জীবনবৃত্তান্ত (সিভি) যেন ‘আপনার জীবনের গল্প’। এটি আপনার জীবনের সেই গল্প, যা চাকরিদাতাকে আকৃষ্ট ও উৎসাহিত করবে আপনাকে ডাকতে।

অলংকরণ: তুলি অতএব, বুঝতেই পারছেন জীবনের এই গল্প লেখার গুরুত্ব। সময় নিয়ে আপনার জীবনের প্রাপ্তিগুলো সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করে তৈরি করুন সিভি। সেখানে শুধু আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রশিক্ষণ বা অভিজ্ঞতাই নয়, এর চেয়েও একটু বেশি কিছু যেন থাকে। এই একটু বেশি কিছুই আপনাকে হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর মধ্যে আলাদা করে দেবে।

সিভি লেখার ৭ নির্দেশনাভালো মানের কাগজ ব্যবহারফন্ট ও লে-আউট যেন সুন্দর ও ঝরঝরে হয়। এতে আপনার যত্নের ও আন্তরিকতার ছাপ থাকতে হবে। এতে চাকরিদাতাও বুঝতে পারবেন, আপনি চাকরিটি করতে কতটা আগ্রহী।
পরিচিত ফ্রন্ট ব্যবহার
সিভি লেখার ক্ষেত্রে আপনি টাইমস নিউ রোমান, অ্যারিয়্যাল বা ভারদানা ফন্ট ব্যবহার করতে পারেন। এসব ফন্ট দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি সহজে পড়াও যায়। ফন্ট সাইজ যেন ১১-এর কম না হয়।
বানান ও ব্যাকরণ
বানান কিছুতেই ভুল করা যাবে না। ব্যাকরণের ব্যাপারেও যথেষ্ট সচেতন হতে হবে।
লে–আউট এবং দৈর্ঘ্য
আজকাল বেশির ভাগ কোম্পানিই অনলাইনে সিভি পাঠাতে বলে। আবার কোনো কোনো কোম্পানি এখনো কাগজে টাইপ করা সিভি পাঠাতে বলে। লে-আউট ও দৈর্ঘ্য—এই দুটো সিভির জন্য একই রকম হওয়া উচিত।
কিছু বিশেষ গুণাবলি
বেশির ভাগ চাকরির বিজ্ঞাপনে দেখবেন নিয়োগকর্তারা চাকরিপ্রার্থীর মধ্যে কিছু বিশেষ গুণাবলি বা সফট স্কিল চান।
১. যোগাযোগদক্ষতা
২. দলবদ্ধভাবে কাজ করার ক্ষমতা
৩. ইতিবাচক হওয়া
৪. উদ্যোগী মনোভাব
৪. নমনীয়তা
সব চাকরিতে একই আবেদন নয়
আপনার মূল বা প্রধান জীবনবৃত্তান্ত কয়েক পৃষ্ঠার হতে পারে। কিন্তু যখন কোথাও আবেদন করবেন, তখন সেই সিভিকে যে পদে আবেদন করবেন, সেই পদের চাহিদা অনুযায়ী সাজাতে হবে। একটি জীবনবৃত্তান্ত দিয়ে সব চাকরিতে আবেদন করা যাবে না। আরও খেয়াল রাখতে হবে, প্রতিটি পদের জন্য সিভি দুই পৃষ্ঠার বেশি বড় যেন না হয়। প্রথম পৃষ্ঠায় সবচেয়ে জরুরি বিষয় যেমন আপনি যদি কলেজে ফুটবল টিমের দলনায়ক হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি বলতে পারেন আপনার নেতৃত্বদানের দক্ষতা রয়েছে। যাঁরা একটি চাকরি থেকে আরেকটি চাকরিতে যাবেন, তাঁরা অবশ্যই আপনার বর্তমান কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা ও সফলতার কথা লিখবেন। মনে রাখবেন, চাকরিদাতা কিন্তু প্রথম পৃষ্ঠার প্রথম দিকের কয়েকটি লাইনই আসলে মনোযোগ দিয়ে পড়েন। সুতরাং প্রথম পৃষ্ঠা ভালো না হলে দ্বিতীয় পৃষ্ঠা পর্যন্ত তিনি যাবেনই না। এভাবে প্রথম পৃষ্ঠায় আপনার প্রমাণ করতে হবে যে আপনিই একমাত্র সঠিক প্রার্থী এই পদটির জন্য। এরপর দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় আপনার পূর্ববর্তী চাকরি, পড়াশোনা ও ব্যক্তিগত অন্যান্য তথ্য দেবেন।
সঠিক রেফারেন্স
সিভি লেখার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সঠিক রেফারেন্স ব্যবহার করা। সিভিতে রেফারেন্স হিসেবে যাঁর নাম ব্যবহার করছেন তাঁকে অবগত করুন ও অনুমতি নিন। তাঁর নাম, পদিব ও যোগাযোগের সঠিক তথ্য ব্যবহার করুন।
একটু চিন্তা করলে দেখবেন, আপনার মধ্যেও অসাধারণ সব গুণ রয়েছে, যা চাকরিদাতারা খুঁজছে। ইন্টারনেট বা বইপত্র ঘাঁটাঘাঁটি করলে এ ব্যাপারে আরও জানতে পারবেন। সুতরাং এখনই তৈরি হন, নিয়োগকারীরা অপেক্ষা করছেন আপনারই জন্য

Comments