুরানা পল্টনে একই পাড়াতে থাকতাম এবং কৃকেট খেলতাম। তাকে মইনু বলে ডাকতাম। সে ছিল কৃতি সাহিত্যিক শামসুন্নাহার মাহমুদ-এর ছোট ছেলে এবং কলকাতা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের কৃতি ফুটবলার (পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী) হাবিবুল্লাহ বাহার-এর ভাগনে। মামার খেলোয়াড়ি গুণটা পেয়েছিল মইনু। সে ফুটবলে খুব ভালো গোলকিপার ছিল এবং কৃকেটে গোটা পাকিস্তানে তার নাম ছড়িয়ে পড়েছিল ভালো স্পিন বোলার রূপে।
আমরা যখন ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে, তখন মামার মতোই দীর্ঘদেহী, প্রায় ছয় ফিট লম্বা ও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী মইনুকে পাকিস্তান ন্যাশনাল কৃকেট টিমের জন্য খেলতে ডাকায় খুব খুশি হয়েছিলাম। সেই সময়ে আবদুল হাফিজ কারদার-এর ক্যাপ্টেনসিতে ব্যাটসম্যান হানিফ মোহাম্মদ ও ফাস্ট বোলার ফজল মাহমুদ প্রমুখের টিম আন্তর্জাতিকভাবে সুনাম অর্জন করেছিল। সেই টিমের পক্ষে সেই প্রথম একজন বাংলাদেশিকে খেলার জন্য করাচিতে ডেকে পাঠানোতে আমরা সবাই গর্বিত হয়েছিলাম। ঢাকায় সাগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম টেস্ট ম্যাচে মইনুরের পারফরম্যান্স কেমন হবে সেটা জানার জন্য। তখনকার যুগে টেলিভিশন ছিল না। এমনকি শর্ট ওয়েভ রেডিও সুলভ ছিল না। পূর্ব পাকিস্তানে স্বল্প পৃষ্ঠার দৈনিক পত্রিকাগুলোতে স্পোর্টসের খুব কম খবর থাকত। তাই পশ্চিম পাকিস্তানে মইনু কেমন খেলছিল সেটা জানার উপায় ছিল না। টেস্ট ম্যাচের সংবাদেও তার নাম এল না।
মইনু ঢাকায় ফিরে আসার পরে জেনেছিলাম তার কি হয়েছিল। কারদার তাকে নেট প্র্যাকটিসেরও সুযোগ দেননি। এমনকি কৃকেট গ্রাউন্ডেও মইনু যেতে পারেনি। প্র্যাকটিস সেশনে গ্রাউন্ডে প্লেয়ারদের নিয়ে যাওয়ার জন্য হোটেলে সকাল বেলায় বাস এলে প্রথম দিনেই কারদার তাকে হোটেলে থেকে যাওয়ার উপদেশ দিয়েছিলেন। হোটেলের লবিতে সমবেত অন্যান্য পাকিস্তানি প্লেয়ারদের সামনে এভাবে অপমানিত হওয়ার পরে মইনু ফার্স্ট অ্যাভেইলেবল ফ্লাইটে ঢাকায় ফিরে এসেছিল। এভাবেই একজন বাংলাদেশি প্লেয়ারের ন্যাশনাল কৃকেট টিমে খেলার সম্ভাবনা শেষ হয়ে গিয়েছিল।
আর শুরু হয়েছিল পশ্চিম পাকিস্তানের প্রতি আমাদের ঘৃণা। সেই পুঞ্জীভূত ঘৃণার শেষে পূর্ব পাকিস্তান রূপান্তরিত হয় আজকের বাংলাদেশে। আজ যখন বাংলাদেশের ন্যাশনাল কৃকেট টিম বিদেশে ভালো পারফর্ম করে তখন মইনুর সেই হাস্যোজ্জ্বল চেহারার কথা মনে পড়ে। সে শুধু স্পিন বোলারই ছিল না ভালো উইকেটকিপার ও ব্যাটসম্যানও ছিল।
আমি যখন স্পোর্টস রিপোর্টারের কাজ করতাম তখন ম্যাচ শেষে রিপোর্ট লিখতাম ঢাকা স্টেডিয়াম সংলগ্ন সলিমাবাদ রেস্টুরেন্টে। ম্যাচের সব বিশ্লেষণ মইনুই দিত আমি শুধু লিখতাম।
শামসুন্নাহার মাহমুদের বড় ছেলে ছিলেন সুদর্শন ও স্মার্ট মামুন মাহমুদ। তিনি ছিলেন পুলিশের ডিআইজি রূপে রাজশাহী জোনে কর্মরত। মুক্তিযুদ্ধের প্রথম পর্যায়ে ২৭/২৮ মার্চ ১৯৭১-এ পাকিস্তানি বাহিনী মামুনকে তার অফিস থেকে তুলে নিয়ে যায়। মামুন নিখোজ হয়ে যান। সম্প্রতি তাকে মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
হাবিবুল্লাহ বাহার ও তার বোন শামসুন্নাহার (কবি নজরুল তাদের বাহার-নাহার নামে ডাকতেন) উভয়েই ছিলেন পাকিস্তানের পক্ষে সক্রিয়, লেখায় ও অন্যান্য কাজে। কিন্তু শামসুন্নাহার মাহমুদের ছোট সন্তান মইনু হয়েছিল পাকিস্তান কৃকেট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অবহেলিত এবং বড় সন্তান মামুন হয়েছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক অপহৃত।
তারপর মার্চ ১৯৭১-এ বাংলাদেশবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে। ইনডিয়া তখন সাহায্য করেছিল বাংলাদেশকে।
নিয়তির কি অদ্ভুত পরিহাস!
৪৪ বছর পরে মার্চ ২০১৫-তে আবারও বাংলাদেশ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল তবে এবার ইনডিয়ার বিরুদ্ধে!
কারণ?
কৃকেট।
এই বিশাল কন্ট্রাস্ট বা বৈপরীত্যে গভীরভাবে ভেবে দেখা উচিত হবে।
কারণ?
সেই পঞ্চাশের দশকে পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সঞ্চারিত ঘৃণা বিশ বছর পরে সত্তরের দশকে বাংলাদেশিদের করেছিল বিদ্রোহী এবং জয়ী। এই উপমহাদেশ হয়েছিল ত্রিখ-িত। তাহলে ভেবে দেখতে হবে ২০১৫-তে ইনডিয়ার প্রতি ক্ষুব্ধ বাংলাদেশিদের অনুভূতি এখন থেকে বিশ বছর পরে এই উপমহাদেশকে কোথায় টেনে নিয়ে যাবে এবং কিভাবে?
৪৪ বছর পরে মার্চ ২০১৫-তে আবারও বাংলাদেশ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল তবে এবার ইনডিয়ার বিরুদ্ধে!
কারণ?
কৃকেট।
এই বিশাল কন্ট্রাস্ট বা বৈপরীত্যে গভীরভাবে ভেবে দেখা উচিত হবে।
কারণ?
সেই পঞ্চাশের দশকে পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সঞ্চারিত ঘৃণা বিশ বছর পরে সত্তরের দশকে বাংলাদেশিদের করেছিল বিদ্রোহী এবং জয়ী। এই উপমহাদেশ হয়েছিল ত্রিখ-িত। তাহলে ভেবে দেখতে হবে ২০১৫-তে ইনডিয়ার প্রতি ক্ষুব্ধ বাংলাদেশিদের অনুভূতি এখন থেকে বিশ বছর পরে এই উপমহাদেশকে কোথায় টেনে নিয়ে যাবে এবং কিভাবে?
পাশাপাশি এটাও মনে রাখতে হবে কোনো অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি থেকে উপমহাদেশকে বাচিয়ে রাখতে হলে প্রধান দায়িত্বটা নিতে হবে বড় দেশ ইনডিয়াকেই। দূরদর্শী হতে হবে ইনডিয়াকে। শুধু কৃকেট, ডিশ টিভি, হিন্দি-বাংলা মুভি ও বিজনেসই নয় পলিটিক্সের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের জনমতকে বিবেচনায় রাখতে হবে ইনডিয়াকে।
এই মুহূর্তে যে আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন রয়েছে শুধু তাদের মতামতের ওপর নির্ভরশীল হলে ইনডিয়া ভুল করবে। যেমন ভুল করেছিলেন ২০১৩-তে ঢাকায় সফরকারী ইনডিয়ান পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং এবং যে ভুলের মাশুল তাকে দিতে হয়েছে মোদি সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পরে। সুজাতা সিং বরখাস্ত হয়েছেন। আশা করা যায় বাংলাদেশকে নতুন চোখে দেখার ধারাবাহিকতা মোদি সরকার বজায় রাখবে।
বলা বাহুল্য, ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকার ঠিক এর বিপরীতটাই চাইবে। তারা ইনডিয়া তোষণ নীতি বজায় রেখে মোদি সরকারকে হাতে রাখতে চাইবে। সে ক্ষেত্রে নিউ জিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া সদ্য সমাপ্ত কৃকেট ওয়ার্ল্ড কাপ বাংলাদেশ সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। কৃকেটকে কেন্দ্র করে গোটা বাংলাদেশ ইনডিয়া বিরোধী হয়ে পড়েছে।
এই বিড়ম্বনা থেকে আওয়ামী সরকারের মুক্তি পাওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশে কৃকেট নিষিদ্ধ করার ১০টি কারণ আছে। তবে যারা কৃকেটপ্রেমী এবং যারা বাংলাদেশে কৃকেট চালু থাকুক, সেটা চান, তাদের পক্ষেও ১টি বড় কারণ আছে।
১৯ মার্চ ২০১৫-তে অনলাইন কৃকেট কান্টৃ-তে নিশাত পাই বৈদ্য রিপোর্ট করেন, “সব সময় ইফস (ifs) অ্যান্ড বাটস (buts) থাকে। অর্থাৎ, যদি (if) ওটা হতো এবং কিন্তু (but) হলে ইত্যাদি। তারপরও বলতে হবে বাংলাদেশে কৃকেট টিম নিজেদের দুর্ভাগা রূপে গণ্য করতে পারে মেলবোর্ন আইসিসি কৃকেট ওয়ার্ল্ড কাপ ২০১৫-র কোয়ার্টার ফাইনালের পরে। দুটো আম্পায়ারিং ডিসিশন বাংলাদেশের পক্ষে যদি যেত সে ক্ষেত্রে হয়তো ম্যাচের সো্রত তাদের অনুকূলে বইত। কিন্তু তা হয়নি। ফলে ইনডিয়া স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে এবং তাদের (ইনডিয়ার) দুজন ব্যাটসমেন ম্যাচের ওপর বিশাল প্রভাব বিস্তার করতে পারেন। যদি ইনডিয়া এই ম্যাচে জেতে তাহলে আম্পায়ার দুজন এবং ডিসিশন রিভিউ সিসটেম (Decision Review System, সংক্ষেপে DRS বা ডিআরএস) নিয়ে প্রচন্ড বিতর্ক চলতে থাকবে।”
“যখন সুরেশ রায়না ১০ রানের মাথায় ছিলেন, তখন মাশরাফি মোরতজার বল তাকে স্টাম্পের সামনে হিট করে। আম্পায়ার ইয়েন গুল্ড তাকে আউট দেন না। তখন থার্ড আম্পায়ারের কাছে বাংলাদেশ রিভিউ চায়। প্রথম নজরে মনে হয়, বল সুরেশকে হিট করেছিল স্টাম্পের সামনে এবং যদি সেটা সুরেশ পা দিয়ে না ঠেকাতেন তাহলে বল স্টাম্পে হিট করত। এরপরে বল ট্র্যাকার দিয়ে চেক করালে দেখা যায় বল লেগ স্টাম্পের খুবই অল্প দূর দিয়ে গেছে। বলের কিছু পার্ট লাইনের মধ্যে ছিল কিছু পার্ট বাইরে ছিল। এর ফলে থার্ড আম্পায়ার বাধ্য হন ফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন দিতে। কিন্তু রায়নাকে যদি ফিল্ড আম্পায়ার আউট দিতেন এবং যদি ইনডিয়া তার বিরুদ্ধে রিভিউ চাইত তাহলে, তাকে (রায়নাকে) প্যাভিলিয়নে ফিরে যেতে হতো।”
“যখন সুরেশ রায়না ১০ রানের মাথায় ছিলেন, তখন মাশরাফি মোরতজার বল তাকে স্টাম্পের সামনে হিট করে। আম্পায়ার ইয়েন গুল্ড তাকে আউট দেন না। তখন থার্ড আম্পায়ারের কাছে বাংলাদেশ রিভিউ চায়। প্রথম নজরে মনে হয়, বল সুরেশকে হিট করেছিল স্টাম্পের সামনে এবং যদি সেটা সুরেশ পা দিয়ে না ঠেকাতেন তাহলে বল স্টাম্পে হিট করত। এরপরে বল ট্র্যাকার দিয়ে চেক করালে দেখা যায় বল লেগ স্টাম্পের খুবই অল্প দূর দিয়ে গেছে। বলের কিছু পার্ট লাইনের মধ্যে ছিল কিছু পার্ট বাইরে ছিল। এর ফলে থার্ড আম্পায়ার বাধ্য হন ফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন দিতে। কিন্তু রায়নাকে যদি ফিল্ড আম্পায়ার আউট দিতেন এবং যদি ইনডিয়া তার বিরুদ্ধে রিভিউ চাইত তাহলে, তাকে (রায়নাকে) প্যাভিলিয়নে ফিরে যেতে হতো।”
“দ্বিতীয় বিতর্কিত কলটি হয় ৪০তম ওভারে। তখন রুবেল একটা উচু ফুল টস বল করেন রোহিত শর্মাকে। রোহিত স্কোয়ার লেগে মারলে সহজেই ক্যাচটি লুফে নেন ইমরুল কায়েস। কিন্তু আম্পায়ার সিগনাল দেন ওটা নো-বল হয়েছিল উচ্চতার কারণে। রিপ্লেতে দেখা যায় ব্যাটের সঙ্গে পয়েন্ট অফ কনটাক্টে বলটা ঠিক কোমর উচ্চতায় ছিল এবং বাংলাদেশ তাকে (রোহিতকে) গণ্য করতে পারত। সেই সময়ে রোহিতের রান সংখ্যা ছিল ৯০ এবং তিনি আরো ৪৭ রান করে মোট নিজস্ব ১৩৭ রানের মাথায় আউট হন। রায়না ১০ রানের মাথায় বেচে যাওয়ার পরে মোট নিজস্ব ৬৫ রানে আউট হন। (অর্থাৎ এই দুই ব্যাটসমেন ৪৭+৫৫ = ১০২ রান বেশি করার পরে) ম্যাচের মোড় ঘুরে যায় এমন একটা সময়ে যখন ইনডিয়া বিপদে পড়েছিল।”
বাংলাদেশ বলতে পারে এই দুই ব্যাটসমেন তখন আউট হয়ে গেলে ইনডিয়ার পক্ষে মোট দলীয় ৩০২ রান করা সহজ হতো না।
কোহলিকে অাউট করার পর রুবেল
একই দিনে লন্ডনের দি গার্ডিয়ান পত্রিকার অনলাইনে দিলীপ প্রেমচন্দরণ রিপোর্ট করেন, “খুব কম সময়েই স্কোর কার্ড একটি ম্যাচের ফুল স্টোরি তুলে ধরে। ঠিক তাই হয়েছে মেলবোর্নে ওয়ার্ল্ড কাপ কৃকেটের কোয়ার্টার ফাইনালে ইনডিয়া বনাম বাংলাদেশের ম্যাচে। স্কোর কার্ড দেখায় ইনডিয়া ১০৯ রানে সহজে জিতেছে। ১২৬ বলে রোহিত শর্মার চমৎকার ১৩৭ রান এবং উমেশ যাদব ও মোহাম্মদ শামি-র আগুন ঝরা বোলিংয়ের কথা হেডলাইনে থাকবে। কিন্তু এই ম্যাচের এক-চতুর্থাংশের বেশি সময়ে (অর্থাৎ টসে জিতে ইনডিয়া যখন ব্যাট করছিল) বাংলাদেশ আধিপত্য বিস্তার করেছিল।
এক সময় ইনডিয়া ২ উইকেট হারিয়ে ৯৯ রানে হিমশিম খচ্ছিল। এই দুই উইকেটের মধ্যে একটি ছিল তাদের স্টার ব্যাটসমেন বিরাট কোহলি। কিন্তু দুটো আম্পায়ারিং ডিসিশন একটি মার্জিনাল এবং অপরটি কন্ট্রোভার্শিয়ালের ফলে মনে হয় বাংলাদেশ হতোদ্যম হয়ে যায়। এর পরে শেষ ১৫ ওভারে ইনডিয়া মহানন্দে ১৪৭ রান তাদের দলীয় স্কোর কার্ডে যোগ করতে পারে।”
নিশাত পাই বৈদ্য ও দিলীপ প্রেমচন্দরণ তাদের রিপোর্টে তৃতীয় একটি বিতর্ক এড়িয়ে গেছেন। সেই বিতর্কটি ওঠে বাংলাদেশ যখন ব্যাট করছিল। এর আগের রাউন্ডে ইংল্যান্ড ও নিউ জিলান্ডের বিপক্ষে পরপর দুটি সেঞ্চুরি হাকানো মাহমুদুল্লাহ ব্যাট করছিলেন। তিনি ও সৌম্য সরকার জুটি ৪০ রান যোগ করেন যদিও প্রয়োজনীয় রান রেট থেকে তারা ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছিলেন। মোহাম্মদ শামিকে এই পর্যায়ে তার প্রথম দুই ওভারে ১৮ রান দিতে হয়েছিল। শামির তৃতীয় ওভারে মাহমুদুল্লাহ সজোরে বল হাকান। হয় চার অথবা ছয় রান হবে এমনটা যখন দর্শকরা ভাবছিলেন, তখন ফাইন লেগে ধাওয়ান বলটা ক্যাচ করেন। কিন্তু এই একশনে ধাওয়ান মাঠের সীমানার বাইরে চলে যান এবং তাৎক্ষণিকভাবে মাঠের মধ্যে ফিরে আসেন।
আম্পায়ার মাহমুদুল্লাহকে আউট দেন। এতে বাংলাদেশি দর্শকরা প্রচ- ক্ষুব্ধ হয়। তারা ভাবে আম্পায়ারবৃন্দ কোনো বিশেষ প্রভাবে রায় দিচ্ছেন। তারা মনে করিয়ে দেন ইয়েন গুল্ড (ইংল্যান্ড) ও আলিম দার (পাকিস্তান) উভয়েই ইনডিয়ান কৃকেট পৃমিয়ার লিগে নিয়মিত আয় করেন।
বলা যায় এই তিনটি আম্পায়ারিং ডিসিশনে বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বাদ যায় এবং ইনডিয়া উঠে যায় সেমিফাইনালে, আর তখন থেকেই স্টেজ সেট হয় ওই মেলবোর্নেই ইনডিয়া তার প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে কেমন পারফর্ম করে সেটা দেখার জন্য বাংলাদেশির অদম্য আগ্রহ। বৃহস্পতিবার ২৬ মার্চ ২০১৫-তে সকাল থেকে বাংলাদেশিদের ঘরে ঘরে সকাল ন’টা থেকে টিভি অন হয়ে যায়। কাজের বুয়া থেকে ড্রাইভার, ছাত্র থেকে টিচার, অফিস স্টাফ থেকে বস, সবাই টিভিতে ইনডিয়া-অস্ট্রেলিয়ার সেমিফাইনাল ম্যাচটি দেখতে থাকেন। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এদিন বাংলাদেশে পাবলিক হলিডে থাকায় মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ভিড় ছিল টিভি সেটের সামনে। এদের সম্মিলিত হর্ষধ্বনি, শীষ ও চিৎকার প্রথমে ওঠে টসে অস্ট্রেলিয়ার জয় সংবাদে।
অস্ট্রেলিয়া ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। দলের মাত্র ১৫ রানের এবং ব্যক্তিগত ১২ রানের মাথায় ওয়ার্নার বিদায় নিলেও স্টিভেন স্মিথ ও অ্যারন ফিঞ্চ-এর সেকেন্ড উইকেট জুটি যখন দলীয় রান ১৯৭-এ পৌছে দেন তখন সবাই প্রায় নিশ্চিত হয়ে যান যে অস্ট্রেলিয়ার মোট রান সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়ে যাবে এবং ইনডিয়ার পক্ষে সেটা অতিক্রম করা সম্ভব হবে না। অন্যভাবে বলা চলে তখন বিশ্ব জুড়ে দর্শকরা বুঝতে পারেন, বাংলাদেশের ভাগ্যে যা ঘটেছিল সাত দিন আগে একই মাঠে তার পুনরাবৃত্তির শিকার অস্ট্রেলিয়া হবে না।
আর তাই অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ের সময়ে প্রতিটি ৪ ও ৬ রানের হিটে আকাশ কাপানো হর্ষধ্বনি উঠতে থাকে বাংলাদেশে। ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে অস্ট্রেলিয়া তাদের খেলা শেষ করে। ইনডিয়া আসে ব্যাট করতে।
এই সময়ে মেলবোর্ন স্টেডিয়ামে হর্ষধ্বনি উঠতে থাকে ইনডিয়ার পক্ষে। কারণ উপস্থিতির ৭০% শতাংশই ছিল ইনডিয়ান। কিন্তু বাংলাদেশে এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঘরে ঘরে হর্ষধ্বনি উঠতে থাকে দলীয় ৭৬ রান ও নিজস্ব ৪৫ রানের মাথায় ধাওয়ানের আউট হওয়া থেকে। এরপর প্রতিটি ইনডিয়ান উইকেট পতনে বাংলাদেশি দর্শকরা তীব্র উত্তেজনা ও প্রচ- উৎসাহে হইচই করতে থাকেন। ঢাকায় টিএসসিতে খবর পৌছে যায় বিভিন্ন হল থেকে ছাত্ররা মিছিল করতে আসবে জুতা ও ঝাড়– হাতে। সত্যিই তাই হয়। ইনডিয়ান ব্যাটসম্যানদের মধ্যে একমাত্র ক্যাপ্টেন এম এস ধোনি হাফ-সেঞ্চুরি ক্রস করতে পারেন। ৭ উইকেটে দলীয় ২৩১ রানে ও ব্যক্তিগত ৬৫ রানের মাথায় ধোনি আউট হয়ে যাওয়ার পরে অস্ট্রেলিয়ার জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়।
বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে পাচটার দিকে ৪৬.৫ ওভারে ইনডিয়া অল আউট হয়ে যায়। অস্ট্রেলিয়া জয়ী হয় ৯৫ রানে। বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিতরণ ও খাওয়া হয়। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিলডিং সব ক্ষেত্রেই ইনডিয়ার চাইতে অনেক সুপিরিয়র পারফর্মেন্সে অস্ট্রেলিয়া জয়ী হয়। ম্যান অফ দি ম্যাচ হন সেঞ্চুরি হাকানো স্টিভেন স্মিথ।
ঢাকা থেকে মেলবোর্নের ফ্লাইং দূরত্ব হচ্ছে ৮,৯০০ কিলোমিটার (৫,৫৩১ মাইল) এবং এয়ারবাস এ৩২০-তে ফ্লাই করলে সময় লাগবে ১১ ঘণ্টা।
কিন্তু তাতে কি? সেই মুহূর্তে প্রতিটি বাংলাদেশি কৃকেটপ্রেমী পারলে ওই দূরত্ব অতিক্রম করে মেলবোর্নে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ানদের কংগ্রাচুলেশন্স জানিয়ে আসত।
আর সে জন্যই আওয়ামী লীগ সরকারের উচিত হবে এখনই বাংলাদেশে কৃকেট খেলা নিষিদ্ধ করা। যে ১০টি কারণে আওয়ামী লীগ সরকারকে অবিলম্বে এই পদক্ষেপ নিতে হবে সেটা নিচে দেওয়া হলো।
১
বিবিসি ইংলিশ ডিকশনারিতে ইংরেজি শব্দ আম্পায়ারের মানে হচ্ছে, কৃকেট অথবা টেনিসের মতো খেলায় আম্পায়ার হচ্ছে সেই ব্যক্তি যার দায়িত্ব হচ্ছে, ম্যাচটি ন্যায়ভাবে খেলা হচ্ছে এবং কোনো নিয়ম ভঙ্গ হচ্ছে না সেটা নিশ্চিত করা (In games such as cricket or tennis, the umpire is the person whose job is to make sure the game is played fairly and the rules are not broken)। বাংলাদেশিদের কাছে কৃকেট আম্পায়ারদের বিষয়ে এমন ধারণাই প্রচলিত ছিল ১৯ মার্চ ২০১৫ পর্যন্ত। কিন্তু বিতর্কিত তিনটি সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের প্রতিকূলে যাওয়ায় এবং পরিণতিতে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়ায় কৃকেট আম্পায়ারদের প্রতি বাংলাদেশের প্রচ- অনাস্থা ও অশ্রদ্ধার সৃষ্টি হয়েছে। এটা কৃকেটের সামগ্রিক পরিবেশের জন্য অমঙ্গলজনক। কৃকেট আম্পায়ারদের প্রতি বাংলাদেশিদের এই হীন মনোবৃত্তিকে অঙ্কুরে বিনাশ করতে হলে কৃকেট খেলাই নিষিদ্ধ করতে হবে বাংলাদেশে।
বিবিসি ইংলিশ ডিকশনারিতে ইংরেজি শব্দ আম্পায়ারের মানে হচ্ছে, কৃকেট অথবা টেনিসের মতো খেলায় আম্পায়ার হচ্ছে সেই ব্যক্তি যার দায়িত্ব হচ্ছে, ম্যাচটি ন্যায়ভাবে খেলা হচ্ছে এবং কোনো নিয়ম ভঙ্গ হচ্ছে না সেটা নিশ্চিত করা (In games such as cricket or tennis, the umpire is the person whose job is to make sure the game is played fairly and the rules are not broken)। বাংলাদেশিদের কাছে কৃকেট আম্পায়ারদের বিষয়ে এমন ধারণাই প্রচলিত ছিল ১৯ মার্চ ২০১৫ পর্যন্ত। কিন্তু বিতর্কিত তিনটি সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের প্রতিকূলে যাওয়ায় এবং পরিণতিতে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়ায় কৃকেট আম্পায়ারদের প্রতি বাংলাদেশের প্রচ- অনাস্থা ও অশ্রদ্ধার সৃষ্টি হয়েছে। এটা কৃকেটের সামগ্রিক পরিবেশের জন্য অমঙ্গলজনক। কৃকেট আম্পায়ারদের প্রতি বাংলাদেশিদের এই হীন মনোবৃত্তিকে অঙ্কুরে বিনাশ করতে হলে কৃকেট খেলাই নিষিদ্ধ করতে হবে বাংলাদেশে।
২
এক সময়ে কৃকেট ম্যাচে দুজন আম্পায়ার মাঠে উপস্থিত থাকতেন। কিন্তু লেগ বিফোর উইকেট বা এলবিডাবলিউ (lbw) ডিসিশনে এবং রান আউট ডিসিশনে ফিল্ড আম্পায়ারদের গুরুতর ভুল হতে থাকলে শ্রীলংকান টেস্ট কৃকেটার ও বর্তমানে কৃকেট কলামিস্ট মাহিন্দ বিজয়সিংহে তৃতীয় বা থার্ড আম্পায়ারের চিন্তা করেন। তার এই চিন্তা বাস্তবায়িত হয় নভেম্বর ১৯৯২-এ ডারবান শহরে কিংসমিড গ্রাউন্ডে। সেই সময়ে সাউথ আফৃকা বনাম ইনডিয়া টেস্ট সিরিজ চলছিল। কার্ল লিবেনবার্গ ছিলেন থার্ড আম্পায়ার। ইনডিয়ান ব্যাটসমেন শচিন টেনডুলকার এই সিরিজের সেকেন্ড টেস্ট ম্যাচে টেলিভিশন রিপ্লেতে থার্ড আম্পায়ারের ডিসিশনে নিজস্ব ১১ রানের মাথায় রান আউট হন। থার্ড আম্পায়ারও যেন ভুল না করেন সে জন্য আইসিসি (ইন্টারন্যাশনাল কৃকেট কন্ট্রোল বোর্ড) পর্যায়ক্রমে কিছু নতুন ব্যবস্থা নিয়েছে। যেমন, ইন্সট্যান্ট টিভি রিপ্লে দেখতে পারেন থার্ড আম্পায়ার। চলতি ওয়ার্ল্ড কাপ কৃকেট থেকে থার্ড আম্পায়ার কিভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন সেটা দর্শকদের জানানোর জন্য তার কণ্ঠস্বরও ব্রডকাস্ট করা হয়েছে। কৃকেটে ফোর্থ বা চতুর্থ আম্পায়ার থাকেন। তার প্রধান দায়িত্ব হলো কৃকেটারদের ব্যাট ও বল সাপ্লাই ঠিক রাখা, ডৃংকস ও অন্যান্য ব্রেকে কৃকেট পিচ যেন সুরক্ষিত থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখা এবং থার্ড আম্পায়ার কোনো কারণে অক্ষম হয়ে পড়লে তার স্থানে যাওয়া।
কিন্তু এত সতর্কতা সত্ত্বেও বাংলাদেশি দর্শকরা ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। ফলে দুজন ফিল্ড আম্পায়ারসহ এখন থার্ড আম্পায়ারের ডিসিশনও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। এটা অসহ্য। বাংলাদেশিদের এই সন্দেহ করার প্রবৃত্তিকে এখনই উপড়ে ফেলতে হবে। সব কৃকেট গ্রাউন্ডে তাদের উপস্থিতি নিষিদ্ধ করতে হবে এবং বাংলাদেশে সব টেলিভিশন কেবল অপারেটরদের বলে দিতে হবে কখনোই যেন কোনো টিভি ম্যাচ দেখানো না হয়। কেবল অপারেটররা খুব অনুগতভাবে বিনা আপত্তিতে এই সরকারি নির্দেশ মেনে নেবে যেমনটা তারা মেনে নিয়েছে একুশে টেলিভিশনের অনুষ্ঠান সম্প্রচার না করার অলিখিত নির্দেশ।
৩
বাংলাদেশি কৃকেট দর্শক ও কৃকেট রিপোর্টাররা সরব হয়েছেন আইসিসির সমালোচনায়। এমনকি তারা বলেছেন ইনডিয়া-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে ৭০%-এর বেশি টিকেট ইনডিয়ানদের দিয়েছে আইসিসি! দৈনিক মানবজমিন-এর স্পোর্টস ডেস্কের একটি রিপোর্টের কিছু অংশ পড়ুন :
“আশঙ্কাটা আগেই করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক। তাই তো সমর্থকদের স্টেডিয়ামে এসে দলকে উৎসাহ জানানোর আহ্বান জানিয়ে টুইট করেছিলেন। তাতে খুব একটা লাভ হয়নি। আগেই টিকেট ফুরিয়ে যাওয়া ইনডিয়ান সমর্থকের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারেনি স্বাগতিকরা। এতেই সিডনির গ্যালারি পরিণত হয়েছিল নীল-আকাশি রঙের সমুদ্রে। হঠাৎ যে কেউ ভুল করে ভেবে বসতে পারতেন, এটা কি মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে নাকি কলকাতার ইডেন গার্ডেন? এতেও ষড়যন্ত্রের গন্ধ পেয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সমর্থকরা। তাদের দাবি আইসিসির সহযোগিতায় ৭০ শতাংশ টিকেট কিনে নিয়েছে ইনডিয়ানরা।
সিডনি কৃকেট গ্রাউন্ডের গ্যালারি ভরে ওঠার কথা ছিল হলুদ জার্সিতে। মাইকেল ক্লার্কদের অনুপ্রেরণা দিতে স্বাগতিক দর্শক-সমর্থকদের উপস্থিতিই ছিল সবচেয়ে বেশি কাম্য। কিন্তু তা না, গ্যালারি পুরোটাই ছিল ইনডিয়ানদের দখলে। যেন কলকাতার ইডেন গার্ডেনে পরিণত করেছিল তারা। সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের ফলাফল যা-ই হোক না কেন স্বাগতিক দর্শকদের হারিয়ে দিল ইনডিয়ান দর্শকরা। ৪২ হাজার দর্শকের ধারণ ক্ষমতার সিডনিতে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ সমর্থকদের ভিড়ে অস্ট্রেলিয়ান দর্শকদের সংখ্যালঘুই মনে হলো। আয়োজকরা আগেই জানিয়ে দিয়েছিল, সেমিফাইনালে ইনডিয়ান দর্শকদের ঢল নামবে। আদতে হলো সেটাই।”
“অস্ট্রেলিয়ানদের অভিযোগ কিন্তু আইসিসির দিকেই আঙুল তুলে দিচ্ছে। তাদের অভিযোগ, স্বাগতিক হওয়া সত্ত্বেও সিডিনতে তারা আইসসিরি কারণেই টিকেট পায়নি। ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থাটির যোগসাজশেই আগে থেকে ম্যাচের ৭০ শতাংশেরও বেশি টিকেট ইনডিয়ানদের জন্য বরাদ্দ করে দেওয়া হয়। তাতে ইনডিয়ান সমর্থকে ঠাসা স্টেডিয়ামটিকে ধোনিরা মনে করতে পারে, নিজ দেশের ভেন্যুর মতোই। অর্থাৎ, ইনডিয়ানদের অনৈতিক সুবিধা দেওয়ার জন্য যত ধরনের সম্ভব সব আয়োজন সম্পন্ন করে রেখেছিল আইসিসি। উইকেট তৈরি নিয়ে কম নাটক করেনি আইসিসি। অস্ট্রেলিয়া কৃকেটের পরাশক্তি হওয়ায় হয়তো শেষ পর্যন্ত আম্পায়ার হাত করতে পারেনি। কিন্তু ইনডিয়া বেষ্টিত গ্যালারি উপহার দিয়ে ধোনিদের উৎসাহের মাত্রা দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেওয়ার কাজটি ঠিকই করেছে তারা।”
দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশিদেরও আইসিসি বিদ্বেষ সংক্রামক রোগের মতোই ছড়িয়ে পড়েছে অস্ট্রেলিয়াতেও। এই বিদ্বেষ ও সংক্রমণ রোধ করতে হবে গোড়াতেই। সুতরাং বাংলাদেশে কৃকেট নিষিদ্ধ করতে হবে এখনই।
৪
আইসিসি-র সমালোচনার পাশাপাশি বোর্ড অফ কনট্রোল ফর কৃকেট ইনডিয়া (সংক্ষেপে BCCI) বিসিসিআই-ও প্রচ- সমালোচনার মুখে পড়েছে নিজের দেশেই!
ইনডিয়ার প্রভাবশালী ইংরেজি সাপ্তাহিক ইনডিয়া টুডে-র (১৬ মার্চ ২০১৫) স্পোর্টসওয়াচ কলামে কুনাল প্রধান লিখেছেন (পৃষ্ঠা ৮২), ১০ বছর পরে ডালমিয়ার প্রত্যাবর্তন বোঝাচ্ছে অতীত থেকে শিক্ষা নিতে পারে নি বিসিসিআই। লেখাটির কিছু অনূদিত অংশ :
“একটি চায়নিজ প্রবাদ আছে, আপনি যত জোরে নিচে পড়বেন, ঠিক তত জোরে আবার উপরে উঠবেন। এই প্রবাদ বিসিসিআই-এর ক্ষমতাসীনদের মহলে চালু আছে। তবে তারাও ভাবতে পারেননি পতিত জগজীবন ডালমিয়ার এমন পুনরুত্থান হবে।... এক সময়ে আন্তর্জাতিক মিডিয়া মনে করত, ইনডিয়া যে কৃকেটে বিশ্ব আধিপত্য বিস্তার করতে চায় তারই প্রতীক হচ্ছেন ডালমিয়া। অতীতে তিনি কলকাতায় রাজস্থান ক্লাবের পক্ষে উইকেটকিপার রূপে খেলতেন। তার এই পরিচয়ে কোনো আভিজাত্য ছিল না। বিসিসিআই-এর অভিজাত কর্তব্যক্তিরা তাই ডালমিয়ার একক ক্ষমতার লালসা মেনে নিতে পারেননি। তারা চেয়েছিলেন তাকে ভারত মহাসাগরে ডুবিয়ে মারতে। কিন্তু বিশ্ব মিডিয়া এবং বিসিসিআই-এর কর্তাব্যক্তিদের চাইতে অনেক বেশি দূরদর্শী, ধুরন্ধর ও চার্মিং ছিলেন ডালমিয়া। তার কৃকেট বিশ্বায়নের যুক্তিটি অকাট্য ছিল এবং তিনি এসোসিয়েট সদস্যদের কবজায় রেখে চলছিলেন। তিনি বোঝাতে পেরেছিলেন কৃকেটের আর্থিক ভবিষ্যৎ পশ্চিমে নয় পূর্বে (ইনডিয়াতে)। আর সেটাই আন্তর্জাতিক কৃকেটকে বদলে দিয়েছে চিরকালের জন্য।”
“তবে অধিকাংশ ট্র্যাজিক হিরোর মতোই, ডালমিয়ার মারাত্মক ভুল হয়েছিল। যখন তিনি আকাশের তারা ছুতে ব্যস্ত ছিলেন, তখন তার পায়ের নিচ থেকে মই সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। তিনি এত অল্প সময়ে ইনডিয়ান কৃকেটকে এত বড় করে ফেলেছিলেন যে অন্যান্য ইনটারেস্টেড রুই কাৎলারা সেখানে ভাগ বসাতে বদ্ধপরিকর হয়। তার পরিণতিতে ২০০৬-এ শারদ পাওয়ারের কারসাজিতে ডালমিয়াকে বিদায় নিতে হয়। ডালমিয়া লড়তে থাকেন আদালতে। বিসিসিআইতে তার আনাগোনা নিষিদ্ধ হয়ে যায়। কিন্তু ভাগ্যের লিখন ছিল অন্য।”
“মাডগাল কমিটি রিপোর্ট এবং বিসিসিআইয়ের অতিরিক্ত প্রভাবশালী ব্যক্তি এন শ্রীনিবাসনের বিরুদ্ধে সুপৃম কোর্টের একটি রায়ের পর ডালমিয়ার আকস্মিক প্রত্যাবর্তন ঘটেছে। তার বয়স এখন ৭৪ এবং তার কর্মচঞ্চল অতীত দিনগুলোর তুলনায় তিনি ধীরস্থির। পরিহাস এই যে, যে অনিয়ম ও দুর্নীতি থেকে বিসিসিআইকে উদ্ধারের জন্য এখন যাকে ডেকে আনা হয়েছে তিনি নিজেই ছিলেন ওই কুপ্রথাসমূহের চেষ্টা!”
“... হয়তো ডালমিয়া তার উত্তরসূরিদের চাইতে কিছুটা ভালো। কিন্তু বিসিসিআইয়ের হাল ধরার জন্য তাকেই ফিরিয়ে আনার মানে দাড়াচ্ছে ইনডিয়ান কৃকেট তার অতীতেই ফিরে গেছে। ... এর মানে হচ্ছে বিসিসিআই দুর্নীতিমুক্ত হওয়ার আশা খুবই কম।... নতুন লোক দিয়ে বিসিসিআইকে নতুনভাবে ঢেলে সাজালে সেখানে নতুন চিন্তা আসত। তা হয়নি। যে কৃকেট বোর্ডের চেহারা কখনো বদলায় না সেই কৃকেট বোর্ড অস্বচ্ছ ও স্বেচ্ছাচারীভাবে চলতে থাকবে।”
কুনাল প্রধানের সঙ্গে কেউ টুইটারে যোগাযোগ করতে চাইলে ঠিকানাটি লিখে রাখতে পারেন,twitter@_kunal_pradhan
পাঠকরা বুঝতেই পারছেন বিসিসিআইয়ের বিশ্ব আধিপত্য স্পৃহা এবং টপ টু বটম দুর্নীতি এখন ইনডিয়াতেই গভীর বিতর্কের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। কুনাল প্রধানের এই লেখাটি প্রকাশের ১০ দিন পরে ২৬ মার্চ ২০১৫-তে অস্ট্রেলিয়ার কাছে শোচনীয়ভাবে ইনডিয়ার পরাজয়ে ইনডিয়াতে বিতর্ক গভীরতর হবে। যেহেতু বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার সর্বতোভাবে ইনডিয়াকে সাহায্য করতে সদাব্যগ্র সেহেতু বিসিসিআই নিয়ে যেন কোনো বিতর্ক বাংলাদেশে সূচিত না হয় সেই লক্ষ্যে কৃকেট নিষিদ্ধ করতে হবে।
৫
বিসিসিআই তথা আইপিএলের আর্থিক হাতছানিতে আম্পায়ারদের আকৃষ্ট হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, এবার ওয়ার্ল্ড কাপ কৃকেটে বাংলাদেশের স্টার প্লেয়ার সাকিব আল হাসানের নিস্প্রভ পারফরমেন্সের পরে আইপিএলে তার সংশ্লিষ্টতা নিয়ে একই ধরনের প্রশ্ন উঠেছে। এমন অন্যান্য অভিযোগ থেকে সাকিবকে রক্ষা করতে হবে। বাংলাদেশে কৃকেট নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি কোনো বাংলাদেশি যেন আইপিএলে না খেলতে পারেন সে বিষয়ে আইন করতে হবে। সে ক্ষেত্রে সাকিবের মতো চৌকষ প্রতিভাশালী ব্যক্তি কি করবেন সেই প্রশ্নের উত্তর সাকিব ভক্তদের কাছে দিতে হবে। একটা উত্তর হতে পারে নিষিদ্ধ কৃকেটের শূন্যস্থান পূরণের জন্য আওয়ামী সরকার হাডুডু অথবা জব্বারের বলী খেলাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার সব দায়িত্ব সাকিবকে দিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে তাকে অধিষ্ঠিত করতে পারে। এই কাজে সাকিব তার সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশের বর্তমান এবং নবীন-প্রবীণ সব কৃকেটারদের নিতে পারেন বেতনভোগী কর্মকর্তা রূপে। মোট কথা, বাংলাদেশে কৃকেট নিষিদ্ধ হয়ে গেলে কোনো বাংলাদেশি কৃকেটারের চরিত্র হনন দেশে অথবা বিদেশে (যেমনটা রুবেলের চরিত্র হনন হয়েছে ইনডিয়াতে) আর সম্ভব হবে না।
৬
শুধু সাকিব-রুবেলের মতো কৃকেটাররাই নন কৃকেট উৎসাহী অন্যান্য বাংলাদেশি সেলিব্রেটিরাও জড়িয়ে পড়েছেন কৃকেট বিতর্কে এবং ইনডিয়ার সমালোচনায়। গায়ক আসিফ আকবর থেকে শুরু করে পপ মিউজিশিয়ান অভিনেতা, অভিনেত্রী, পলিটিশিয়ান প্রমুখ ওয়ার্ল্ড কাপ কৃকেটে ত্রুটিপূর্ণ আম্পায়ারিং ডিসিশন এবং বিসিসিআইয়ের অন্যায় প্রভাব সম্পর্কে ফেসবুক-টুইটারে তীব্র নিন্দা করেছেন। ১৯ মার্চেই ম্যাচ শেষের পর বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় আম্পায়ারদের নিন্দাসূচক মিছিল হয়। টিএসসির সামনে অনেক ছাত্র আইসিসির বিপক্ষে মিছিল করে। সোশাল নেটওয়ার্কে আইসিসিকে (ইন্টারন্যাশনাল কৃকেট কাউন্সিল) ইনডিয়ান কৃকেট কাউন্সিল রূপে উল্লেখ করা হয়। কেউ কেউ লেখেন, “১৫ জনের বিপক্ষে ১১ জনের লড়াই”, “আইসিসি ও ইনডিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের ১১ টাইগারের লড়াই”। এদের সবাইকে টেক্কা দিয়েছেন মেলবোর্ন স্টেডিয়ামে এক বাংলাদেশি সাপোর্টার। তিনি গ্যালারিতে একটা বড় ব্যানার উচু করে ধরেন যেখানে স্পষ্ট অক্ষরে আইসিসিকে লেখা ছিল, “ইনডিয়ান কৃকেট কাউন্সিল”। এই ব্যানার টিভি স্কৃনে দেখা যায়।
মানবজমিনের স্পোর্টস কমেন্টেটর তালহা বিন নজরুল রিপোর্ট করেন, “বাণিজ্যের কাছে হেরে গেল বাংলাদেশ। ... বাংলাদেশ আউট। বিশ্ব কাপ শেষ। লক্ষ্য পূরণ করেই দেশে ফিরছে বাংলাদেশ দল। তবুও চারদিকে ক্ষোভ আর হতাশা। সমালোচকদের ঝড় কৃকেট বিশ্বে। দায় চাপছে কৃকেটের শীর্ষ সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল কৃকেট কাউন্সিলের ওপর। অভিযোগ আইসিসির ইশারাতেই হচ্ছে সব। তাদের অর্থের লোভেই কৃকেট তার শ্রী হারাচ্ছে। বলি হচ্ছে ছোট ছোট দেশগুলো। আগামী বিশ্ব কাপে ছোটদের ছেটে ফেলার উদ্যোগও নিয়েছে তারা। আয়ারল্যান্ডের ক্যাপ্টেন তো দেশে ফেরার আগে বলেই গেছেন, আইসিসি কারো একার সম্পত্তি নয়। কৃকেট এখন আর কোনো নিছক খেলা নয়। কৃকেট আজ পণ্য। অর্থ আয়ের মেশিন। মানুষের আগ্রহকে পুজি করে কৃকেটের সব কিছু আজ বাণিজ্যকরণ হয়েছে। সোয়া একশ কোটি লোকের দেশ ইনডিয়া বিশ্বের সব বড় বড় প্রতিষ্ঠানের উত্তম বাজার। আর এই সুযোগটা তারা নিচ্ছে ভালোভাবেই।”
বাংলাদেশে এসব সেলিব্রেটি, কৃকেটার ও কৃকেট রাইটারদের বিরুদ্ধে সোশাল নেটওয়ার্কে সক্রিয় হয়ে উঠেছে ইনডিয়ার ডালমিয়া মেশিন ও তার ওয়ার্কাররা। এসব বিতর্কের বাইরে বাংলাদেশিদের রাখতে হলে বাংলাদেশে অচিরেই কৃকেট নিষিদ্ধ করতে হবে। ডালমিয়ার দাপুটে আক্রমণ থেকে আমাদের নাগরিকদের সুরক্ষার জন্যই কৃকেট নিষিদ্ধ করতে হবে।
৭
মজার কথা এই যে, আইসিসির বর্তমান সভাপতি একজন বাংলাদেশি আ হ ম মুস্তফা কামাল (লোটাস কামাল)। তিনি বলেছেন, “যা দেখলাম, আম্পায়াররা আমাদের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নিয়ে নেমেছিলেন। তাদের কোনো কোয়ালিটি নেই ... আইসিসি মানে ইনডিয়ান কৃকেট কাউন্সিল হয়ে গেছে ... আমি ইনডিয়ান কৃকেট কাউন্সিলের সভাপতি নই। পরবর্তী বোর্ড মিটিংয়ে আমি এটা তুলব। প্রয়োজনে আমি আইসিসির সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করব। এটা কোনোভাবে মেনে নেব না।”
এই বক্তব্যের পর আম্পায়ার ইয়েন গুল্ড ও আলিম দার লোটাস কামালের বিরুদ্ধে মানহানির মামলার হুমকি দিয়েছেন। এসব ঝামেলা থেকে লোটাস কামাল বেচে যাবেন যদি বাংলাদেশে কৃকেট নিষিদ্ধ হয়ে যায়। আইসিসিও সানন্দে তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করবে। সেখানেও লোটাস কামালকে কোনো ঝামেলা পোহাতে হবে না। তার যুক্তি হবে, কৃকেটের সম্মান বাচানোর জন্য তার দেশেই যখন কৃকেট নিষিদ্ধ হয়ে গেছে তখনই আইসিসি ও আম্পায়ারদের সম্মানের প্রশ্ন সেকেন্ডারি হয়ে গেছে।
তবে লোটাস কামাল যিনি একজন সফল ব্যবসায়ী, আওয়ামী এমপি ও পরিকল্পনা মন্ত্রী, তার কাছে বাংলাদেশিরা প্রশ্ন রাখতে পারেন। এক. এয়ারপোর্ট রোডে তার বহুতল বিশিষ্ট অফিস ভবনে সুবিশাল লাল নিয়ন ইংরেজি অক্ষরে LOTUS KAMAL (লোটাস কামাল) লেখা সাইনপ্লেট সেট করা ছিল। ওয়ান-ইলেভেনে জেনারেল মইন-ফখরুর ক্যু-র পর ওই সাইনপ্লেট সরিয়ে নেওয়া হয়। প্রশ্ন হলো, যিনি নিজের নাম এত বড় হরফে প্রকাশ্যে দেখানোতে আগ্রহী তিনি কেন বাংলাদেশি কৃকেট প্লেয়ারের জার্সিতে ইনডিয়ান SAHARA (সাহারা একটি অতি বিতর্কিত কম্পানি)-র লোগো ব্যবহারে রাজি হলেন? সেখানে তার নিজের নামটা (ছোট অক্ষরে) দিতে যদি আইসিসির নিষেধাজ্ঞা থেকে থাকত, তাহলে, প্রশ্ন দুই. তিনি কি BGMEA (বিজিএমইএ)-র লোগোর জন্য কাজ করতে পারতেন না? আফটার অল, বিজিএমই-র পণ্যের (গার্মেন্টস) বিশ্ব জুড়ে ডিমান্ড সবাই জানেন এবং সেটা ওয়ার্ল্ড কাপ কৃকেটে আরো ভালোভাবে প্রচার করা যেত। আর যদি, বিজিএমইএ-কে রাজি করানো না যেত, তাহলে রাষ্ট্রীয় ব্যাংক, সোনালি ব্যাংক তো ছিলই যাদের কাছে ৪,০০০ কোটি টাকা কিছুই নয় (আওয়ামী অর্থমন্ত্রীর মতে)! প্রশ্ন তিন. হলো, কেন, ইনডিয়া-বাংলাদেশ ম্যাচের দিনে অন্তত একজন বাংলাদেশি কৃকেট ধারাভাষ্যকার ইন্টারন্যাশনাল কমেন্টৃ বক্সে নিযুক্ত হননি? এই ভাষ্যকার হতে পারতেন কোনো রিটায়ার্ড বাংলাদেশি কৃকেট প্লেয়ার, লব্ধপ্রতিষ্ঠ ধারাভাষ্যকার আতাহার আলী খান অথবা স্পোর্টস কলামিস্ট আজম মাহমুদ, যিনি মালটিন্যাশনাল কম্পানিতে কাজ করেছেন এবং ভালো ইংরেজি জানেন। বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি বাংলাদেশি দর্শক এই প্রশ্নের উত্তর চান লোটাস কামালের কাছে। সর্বশেষ খবরে প্রকাশ, আইসিসির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আইসিসি সভাপতি লোটাস কামালেরই বিজয়ী ক্যাপ্টেনের হাতে ট্রফি তুলে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ফাইনাল ম্যাচের আগের রাতে সেই নিয়ম পাল্টে দেন আইসিসির চেয়ারম্যান নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন। একটি অনির্দিষ্ট বৈঠকে তিনি জানিয়ে দেন, বিজয়ী ক্যাপ্টেনের হাতে এবার ট্রফি তুলে দেবেন (হ্যা, পাঠকরা ঠিকই ধরেছেন একজন ইনডিয়ান) এবং সেটা তিনিই! তাই হয়। ট্রফি ছোয়া তো দূরের কথা মঞ্চেও স্থান হয়নি লোটাস কামালের। ইনডিয়ানদের কাছে পরম বন্ধু লোটাস কামাল হয়ে গেছেন বিশ্বাসঘাতক শত্রু ব্রুটাস কামাল!
বাংলাদেশে কৃকেট নিষিদ্ধ হয়ে গেলে তিনি এসব লজ্জা ও বিড়ম্বনা থেকে রক্ষা পাবেন।
বিরাট কোহলি - অানুশকা
৮
এবার ওয়ার্ল্ড কাপ কৃকেটে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশের আওয়ামী সরকার আশ্রিত অথবা সমর্থনপুষ্ট অথবা আওয়ামী সরকার কর্তৃক ভীত মিডিয়া বাংলাদেশের কয়েকটি টিভি চ্যানেল ও দৈনিক পত্রিকা। এরা ইনডিয়ার কোনো সমালোচনা করতে শঙ্কিত হয়েছে।
২০ মার্চ ২০১৫-তে যেসব পত্রিকা ইনডিয়ার পরাজয়ে বাংলাদেশিদের উল্লাসের খবর ছেপেছে তাদের মধ্যে কয়েকটি রিপোর্টের কিছু অংশ নিচে উদ্ধৃত হলো :
এবার ওয়ার্ল্ড কাপ কৃকেটে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশের আওয়ামী সরকার আশ্রিত অথবা সমর্থনপুষ্ট অথবা আওয়ামী সরকার কর্তৃক ভীত মিডিয়া বাংলাদেশের কয়েকটি টিভি চ্যানেল ও দৈনিক পত্রিকা। এরা ইনডিয়ার কোনো সমালোচনা করতে শঙ্কিত হয়েছে।
২০ মার্চ ২০১৫-তে যেসব পত্রিকা ইনডিয়ার পরাজয়ে বাংলাদেশিদের উল্লাসের খবর ছেপেছে তাদের মধ্যে কয়েকটি রিপোর্টের কিছু অংশ নিচে উদ্ধৃত হলো :
মানবজমিন : ঢাকায় অস্ট্রেলিয়া সমর্থকদের উল্লাস
ক্রিকেট বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতের পরাজয়ে উল্লাস করেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। কোয়ার্টার ফাইনালে বাজে আম্পায়ারিংয়ের শিকার হয়ে ভারতের কাছে হেরে যায় বাংলাদেশ। দর্শকদের ধারণা, ওই খেলায় ক্রিকেট বাণিজ্যের কাছে পরাজয় বরণ করেছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া ‘মওকা মওকা’ বিজ্ঞাপন দিয়ে বাংলাদেশিদের মনে আঘাত দেয় ভারতীয়রা। এ নিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরে দুই দেশের মধ্যে অনলাইনে পাল্টাপাল্টি আক্রমণ চালানো হয়। যে কারণে গতকালের ম্যাচে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের পূর্ণ সমর্থন ছিল অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে।
সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারতের পরাজয়ে আনন্দ-উল্লাস করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ভারতের পরাজয়ের পরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে ভারত বিরোধী মিছিল বের করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এসব খ- খ- মিছিল জড়ো হয় টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে। পরে জুতা প্রদর্শন করে ভারতের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করে শিক্ষার্থীরা। এসময় ভারত ভুয়া বলে স্লোগান দিতে থাকে তারা। অনেকে মাথায় বাধেন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। মিছিলে শামিল হওয়া আমিনুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশকে ষড়যন্ত্র করে হারিয়ে দিয়েছে ভারত ও আইসিসি। যার শিক্ষা আজ তারা পেয়েছে। এ জয় শুধু অস্ট্রেলিয়ার নয়, এ জয় ক্রিকেটেরও। এদিকে ভারতের পরাজয়ে ফেসবুকেও ঝড় তুলেছে শিক্ষার্থীরা। নতুন নতুন ‘মওকা মওকা’ বিজ্ঞাপন তৈরি করে ছড়িয়ে দিয়েছে তারা।
ভারতের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়া জিতলেও মনে হচ্ছে এ বিজয় যেন বাংলাদেশের। একই সঙ্গে আইসিসি ও ভারত বিরোধী বিভিন্ন স্লোগানসহ জুতা মিছিল করেছে তারা। এর আগে কখনও বাংলাদেশের মানুষ এভাবে অস্ট্রেলিয়াকে সমর্থন করেনি। কোয়ার্টার ফাইনালে মাশরাফিদের আম্পায়ার দিয়ে হারানোর প্রতিবাদ হিসেবে বাংলাদেশের মানুষ ভারতের হার কামনা করেছে। সমর্থন দিয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। সকালে খেলা শুরু হওয়ার পর থেকে ঢাকার অলিগলিতে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা আগ্রহ সহকারে পুরো খেলা দেখেছেন। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ের সময় দর্শকদের উল্লাস দেখে মনে হয়েছে বাংলাদেশ দল ব্যাট করছে। প্রতিটি চার-ছয়ের মারে আনন্দে হাততালি দিয়েছে। অন্যদিকে ভারতের প্রতিটি উইকেট পতনের সময় উল্লাস করেছে ক্রিকেটপ্রেমীরা। ভারতের পরাজয়ে সোশাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় তোলে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। সামহোয়ার ইন ব্লগে চাটগাইয়া জাবেদ লেখেন, ‘আমাদের কান্নার দিনে তোমরা হেসেছিলে, আজ তোমরা যতই কাদবে আমাদের ততই আনন্দ...মুহাহাহা...কাদো ইন্ডিয়া কাদো, হাসো বাংলাদেশ হাসো।’
ক্রিকেট বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতের পরাজয়ে উল্লাস করেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। কোয়ার্টার ফাইনালে বাজে আম্পায়ারিংয়ের শিকার হয়ে ভারতের কাছে হেরে যায় বাংলাদেশ। দর্শকদের ধারণা, ওই খেলায় ক্রিকেট বাণিজ্যের কাছে পরাজয় বরণ করেছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া ‘মওকা মওকা’ বিজ্ঞাপন দিয়ে বাংলাদেশিদের মনে আঘাত দেয় ভারতীয়রা। এ নিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরে দুই দেশের মধ্যে অনলাইনে পাল্টাপাল্টি আক্রমণ চালানো হয়। যে কারণে গতকালের ম্যাচে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের পূর্ণ সমর্থন ছিল অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে।
সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারতের পরাজয়ে আনন্দ-উল্লাস করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ভারতের পরাজয়ের পরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে ভারত বিরোধী মিছিল বের করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এসব খ- খ- মিছিল জড়ো হয় টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে। পরে জুতা প্রদর্শন করে ভারতের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করে শিক্ষার্থীরা। এসময় ভারত ভুয়া বলে স্লোগান দিতে থাকে তারা। অনেকে মাথায় বাধেন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। মিছিলে শামিল হওয়া আমিনুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশকে ষড়যন্ত্র করে হারিয়ে দিয়েছে ভারত ও আইসিসি। যার শিক্ষা আজ তারা পেয়েছে। এ জয় শুধু অস্ট্রেলিয়ার নয়, এ জয় ক্রিকেটেরও। এদিকে ভারতের পরাজয়ে ফেসবুকেও ঝড় তুলেছে শিক্ষার্থীরা। নতুন নতুন ‘মওকা মওকা’ বিজ্ঞাপন তৈরি করে ছড়িয়ে দিয়েছে তারা।
ভারতের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়া জিতলেও মনে হচ্ছে এ বিজয় যেন বাংলাদেশের। একই সঙ্গে আইসিসি ও ভারত বিরোধী বিভিন্ন স্লোগানসহ জুতা মিছিল করেছে তারা। এর আগে কখনও বাংলাদেশের মানুষ এভাবে অস্ট্রেলিয়াকে সমর্থন করেনি। কোয়ার্টার ফাইনালে মাশরাফিদের আম্পায়ার দিয়ে হারানোর প্রতিবাদ হিসেবে বাংলাদেশের মানুষ ভারতের হার কামনা করেছে। সমর্থন দিয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। সকালে খেলা শুরু হওয়ার পর থেকে ঢাকার অলিগলিতে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা আগ্রহ সহকারে পুরো খেলা দেখেছেন। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ের সময় দর্শকদের উল্লাস দেখে মনে হয়েছে বাংলাদেশ দল ব্যাট করছে। প্রতিটি চার-ছয়ের মারে আনন্দে হাততালি দিয়েছে। অন্যদিকে ভারতের প্রতিটি উইকেট পতনের সময় উল্লাস করেছে ক্রিকেটপ্রেমীরা। ভারতের পরাজয়ে সোশাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় তোলে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। সামহোয়ার ইন ব্লগে চাটগাইয়া জাবেদ লেখেন, ‘আমাদের কান্নার দিনে তোমরা হেসেছিলে, আজ তোমরা যতই কাদবে আমাদের ততই আনন্দ...মুহাহাহা...কাদো ইন্ডিয়া কাদো, হাসো বাংলাদেশ হাসো।’
যুগান্তর : ভারতের হারে টিএসসিতে আনন্দ-উল্লাস
বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ভারতের হারে টিএসসিতে আনন্দ-উল্লাস আর ক্ষোভে ফেটে পড়েছে শয়ে শয়ে ক্রিকেটভক্ত। কোয়ার্টার ফাইনালে পক্ষপাতদুষ্ট আম্পায়ারিংয়ের কারণে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের পরাজয় থেকেই এ ক্ষোভ বলে জানান ক্রিকেটপ্রেমীরা। এ সময় তারা জুতা প্রদর্শন করে ভারত ও আইসিসি বিরোধী নানা স্লোগান দিতে থাকেন। বৃহস্পতিবার বিকালে ভারতের শেষ উইকেট পতনের সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে শত শত শিক্ষার্থী টিএসসির রাজু ভাস্কর্য চত্বরে জমায়েত হয়। এ সময় তারা ইন্ডিয়া ভুয়া, আইসিসি ভুয়া, আইসিসির দুই গালে জুতা মারো তালে তালে, আম্পায়ারদের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে, ক্রিকেট নিয়ে ষড়যন্ত্র চলবে না- চলবে না স্লোগান দেয়। বিক্ষুব্ধ ক্রিকেটপ্রেমীদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, গো টু হোম ইন্ডিয়া, হেরেছে ইন্ডিয়া জিতেছে বাংলাদেশ, ক্রিকেটের জয়ে আনন্দিত আমরাও, আইসিসি হেরেছে জিতেছে ক্রিকেট। বঙ্গবন্ধু হলের সংগীত বিভাগের ছাত্র বারিকুল ইসলাম বাধন বলেন, ‘আইসিসি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাংলাদেশকে হারিয়ে দিয়েছে, ইন্ডিয়াকে জিতিয়েছে। কিন্তু সেমিফাইনালের মাধ্যমে প্রমাণ হলো অন্যায় টিকে থাকে না।’ জসীমউদ্দীন হলের ছাত্র আল আমিন বলেন, ‘ইন্ডিয়ার লজ্জাজনক হারই প্রমাণ করে সেদিন বাংলাদেশকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হারিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’ জগন্নাথ হলের ছাত্র জয়জিৎ দত্ত বলেন, ‘কোটি বাঙালির আবেগ নিয়ে যারা খেলে, তাদের এমন লজ্জাজনক হারই মানায়।’ ফজিলাতুননেসা মুজিব হলের ছাত্রী সুমি উর্মি বলেন, ‘প্রতারণা করে বেশি দিন টিকে থাকা যায় না। ইন্ডিয়া-অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট ম্যাচ তাই প্রমাণ করে।’
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ভারতের হার নিয়ে বিভিন্নজন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন। ভারতের হারকে তারা ‘প্রকৃতির প্রতিশোধ’ (ন্যাচারাল জাস্টিস) বলে উল্লেখ করেছেন।
বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ভারতের হারে টিএসসিতে আনন্দ-উল্লাস আর ক্ষোভে ফেটে পড়েছে শয়ে শয়ে ক্রিকেটভক্ত। কোয়ার্টার ফাইনালে পক্ষপাতদুষ্ট আম্পায়ারিংয়ের কারণে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের পরাজয় থেকেই এ ক্ষোভ বলে জানান ক্রিকেটপ্রেমীরা। এ সময় তারা জুতা প্রদর্শন করে ভারত ও আইসিসি বিরোধী নানা স্লোগান দিতে থাকেন। বৃহস্পতিবার বিকালে ভারতের শেষ উইকেট পতনের সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে শত শত শিক্ষার্থী টিএসসির রাজু ভাস্কর্য চত্বরে জমায়েত হয়। এ সময় তারা ইন্ডিয়া ভুয়া, আইসিসি ভুয়া, আইসিসির দুই গালে জুতা মারো তালে তালে, আম্পায়ারদের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে, ক্রিকেট নিয়ে ষড়যন্ত্র চলবে না- চলবে না স্লোগান দেয়। বিক্ষুব্ধ ক্রিকেটপ্রেমীদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, গো টু হোম ইন্ডিয়া, হেরেছে ইন্ডিয়া জিতেছে বাংলাদেশ, ক্রিকেটের জয়ে আনন্দিত আমরাও, আইসিসি হেরেছে জিতেছে ক্রিকেট। বঙ্গবন্ধু হলের সংগীত বিভাগের ছাত্র বারিকুল ইসলাম বাধন বলেন, ‘আইসিসি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাংলাদেশকে হারিয়ে দিয়েছে, ইন্ডিয়াকে জিতিয়েছে। কিন্তু সেমিফাইনালের মাধ্যমে প্রমাণ হলো অন্যায় টিকে থাকে না।’ জসীমউদ্দীন হলের ছাত্র আল আমিন বলেন, ‘ইন্ডিয়ার লজ্জাজনক হারই প্রমাণ করে সেদিন বাংলাদেশকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হারিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’ জগন্নাথ হলের ছাত্র জয়জিৎ দত্ত বলেন, ‘কোটি বাঙালির আবেগ নিয়ে যারা খেলে, তাদের এমন লজ্জাজনক হারই মানায়।’ ফজিলাতুননেসা মুজিব হলের ছাত্রী সুমি উর্মি বলেন, ‘প্রতারণা করে বেশি দিন টিকে থাকা যায় না। ইন্ডিয়া-অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট ম্যাচ তাই প্রমাণ করে।’
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ভারতের হার নিয়ে বিভিন্নজন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন। ভারতের হারকে তারা ‘প্রকৃতির প্রতিশোধ’ (ন্যাচারাল জাস্টিস) বলে উল্লেখ করেছেন।
কালের কণ্ঠ : অস্ট্রেলিয়ার পাশে ছিল বাংলাদেশও
সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডের বাইরে টেলিভিশন ক্যামেরার সামনে আনন্দঘন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছিলেন বাংলাদেশিরাও! সেমিফাইনাল থেকেই ভারতের বিদায় নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের অভিব্যক্তিই বলে দিচ্ছিল যে এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার পাশে ছিল বাংলাদেশও। নীরব নয়, সরব সমর্থনই জানিয়ে গেছেন বাংলাদেশিরা। ৫৬ হাজার বর্গমাইলে যেমন, দূর প্রবাসেও তেমন।
সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডের বাইরে টেলিভিশন ক্যামেরার সামনে আনন্দঘন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছিলেন বাংলাদেশিরাও! সেমিফাইনাল থেকেই ভারতের বিদায় নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের অভিব্যক্তিই বলে দিচ্ছিল যে এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার পাশে ছিল বাংলাদেশও। নীরব নয়, সরব সমর্থনই জানিয়ে গেছেন বাংলাদেশিরা। ৫৬ হাজার বর্গমাইলে যেমন, দূর প্রবাসেও তেমন।
দেখে বোঝারই উপায় ছিল না যে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ অভিযান শেষ হয়ে গেছে আরো আগেই। রাস্তার পাশের দোকানের টিভিতে খেলা দেখতে দাড়িয়ে যাওয়া পথচলতি মানুষের জটলাও গতকাল কম চোখে পড়েনি। কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত কেবল নিজ দেশের ব্যাটসম্যানদের মারা চার-ছক্কায়ই গলি থেকে রাজপথে উল্লাসের ধ্বনি ছড়িয়ে পড়তে শোনা গেছে। প্রতিপক্ষের একেকটি উইকেট পড়েছে তো সমবেত কলরবে মুখর হয়েছে সারা দেশ। ... ক্ষোভের জেরেই কাল পুরো বাংলাদেশ ছিল অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে। ভারতের হার কামনায় একজোট হওয়াটা দিনের শেষকে ভাসিয়েছে অনাবিল আনন্দে। যার ঢেউ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম থেকে শুরু করে সর্বত্র আছড়ে পড়েছে।
সাবেক ক্যাপ্টেন রকিবুল হাসান বলেন, “ম্যাচের আম্পায়ারিং যে কেউ সহজভাবে নেয়নি, সেটি আরো স্পষ্ট হয়ে গেল। আম্পায়ার মনোনয়ন দেয় আইসিসি আর আইসিসিকে নিয়ন্ত্রণ করে ভারত, এ ধারণাটা এখন সর্বসাধারণে বদ্ধমূল হয়ে গেছে। তাই প্রযুক্তির সুবিধা থাকার পরও সেদিন এর সাহায্য না নেওয়ার ব্যাপারটি নিশ্চয়ই কারো অঙ্গুলি নির্দেশে হয়েছে, এমন ধারণাও জন্ম নিয়েছে মানুষের মধ্যে। সেটির প্রভাবেই ভারতের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে অস্ট্রেলিয়াকে অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়ে গেছে এ দেশের মানুষ।”
সেই সমর্থনের পাল্লা এত ভারী ছিল যে, ভারতের একটি করে উইকেট গেছে আর উল্লাসে ফেটে পড়েছে বাংলাদেশ।
সাবেক ক্যাপ্টেন রকিবুল হাসান বলেন, “ম্যাচের আম্পায়ারিং যে কেউ সহজভাবে নেয়নি, সেটি আরো স্পষ্ট হয়ে গেল। আম্পায়ার মনোনয়ন দেয় আইসিসি আর আইসিসিকে নিয়ন্ত্রণ করে ভারত, এ ধারণাটা এখন সর্বসাধারণে বদ্ধমূল হয়ে গেছে। তাই প্রযুক্তির সুবিধা থাকার পরও সেদিন এর সাহায্য না নেওয়ার ব্যাপারটি নিশ্চয়ই কারো অঙ্গুলি নির্দেশে হয়েছে, এমন ধারণাও জন্ম নিয়েছে মানুষের মধ্যে। সেটির প্রভাবেই ভারতের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে অস্ট্রেলিয়াকে অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়ে গেছে এ দেশের মানুষ।”
সেই সমর্থনের পাল্লা এত ভারী ছিল যে, ভারতের একটি করে উইকেট গেছে আর উল্লাসে ফেটে পড়েছে বাংলাদেশ।
সমকাল : অসিদের জয়ে টিএসসিতে আনন্দ মিছিল
বাংলাদেশের বিপক্ষে বিতর্কিত আম্পায়ারিংয়ের কারণে লাল-সবুজ সমর্থকদের মনে ভারত সম্পর্কে এক ধরনের ক্ষোভ ছিলই। সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ভারত হারার পর সে ক্ষোভই আনন্দ-উল্লাসে রূপ নিয়েছে, যার প্রকাশ দেখা গেল টিএসসির আনন্দ মিছিলে। সিডনি স্পোর্টস গ্রাউন্ডে ভারতকে ৯৫ রানে হারিয়ে দেয় অস্ট্রেলিয়া। ভারতের পরাজয় নিশ্চিত হওয়ার পরপরই বাংলাদেশি সমর্থকদের মধ্যে খুশির ঢেউ বয়ে যায়। সবচেয়ে বেশি উচ্ছ্বাস দেখা যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরে। শত শত ছাত্রের সঙ্গে সাধারণ জনতাও ভারত হারার আনন্দ মিছিলে যোগ দেন। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে মাশরাফিদের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হওয়ার পর টিএসসি এভাবেই উৎসব মুখর হয়ে উঠেছিল। শুধু টিএসসি নয়, ভারতের হারে দেশের বিভিন্ন জায়গায়ও আনন্দ মিছিল হয়েছে। টিএসসির মিছিলকারীদের হাতে ‘গো হোম ইন্ডিয়া। নাউ গিভ ইট ব্যাক’ লেখা প্ল্যাকার্ড ছিল।
বাংলাদেশের বিপক্ষে বিতর্কিত আম্পায়ারিংয়ের কারণে লাল-সবুজ সমর্থকদের মনে ভারত সম্পর্কে এক ধরনের ক্ষোভ ছিলই। সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ভারত হারার পর সে ক্ষোভই আনন্দ-উল্লাসে রূপ নিয়েছে, যার প্রকাশ দেখা গেল টিএসসির আনন্দ মিছিলে। সিডনি স্পোর্টস গ্রাউন্ডে ভারতকে ৯৫ রানে হারিয়ে দেয় অস্ট্রেলিয়া। ভারতের পরাজয় নিশ্চিত হওয়ার পরপরই বাংলাদেশি সমর্থকদের মধ্যে খুশির ঢেউ বয়ে যায়। সবচেয়ে বেশি উচ্ছ্বাস দেখা যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরে। শত শত ছাত্রের সঙ্গে সাধারণ জনতাও ভারত হারার আনন্দ মিছিলে যোগ দেন। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে মাশরাফিদের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হওয়ার পর টিএসসি এভাবেই উৎসব মুখর হয়ে উঠেছিল। শুধু টিএসসি নয়, ভারতের হারে দেশের বিভিন্ন জায়গায়ও আনন্দ মিছিল হয়েছে। টিএসসির মিছিলকারীদের হাতে ‘গো হোম ইন্ডিয়া। নাউ গিভ ইট ব্যাক’ লেখা প্ল্যাকার্ড ছিল।
নয়া দিগন্ত : ভারতের পরাজয়ে সামাজিক মাধ্যমে ঝড়
সকালে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা যখন একের পর এক চার, ছয় মারছিলেন তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো থেকে শোনা যাচ্ছিল গগনবিদারী চিৎকার। যেমনটি সাধারণত বাংলাদেশ দলের খেলার সময়ই দেখা যায়। আর বিকেলে যখন খেলাটা শেষ হলো, তখন সবাই চলে এলেন টিএসসিতে। মেতে উঠলেন আনন্দ উৎসবে।
গত ১৯ মার্চ কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশের ম্যাচটার ক্ষত এখনো শুকায়নি বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের। আম্পায়ারের সেই ‘নির্লজ্জ পক্ষপাতিত্ব’ আর আইসিসির বিতর্কিত অবস্থান এখনো সবাইকে পীড়া দেয়। শুধু বাংলাদেশের মানুষই নয়, সারা বিশ্বের ক্রিকেটের বিখ্যাত সব রথী-মহারথীরাও সমালোচনায় সরব ছিলেন ম্যাচটি নিয়ে।
সেই ভারতই যখন সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি তখন দেশের জনগণ অপেক্ষায় ছিলেন ভারতের লজ্জাজনক পরাজয় দেখার। আর আজ বিকেলে সেটি যখন নিশ্চিত হলো সারা দেশে সবাই মেতে উঠলেন আনন্দে। ভারতের পরাজয়ে আজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছিল ঝড়। সেখানে সবাই এক হাত নিয়েছেন আইসিসি এবং ভারতীয় ক্রিকেট দলের।
আজকের ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুক কয়েক দিন ধরেই ছিল সরব। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ওই ম্যাচে বিতর্কিত যা হয়েছিল তা তুলে ধরে এই ম্যাচটি ঘিরে স্ট্যাটাসে সরগরম ছিল ফেসবুক। আজ সকালে খেলা শুরুর পর একটু একটু করে অস্ট্রেলিয়া যখন জয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল ফেসবুকের স্ট্যাটাসও এক এক করে আপডেট হচ্ছিল। আর বিকেলে অস্ট্রেলিয়ার জয় যখন নিশ্চিত হলো বাংলাদেশের ক্রিকেট পাগল মানুষ তাদের যত ক্ষোভ, হতাশা সব যেন ঢেলে দিলেন ফেসবুকে। খেলা সুষ্ঠুভাবে হলে বাংলাদেশ ওইদিন জিতত বলেও অনেকে মন্তব্য করেছেন তাদের ফেসবুক স্ট্যাটাসে।
শুধু সাধারণ মানুষই নয় বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বরাও ফেসবুকে তাদের অভিব্যক্তির কথা তুলে ধরেছেন। জনপ্রিয় গায়ক আসিফ আকবর তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘স্যালিউট এবং গভীর শ্রদ্ধা আমাদের মহান শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের। ১৯ মার্চ থেকে বুকে একটা পাহাড় দুঃখ ক্ষোভ জমে ছিল। ধন্যবাদ অস্ট্রেলিয়া। সবাইকে মহান স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা, ভালোবাসা, অভিনন্দন। সাবাস বাংলাদেশ।’
খেলায় অস্ট্রেলিয়ার জয়ের সাথে সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে আসেন কয়েকশ ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ। তারা সেখানে জড়ো হয়ে আইসিসি এবং ভারতীয় ক্রিকেট দলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় অনেকে হাতে জুতা নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
সকালে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা যখন একের পর এক চার, ছয় মারছিলেন তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো থেকে শোনা যাচ্ছিল গগনবিদারী চিৎকার। যেমনটি সাধারণত বাংলাদেশ দলের খেলার সময়ই দেখা যায়। আর বিকেলে যখন খেলাটা শেষ হলো, তখন সবাই চলে এলেন টিএসসিতে। মেতে উঠলেন আনন্দ উৎসবে।
গত ১৯ মার্চ কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশের ম্যাচটার ক্ষত এখনো শুকায়নি বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের। আম্পায়ারের সেই ‘নির্লজ্জ পক্ষপাতিত্ব’ আর আইসিসির বিতর্কিত অবস্থান এখনো সবাইকে পীড়া দেয়। শুধু বাংলাদেশের মানুষই নয়, সারা বিশ্বের ক্রিকেটের বিখ্যাত সব রথী-মহারথীরাও সমালোচনায় সরব ছিলেন ম্যাচটি নিয়ে।
সেই ভারতই যখন সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি তখন দেশের জনগণ অপেক্ষায় ছিলেন ভারতের লজ্জাজনক পরাজয় দেখার। আর আজ বিকেলে সেটি যখন নিশ্চিত হলো সারা দেশে সবাই মেতে উঠলেন আনন্দে। ভারতের পরাজয়ে আজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছিল ঝড়। সেখানে সবাই এক হাত নিয়েছেন আইসিসি এবং ভারতীয় ক্রিকেট দলের।
আজকের ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুক কয়েক দিন ধরেই ছিল সরব। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ওই ম্যাচে বিতর্কিত যা হয়েছিল তা তুলে ধরে এই ম্যাচটি ঘিরে স্ট্যাটাসে সরগরম ছিল ফেসবুক। আজ সকালে খেলা শুরুর পর একটু একটু করে অস্ট্রেলিয়া যখন জয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল ফেসবুকের স্ট্যাটাসও এক এক করে আপডেট হচ্ছিল। আর বিকেলে অস্ট্রেলিয়ার জয় যখন নিশ্চিত হলো বাংলাদেশের ক্রিকেট পাগল মানুষ তাদের যত ক্ষোভ, হতাশা সব যেন ঢেলে দিলেন ফেসবুকে। খেলা সুষ্ঠুভাবে হলে বাংলাদেশ ওইদিন জিতত বলেও অনেকে মন্তব্য করেছেন তাদের ফেসবুক স্ট্যাটাসে।
শুধু সাধারণ মানুষই নয় বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বরাও ফেসবুকে তাদের অভিব্যক্তির কথা তুলে ধরেছেন। জনপ্রিয় গায়ক আসিফ আকবর তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘স্যালিউট এবং গভীর শ্রদ্ধা আমাদের মহান শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের। ১৯ মার্চ থেকে বুকে একটা পাহাড় দুঃখ ক্ষোভ জমে ছিল। ধন্যবাদ অস্ট্রেলিয়া। সবাইকে মহান স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা, ভালোবাসা, অভিনন্দন। সাবাস বাংলাদেশ।’
খেলায় অস্ট্রেলিয়ার জয়ের সাথে সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে আসেন কয়েকশ ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ। তারা সেখানে জড়ো হয়ে আইসিসি এবং ভারতীয় ক্রিকেট দলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় অনেকে হাতে জুতা নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
টিএসসিতে ছাত্রদের উল্লাস এবং সারা বাংলাদেশে সাধারণ কৃকেটপ্রেমীদের উল্লাস যেসব পত্রিকার নজরে পড়েনি তাদের মধ্যে ছিল, প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, ইত্তেফাক ও বাংলাদেশ প্রতিদিন।
আওয়ামী ভীতি অথবা ভারত প্রীতি অথবা উভয়ই কিছু সাংবাদিকদের যে কিভাবে গ্রাস করেছে সেটা ছাত্র-ছাত্রীরা হয়তো বুঝতে পারবে। আর সে কারণেই কৃকেট বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করতে হবে। এসব ছাত্ররা মিডিয়ার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশে বদ্ধপরিকর হলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে। তারা হয়তো এটাও লক্ষ্য করেছে ২৬ মার্চ রাতে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলও বাংলাদেশিদের উল্লাসের খবর চেপে গেছে। যে গুটিকয়েক টিভি চ্যানেল এই খবরটি দেখিয়েছিল তাদের মধ্যে ছিল বাংলাভিশন ও আরটিভি।
আওয়ামী ভীতি অথবা ভারত প্রীতি অথবা উভয়ই কিছু সাংবাদিকদের যে কিভাবে গ্রাস করেছে সেটা ছাত্র-ছাত্রীরা হয়তো বুঝতে পারবে। আর সে কারণেই কৃকেট বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করতে হবে। এসব ছাত্ররা মিডিয়ার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশে বদ্ধপরিকর হলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে। তারা হয়তো এটাও লক্ষ্য করেছে ২৬ মার্চ রাতে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলও বাংলাদেশিদের উল্লাসের খবর চেপে গেছে। যে গুটিকয়েক টিভি চ্যানেল এই খবরটি দেখিয়েছিল তাদের মধ্যে ছিল বাংলাভিশন ও আরটিভি।
৯
বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ তথা বাংলাদেশের অনেকের মধ্যেই কৃকেট ওয়ার্ল্ড কাপকে কেন্দ্র করে যে ইনডিয়া বিরোধিতা প্রকাশ্যে দেখা গেছে সেটা আওয়ামী সরকার, আওয়ামী পৃষ্ঠপোষক সুশীল সমাজ ও অনুগৃহীত মিডিয়ার গত কয়েক বছরের ইনডিয়া ফ্রেন্ডলি অনুসৃত নীতিমালাকে বিপাকে ফিলে দিয়েছে। ভবিষ্যতে ছাত্ররা যদি বিডিআর বিপর্যয়, ফেলানী হত্যাসহ বিএসএফ কর্তৃক বর্ডারে হত্যা, বিনা মাশুলে ট্রানজিট ফ্যাসালিটি এবং সুজাতা সিংয়ের মতো বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রকাশ্য পক্ষপাতিত্বের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয় তাহলে সেটা সামলানো যাবে না। তাই ছাত্র সমাজের মন থেকে চিরতরে কৃকেট দূর করতে হবে। সুতরাং অবিলম্বে বাংলাদেশে কৃকেট নিষিদ্ধ করতে হবে।
বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ তথা বাংলাদেশের অনেকের মধ্যেই কৃকেট ওয়ার্ল্ড কাপকে কেন্দ্র করে যে ইনডিয়া বিরোধিতা প্রকাশ্যে দেখা গেছে সেটা আওয়ামী সরকার, আওয়ামী পৃষ্ঠপোষক সুশীল সমাজ ও অনুগৃহীত মিডিয়ার গত কয়েক বছরের ইনডিয়া ফ্রেন্ডলি অনুসৃত নীতিমালাকে বিপাকে ফিলে দিয়েছে। ভবিষ্যতে ছাত্ররা যদি বিডিআর বিপর্যয়, ফেলানী হত্যাসহ বিএসএফ কর্তৃক বর্ডারে হত্যা, বিনা মাশুলে ট্রানজিট ফ্যাসালিটি এবং সুজাতা সিংয়ের মতো বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রকাশ্য পক্ষপাতিত্বের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয় তাহলে সেটা সামলানো যাবে না। তাই ছাত্র সমাজের মন থেকে চিরতরে কৃকেট দূর করতে হবে। সুতরাং অবিলম্বে বাংলাদেশে কৃকেট নিষিদ্ধ করতে হবে।
১০
২৬ মার্চ ২০১৫-তে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ প্রতিদিন-এ একটি উদ্বেগজনক খবর ছিল। পড়ুন :
২৬ মার্চ ২০১৫-তে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ প্রতিদিন-এ একটি উদ্বেগজনক খবর ছিল। পড়ুন :
জাতীয় স্মৃতিসৌধে এবার ঢল ছিল না
“প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবসে মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের প্রতি স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে লাখো জনতার ঢল থাকলেও এবার তেমনটি লক্ষ্য করা যায়নি। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, জঙ্গি তৎপরতায় জনমনে আতঙ্কের কারণেই এমনটি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সকালে প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় স্মৃতিসৌধ। এরপর একে এক বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ফুল দিতে আসেন। তবে জনসাধারণের সমাগম অন্যান্যবারের তুলনায় কম ছিল। শ্রদ্ধা জানাতে আসা অধিকাংশ সংগঠনের সঙ্গে তেমন সদস্যের উপস্থিতি দেখা যায়নি। অন্য বছরগুলোতে প্রতিটি সংগঠনের সঙ্গে শতাধিক সদস্যের উপস্থিতি দেখা গেলেও এবার ১০/২০ জনের বেশি সদস্য লক্ষ্য করা যায়নি।”
আসলে ২৬ মার্চে এবার ঢল ছিল টিভি সেটের সামনে যে খবরটি এই পত্রিকায় উপেক্ষিত হয়েছে। এই একই পত্রিকায় ১৭ মার্চ ২০১৫-তে (শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে) প্রকাশিত চার ইঞ্চি দুই কলাম ব্যাপী একটি বিজ্ঞাপন ছিল ভয়াবহ। এই বিজ্ঞাপনে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সংবলিত, তার ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটি ২৫% ডিসকাউন্টে বিক্রির ঘোষণা ছিল দাম ৫২৫ টাকার পরিবর্তে ৩৯৪ টাকা। বিজ্ঞাপনটি দিয়েছিল রকমারি.কম।
স্বাধীনতা দিবস এবং বঙ্গবন্ধুর অবমূল্যায়ন রুখতে হলে এখনই বাংলাদেশে কৃকেট নিষিদ্ধ করতে হবে।
ভবিষ্যতে যদি কৃকেট ওয়ার্ল্ড কাপ ফাইনালে আবার কোনো ইনডিয়া-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের তারিখ ১৫ আগস্টে অর্থাৎ জাতীয় শোক দিবসে পড়ে যায়, জাতিকে সেই ভয়াবহ সম্ভাবনামুক্ত রাখতে হলে অবিলম্বে বাংলাদেশকে কৃকেটমুক্ত করতেই হবে।
১
কৃকেট নিষিদ্ধ করণের এই ১০টি যুক্তির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কৃকেটপ্রেমীরা অবশ্যই বলতে পারেন যে, এবার কৃকেট ওয়ার্ল্ড কাপে টিম রূপে বাংলাদেশ প্রশসনীয় নৈপুণ্য এবং অভূতপূর্ব দৃঢ়তা দেখিয়েছে। মাহমুদুল্লাহ, মুশফিক, রুবেলসহ টিমের প্রায় প্রত্যেকেই ভালো খেলেছেন। এই টিম সেমিফাইনালে যেতে পারলে কি ফল হতো সেটা অজানা রয়ে গেল।
তবে বাংলাদেশে কৃকেট চালু রাখার সবচেয়ে বড় যুক্তি হচ্ছে প্রেম-ভালোবাসার বিশাল বাহন রূপে এবার ওই খেলাটি বিশ্ব স্বীকৃতি পেয়েছে। ইনডিয়ান ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি ও তার বান্ধবী ইনডিয়ান মুভি স্টার আনুশকা শর্মার খবর ও ছবি টুর্নামেন্ট শেষেও প্রাধান্য পেয়েছে।
ইন্টারনেট সূত্রে জানা গেছে, বিরাট কোহলির ব্যর্থতায় বিরাট হতাশ হয়েছেন আনুশকা শর্মা। আনুশকা তার আনুগত্য পরিবর্তন করতে চেয়েছেন। তিনি আইসিসিকে ফোন করে জানতে চেয়েছেন রুবেল-এর ফোন নাম্বার!
স্বাধীনতা দিবস এবং বঙ্গবন্ধুর অবমূল্যায়ন রুখতে হলে এখনই বাংলাদেশে কৃকেট নিষিদ্ধ করতে হবে।
ভবিষ্যতে যদি কৃকেট ওয়ার্ল্ড কাপ ফাইনালে আবার কোনো ইনডিয়া-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের তারিখ ১৫ আগস্টে অর্থাৎ জাতীয় শোক দিবসে পড়ে যায়, জাতিকে সেই ভয়াবহ সম্ভাবনামুক্ত রাখতে হলে অবিলম্বে বাংলাদেশকে কৃকেটমুক্ত করতেই হবে।
১
কৃকেট নিষিদ্ধ করণের এই ১০টি যুক্তির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কৃকেটপ্রেমীরা অবশ্যই বলতে পারেন যে, এবার কৃকেট ওয়ার্ল্ড কাপে টিম রূপে বাংলাদেশ প্রশসনীয় নৈপুণ্য এবং অভূতপূর্ব দৃঢ়তা দেখিয়েছে। মাহমুদুল্লাহ, মুশফিক, রুবেলসহ টিমের প্রায় প্রত্যেকেই ভালো খেলেছেন। এই টিম সেমিফাইনালে যেতে পারলে কি ফল হতো সেটা অজানা রয়ে গেল।
তবে বাংলাদেশে কৃকেট চালু রাখার সবচেয়ে বড় যুক্তি হচ্ছে প্রেম-ভালোবাসার বিশাল বাহন রূপে এবার ওই খেলাটি বিশ্ব স্বীকৃতি পেয়েছে। ইনডিয়ান ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি ও তার বান্ধবী ইনডিয়ান মুভি স্টার আনুশকা শর্মার খবর ও ছবি টুর্নামেন্ট শেষেও প্রাধান্য পেয়েছে।
ইন্টারনেট সূত্রে জানা গেছে, বিরাট কোহলির ব্যর্থতায় বিরাট হতাশ হয়েছেন আনুশকা শর্মা। আনুশকা তার আনুগত্য পরিবর্তন করতে চেয়েছেন। তিনি আইসিসিকে ফোন করে জানতে চেয়েছেন রুবেল-এর ফোন নাম্বার!
৩০ মার্চ ২০১৫
শফিক রেহমান তার সাংবাদিক জীবনের যাত্রা শুরু করেন স্পোর্টস রিপোর্টার রূপে অধুনালুপ্ত দৈনিক ইনসাফ (১৯৫০) এবং স্পোর্টস এডিটর রূপে দৈনিক ইত্তেফাক (১৯৫৪-১৯৫৭)-তে। এরপরে তিনি বিবিসি বাংলা বিভাগ লন্ডন থেকে নিয়মিত স্পোর্টস নিউজ পরিবেশন করেন বহু বছর যাবত। ২০০৭-এ দৈনিক যায়যায়দিন-এর সম্পাদক রূপে তিনি শচিন টেন্ডুলকারকে পুরস্কৃত করেছিলেন। সম্পাদক
-
Comments
Post a Comment