এ পরিবর্তন যে ‘আরও বড় পরিবর্তনের আভাস দিচ্ছে’ সে বিষয়ে ভিন্নমত নেই তারও
খ্যাতিমান আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. ইমতিয়াজ আহমেদ মনে করেন এ পরিবর্তনের প্রভাব পুরোপুরি স্পষ্ট হতে আরও সময় লাগবে। এটিকে ‘পরিবর্তনের সূচনা’ হিসেবে দেখছেন তিনি। গতকাল মানবজমিনের সঙ্গে আলাপে ওই বিশ্লেষক বলেন, এখনই এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া বা মন্তব্য করার সময় আসেনি। ইটস টু আরলি। তবে এটা বুঝা যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নের বিষয়টি তার পছন্দের লোকদের হাত দিয়েই করতে চাইছেন। এক বছর কংগ্রেস সরকারের সেটআপ দিয়ে চালানোর পর হয়তো মোদি সরকার সেভাবে সুফল পাচ্ছিলেন না।
এ পরিবর্তনের ফলে বিজেপি তার ফরেন পলিসির এজেন্ডাগুলো আরও ভালভাবে বাস্তবায়ন করতে পারবে। মোদি সরকারের এজেন্ডা কি? বিশেষ করে বাংলাদেশ প্রশ্নে সেটি বিবেচ্য হবে বলে মনে করেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের আরেক প্রফেসর, বিশ্লেষক আমেনা মহসিনের মতে, কংগ্রেস সরকারের পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে বিজেপি সরকারের নীতিতে ভিন্নতা রয়েছে। বিশেষ করে বাস্তবায়নের প্রশ্নে।
কংগ্রেস সরকার বাংলাদেশের রাজনীতি বিশেষ করে একটি দলের সঙ্গে সম্পর্ককে বেশি গুরুত্ব দিতো। সেখানে মোদি সরকার ইকো-ডিসটেন্স বা সম-দূরত্ব বজায় রেখে চলেছে। তার ‘স্টেট টু স্টেট, পিপল টু পিপল’ সম্পর্কটা রাখার চেষ্টা করছে। ৫ই জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের আগে ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিংয়ের ‘শুভেচ্ছা সফরে’ বাংলাদেশে আসা এবং সব দলের অংশগ্রহণের পরিবর্তে ‘বেশিরভাগ দলের অংশগ্রহণে এখানে নির্বাচন দেখার’ যে আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছিলেন সে প্রসঙ্গে ওই বিশ্লেষক বলেন, আমার মনে হয় একজন সচিবের এমনভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাওয়া ঠিক হয়নি। এটি পেশাদারিত্বের ঘাটতি বলেই মনে হয়েছে আমার।
তাকে সরিয়ে দিয়ে পররাষ্ট্র সচিবের পদে নতুন একজনকে নিয়োগের বিষয়টি একান্তভাবে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে সুজাতা সিংকে নিয়ে যে ‘বিতর্ক’ আর মোদি সরকারের ‘সমদূরত্ব নীতি’ ঠিক যাচ্ছিলো না। তার পরিবর্তনের নেপথ্য কি ঘটনা এটি স্পষ্ট হতে আরও সময় লাগবে বলে মনে করেন ওই বিশ্লেষক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের প্রফেসর তারেক শামসুর রেহমান মনে করেন বাংলাদেশ প্রশ্নে মোদি সরকারের যে নীতি নতুন পররাষ্ট্র সচিব সেটি জোরালোভাবে বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখতে পারবেন। ওই নীতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ব্যক্তির চেয়ে সরকারের ইচ্ছাই প্রাধান্য পায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, সচিবের পদে পরিবর্তনের নীতিতে খুব একটা প্রভাব ফেলবে না। তবে এ পরিবর্তন যে ‘আরও বড় পরিবর্তনের আভাস দিচ্ছে’ সে বিষয়ে ভিন্নমত নেই তারও।
Comments
Post a Comment