মাহফুজকে গ্রেফতার করো। তার বিচার করো। এটা হুমকি নয়?
টকশোতে বিতর্ক স্বাভাবিক ঘটনা। যুক্তি-তর্কের বাইরে গিয়ে কাউকে খুশি করতে প্রতিপক্ষ আলোচককে ঘায়েল করার ঘটনা নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার। লাইভ অনুষ্ঠানে নেতায় নেতায় একে অপরের দিকে তেড়ে যাওয়া, চোখ তুলে নেয়ার হুমকি দেয়া এবং চেয়ার থেকে উঠে আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গির ঘটনা টিভিতে দর্শকরা দেখেছে। কিন্তু রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ মিডিয়ার নীতি-নির্ধারক স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব সম্পাদকরা যখন ওপরের কাউকে খুশি করতে বাস্তবতা বিবর্জিত তর্ক করেন, অফিসের সামনে বোমা বিস্ফোরণের পরও উদ্বিগ্ন না হয়ে মুচকি হেসে স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে চালিয়ে দেন, তখন দর্শকদের মধ্যে খটকা লাগে। বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে তোষামোদকারী এবং দলদাস নেতানেত্রীদের মতো মিডিয়া ব্যক্তিত্বরাও কী ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন, ম খা আলমলীগের ‘ঝাঁকুনি দিয়ে রানা প্লাজা ভেঙ্গে ফেলার’ মতো যুক্তি তুলে ধরে কারো ধন্য হতে চেষ্টা করছেন? বিনোদনমূলক না হলেও কয়েক বছরে টিভির টকশো বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নানা নামে আয়োজিত টকশো নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা ও বিতর্ক হচ্ছে। আলোচকদের ভাষার ব্যবহার, পক্ষপাতিত্ব, শব্দের প্রয়োগ, দলদাস আচরণের পরও গঠনমূলক আলোচনা হয় টকশোগুলোতে। বিভিন্ন দলের নেতারা যেমন টকশোতে গিয়ে নিজের দলের প্রতিনিধিত্ব করেন, যুক্তিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠে দলীয় প্রধানের অন্ধ ভক্তের মতো কথাবার্তা বলেন, তেমনি এসব অনুষ্ঠানে জনগণের মনের কথারও প্রতিফলন ঘটে। বর্তমানে গৃহপালিত বিরোধী দলের তোষণনীতিতে সংসদ গুরুত্বহীন হয়ে পড়ায় টকশোগুলোতে মানুষের সুখ-দুঃখ প্রত্যাশা প্রাপ্তি নিয়ে বিতর্ক হয়। যা দর্শকদের আগ্রহ বাড়িয়ে দেয় টকশোর প্রতি। দেশের ২৪টি টিভি চ্যানেলে প্রতিদিন শতাধিক টকশো হয়। নানা নামে আয়োজিত এসব টকশো’র অধিকাংশরই মূল বিষয় রাজনীতি। তবে গণমাধ্যম নিয়ে একটি টকশো হয়ে গেল ২৬ ফেব্রুয়ারীর রাতে একাত্তর টিভিতে। এ টকশো’র সবাই ছিলেন দেশের সুপ্রতিষ্ঠিত সম্পাদক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। সম্পাদক পরিষদের একটি বিবৃতিকে বিষয়বস্তু করে মূলতঃ এ টকশো’র আয়োজন করা হয়। সংগঠনটি এক বিবৃতিতে দেশের ‘সংবাদপত্রসহ সকল প্রচার মাধ্যমের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে।’ সম্পাদক পরিষদের বিবৃতিকে দুর্ভাগ্যজনক হিসেবে অভিহিত করে পরের দিন তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, সম্পাদক পরিষদের নামে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সম্পর্কে বিবৃতি বাস্তবতা বিবর্জিত, সত্যের অপলাপ, পক্ষপাতমূলক, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। সম্পাদক পরিষদ ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের বিপরীতমুখী বিবৃতিকে ‘উপজীব্য’ করে একাত্তর টিভিতে ‘সংযোগ একাত্তর’ টকশোতে হাজির করা হয় ৭জন স্বনামধন্য সম্পাদককে। সম্পাদক পরিষদের সভাপতি গোলাম সারওয়ার (সমকাল, বিদেশে অবস্থানরত), সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ আনাম (ডেইলি স্টার), রিয়াজউদ্দিন আহমদ (নিউজ টুডে), তৌফিক ইমরোজ খালেদী (বিডি নিউজ ২৪.কম), খন্দকার মুনীরুজ্জামান (ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, সংবাদ), নাইমূল ইসলাম খান (আমাদের অর্থনীতি), শ্যামল দত্ত (ভোরের কাগজ)। নবনিতা চৌধুরীর উপস্থাপনায় টকশোটি ছিল বেশ উপভোগ্য। তবে উপস্থাপিকার পক্ষপাতমূলক আচরণ, প্রশ্নাবলী এবং আলোচকদের কারো কারো সরলীকরণ কথাবার্তায় বোঝা যায় স্বনামধন্য সম্পাদকদের মধ্যেও দলীয় প্রভাব বিদ্যমান। আর উপস্থাপিকার প্রশ্নের নমুনা দেখে দর্শকরা বুঝতে পারেন ২৪ ফেব্রুয়ারী এ ধরনের বিবৃতি দেয়া উচিত হয়নি সেটা প্রমাণ করতেই টকশো’র আয়োজন। অনুষ্ঠান শুরুতেই আমেরিকা থেকে টেলিফোনে অংশগ্রহণ করেন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি গোলাম সারওয়ার। তিনি বলেন, ‘সম্পাদক পরিষদের আমি সভাপতি। সংগঠনের সভা হয়েছে, প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। প্রস্তাবের অনেকগুলো বক্তব্যের সঙ্গে আমি একমত নই।’ ফ্লোর নিয়ে শ্যামল দত্ত বলেন, টিভিতে নানা টকশো হয়। এগুলো সম্পাদক পরিষদের বিষয় নয়। শুনেছি বৈঠকে যারা ছিলেন তারা বিরোধিতা করেছেন। সরকার গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করছে সম্পাদক পরিষদের এমন মতের সঙ্গে আমি একমত নই। এমন কিছু বিষয় রয়েছে সেগুলোতে প্রত্যেকের গণতান্ত্রিক অধিকার। বিবৃতিতে কিছু বিষয় জুড়ে দেয়া হয়েছে সেগুলো সম্পাদক পরিষদের আওতাভুক্ত কিনা প্রশ্ন আছে ? টকশো নিয়ন্ত্রণ, গেস্ট তালিকা, টিভির মালিক গ্রেফতার ইত্যাদি নিয়ে বিবৃতি দেয়া ঠিক হয়েছে কিনা। মিডিয়া নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারছে না সম্পাদক পরিষদের এ মতের সঙ্গেও একমত নই। টকশো বন্ধ হয়, চালু হয় এগুলো কী সরকার করে? টকশো সরকার বন্ধ করেনি। সম্পাদক পরিষদের এমন বিবৃতি দেয়া উচিত নয়। যা প্রমাণ করা সম্ভব নয় তা সম্পাদক পরিষদের করা উচিত নয়। দেশে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি যে মিডিয়া স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেনি, পারছে না। আমার পত্রিকা ভোরের কাগজের কার্যালয়ের সামনে তিন দফায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছে। এটাকে হুমকি মনে করছি না। ডেইলি স্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কী নেয়া হয়েছে? সংবাদপত্র কী জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে? সম্পাদক পরিষদের বৈঠকে কতজন উপস্থিত ছিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শ্যামল দত্ত বলেন, শেষ মুহূর্তে আমাকে ফোন করায় অন্য কাজ থাকায় বৈঠকে যেতে পারিনি। সম্পাদক পরিষদের অনেকগুলো বক্তব্যের সঙ্গে একমত নই। জবাব দিতে ফ্লোর নিয়ে মাহফুজ আনাম বলেন, সম্পাদক পরিষদ নতুন সংগঠন, এটা সব সম্পাদকের সংগঠন দাবি করিনি। ২৪টি পত্রিকার সম্পাদক এ সংগঠনের সদস্য। সংগঠনের গঠনতন্ত্র থাকে। সে অনুযায়ী কোরাম হওয়ায় বৈঠক হয়েছে সিদ্ধান্ত প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। এ প্রস্তাব সদস্য সবার জন্য প্রযোজ্য। ওই বৈঠকে কেউ ওয়াকআউট করেনি। সংগঠনের সভাপতি গোলাম সারওয়ারের অনুমতি নিয়েই সভা হয়েছে। তিনি অসুস্থতার কারণে হঠাৎ বিদেশ গেছেন। আমরা সব সময় একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করে কাজ করি। ফ্লোর নিয়ে ডেইল স্টার সম্পাদককে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে নাইমূল ইসলাম খান বলেন, নিউএইজ অফিসে গিয়ে পুলিশ সাংবাদিক হয়রানী করেছে। তখন সম্পাদক পরিষদ কিছু করেনি। ডেইলি স্টারের ওপর আঘাত আসায় সম্পাদক পরিষদ বিবৃতি দেয়ার এ উদ্যোগ নিয়েছে। মাহফুজ আনামের ওপর আঘাত এলেই কী উদ্বেগ প্রকাশ করবেন? আত্মপক্ষ সমর্থন করে মাহফুজ আনাম বলেন, নাইমূল ভাইয়া (ভাইয়া শব্দটি বহুবার ব্যবহার করেছেন) ডেইলি স্টারের সম্পাদক হিসেবে আমি মিটিং-এ কোনো প্রস্তাব দেইনি। অন্য সদস্যরা প্রস্তাব দিয়েছেন। নাইমূল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকতা এতো সহজ হবে কেন? প্রধানমন্ত্রী টকশো নিয়ে বিরূপ কথা বলেন। কিন্তু টকশো বন্ধ করে দেননি। সাংবাদিকতা বিপ্লবী পেশা নয় যে সরকারের বিরুদ্ধে বিপ্লব করবো। সাংবাদিকতায় মারদাঙ্গা করার কিছু নেই। ফোন, বাধা, হুমকি এসব সাংবাদিকতায় প্রফেশনাল হ্যাজার্ড। মিডিয়ায় কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে এটা সঠিক নয়। একটি বিজ্ঞাপনের জন্য আমরাতো তিনটি নিউজ ছেপে দেই। ফ্লোর পান তৌফিক ইমরোজ খালেদী। বলেন, এই সম্পাদক পরিষদ প্রতিনিধিত্বমূলক। দেশে সংবাদ প্রকাশে সমস্যা রয়েছে। সংবাদ প্রকাশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে চাপ আসে। তবে তিনি জানেন কিনা জানিনা। প্রশ্ন হলো আমরা সে চাপ মোকাবিলা করতে পারি কিনা? একটি ছবি ডেইলি স্টারে ছাপা নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা এড়িয়ে যাওয়া উচিত ছিল। ডেইলি স্টার সঠিক কাজ করেছে। মিডিয়ার প্রতি হুমকি সমাজের একটা অংশ। কালও ছাত্রলীগের এক নেতা আমাকে ফোন করেছিল একটি খবর প্রকাশের বিরোধিতা করে। সে খবরটি তুলে নেয়ার কথা বলেছিল। আমি বরং খবর তুলে না নিয়ে তার বক্তব্যও খবরে সংযোগ করে দিয়েছি। ইনকিলাবে যা ঘটেছে সেটা সঠিক কাজ করেনি সরকার। ওই পত্রিকার খবরটি নিয়ে বিতর্ক আছে। ওটা এভাবে ছাপা উচিত হয়নি। কিন্তু সরকার অন্যভাবে ইনকিলাবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারতো। সেটা না করে যা করেছে তা উচিত হয়নি। ১/১১ পর ডেইলি স্টার এবং প্রথম আলো ডিজিএফআইয়ের দেয়া খালেদা জিয়া এবং শেখ হাসিনা সম্পর্কে যা ছেপেছে তা সাংবাদিকতার পর্যায়ে পড়ে না। রিয়াজউদ্দিন আহমদ বলেন, সবার ওপর ঘটনা ঘটে না। একজনের ওপর ঘটলেও সবার মধ্যে সে প্রভাব পড়ে। মিডিয়ার ওপর চাপ আছে। সবক্ষেত্রে না ঘটলেও চাপ কারো কারো ক্ষেত্রে ঘটছে। আর সরকারের প্রেসার গ্রুপ রয়েছে। তারা নানাভাবে প্রভাব বিস্তার করে মিডিয়ার ওপর। সম্পাদকদের ওপর সে চাপ আছে। সম্পাদক পরিষদের পূর্ণাঙ্গ কোরাম হওয়ার পর মিটিং হয়েছে। সেখানে প্রস্তাবনাগুলো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দেশের পরিবেশ এমন পর্যায়ে গেছে যে, রিপোর্ট লিখতে গেলে রাজনৈতিক কারণ, পরিবেশ পরিস্থিতি, গু-াপা-া, মস্তান, র্যাব-পুলিশ সবগুলোর চাপ মাথায় ভিড় করে। ভেবে চিন্তে রিপোর্ট লিখতে হয়। আমি বলছি, সংবাদপত্রসহ মিডিয়ার উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ বর্তমানে দেশে বিদ্যমান। গণতন্ত্র, সংসদ যেভাবে কাজ করছে তাতে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিয়ে সত্যিই উদ্বিগ্ন। আর বিপ্লব? সংবাদপত্র এটা করে অনেক কিছুতে পরিবর্তন এনেছে। খন্দকার মুনিরুজ্জামান বলেন, সম্পাদক পরিষদের প্রস্তাবগুলো আমরাই নিয়েছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে সংবাদপত্রসহ মিডিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একজন এসআই নিউএইজ পত্রিকায় তল্লাসী করতে গেলো? হুমকি ধমকি করলো। ওয়ারেন্ট ছাড়া পত্রিকা অফিসে সে এভাবে যাওয়ার সাহস কোত্থেকে পায়? আমরা উদ্বিগ্নবোধ করছি। আমাদের কাছে টেলিফোন আসে ওই নিউজ না ছাপালে হতো না? এধরনের খবরদারি উদ্বেগজনক। রিপোর্ট প্রকাশ হলে নোটিশ আসে। এধরনের ঘটনা গোপনে হয় বলে জানা যায় না। আমরা যাব কোথায়? জেলা-উপজেলা প্রতিনিধিদেরও ফোন করে হুমকি দেয়া হয়। শ্যামল দত্তের সম্পাদক পরিষদের বিবৃতির বিরোধিতা এবং নাইমূল ইসলাম খানের সংবাদপত্রের ওপর হুমকি ধমকিকে নিছক প্রফেশনাল হ্যাজার্ড হিসেবে উড়িয়ে দেয়ায় উপস্থাপিকা দারুণ খুশি। তিনি মাহফুজ আনামকে বার বার প্রশ্ন করেন দেশে এমন কি হলো ২৪ ফেব্রুয়ারী সম্পাদক পরিষদকে এমন বিবৃতি দিতে হলো? মাহফুজ আনাম বলেন, অনেকগুলো কারণ রয়েছে। সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী যখন ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন, তখন যথেষ্ট উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নয় কী? নাইমূল বাইরের হুমকির কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী আর বাইরের কথা এক নয়। প্রধানমন্ত্রী সংসদে এ ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি নেগেটিভ-পজেটিভ যাই থেকে এ ঘোষণা দেন না কেন এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে মিডিয়ার। নাইমূল ইসলাম খান ও শ্যামল দত্ত এ ধরনের কথাবার্তা এবং হুমকি ধমকি নানা জায়গা থেকে আসে বলে সরলীকরণ করলে মাহফুজ আনাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অন্যদের মেলাবেন না। উপস্থাপিকা প্রশ্ন ছোঁড়েন আপনারা টকশো বন্ধের কথা বলেছেন। কোন টকশো বন্ধ করেছে? মাহফুজ আনাম বলেন, মতিউর রহমান চৌধুরীর ফ্রন্ট লাইন বন্ধ করেছে। এ সময় নাইমূল ইসলাম খান ও শ্যামল দত্ত বিরোধিতা করে বলেন, না না না। রিয়াজউদ্দিন আহমদ বলেন, একুশে টিভি বন্ধ হয়ে গেছে। মাহফুজ আনাম বলেন, আমরা উদ্বিগ্ন। ইনকিলাবে একটি নিউজ হয়েছে। নিউজটি ছিল কাচা হাতের লেখা। নিউজ ওইভাবে করা ঠিক হয়নি। এ নিউজের কারণে বার্তা সম্পাদককে গ্রেফতার করে মাসের পর মাস কারাগারে রাখা হলো। এ প্রভাব কী অন্যান্য সংবাদপত্র ও ইলেক্ট্রোনিক্স মিডিয়ায় পড়েনি? মিডিয়ার উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো দেশে অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে। এটা হলো তার একটি। উপস্থাপিকা সম্পাদক পরিষদের বিবৃতির কিছু অংশ পড়ে জানতে চান আপনারা হুমকির কথা বলছেন কেন? ফ্রন্ট লাইন বন্ধ করায় কি সব টকশোর ওপর চাপ? মাহফুজ আনাম বলেন, সংবাদপত্রে অনেককিছু অনুল্লেখ থাকে। আমাকে ফোন করা হয় ভদ্র ভাষায়। আমাকে ধমকায় না। বলা হয় ওমুক নিউজটি না ছাপলেও পারতেন। কিন্তু সবাইকে এমন ভাষায় ফোন করা হয় না। আমাদের জেলা সংবাদদাতাদের রিপোর্টের জন্য থ্রেট করা হয়। আমরা মনে করি ঘটনা ঘটলে তা রিপোর্টের মাধ্যমে জনগণকে জানানো। আপনি বার বার বলছেন কেন ২৪ ফেব্রুয়ারী এ বিবৃতি দেয়া হলো। কথা হলো আমরা উদ্বিগ্ন। সে জন্য আমাদের সদস্যরা এ নিয়ে বৈঠক করে প্রস্তাব গ্রহণ করে তা বিবৃতির মাধ্যমে প্রকাশ করেছি। আপনি বার বার সময়ের কথা বলছেন। সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তার ফেসবুকে লিখেছেন, মাহফুজকে গ্রেফতার করো। তার বিচার করো। এটা হুমকি নয়? সারাদেশে বোমাবাজী হচ্ছে। এটা আমাদের সাংবাদিকদের কাজে বাধার সৃষ্টি করছে। এটা কী উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ নয়? উৎসঃ ইনকিলাব
Comments
Post a Comment