ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, ১৭৫৭ সালে পলাশীতে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের মাধ্যমে উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনের সূত্রপাত হওয়ার পর থেকে নব্য শাসকদের নীতি হয়ে দাঁড়ায় মুসলমানরা যাতে কিছুতেই আর মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে। অন্যদিকে মুসলমানরাও কিছুতেই বরদাস্ত করতে পারছিল না বৃটিশ শাসন।

মোহাম্মদ আবদুল গফুর : অক্টোবর মাস শেষ হওয়ার পথে। ঠিক ১০৯ বছর আগে ১৯০৫ সালে এই অক্টোবর মাসের ১৬ তারিখে এমন একটা ঘটনা ঘটে যা আমাদের জাতীয় ইতিহাসে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে। ইতিহাসে এই ঘটনা ‘বঙ্গভঙ্গ’ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। বঙ্গভঙ্গের পূর্বে উপমহাদেশের পূর্বাঞ্চলে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি নামে যে বিশাল প্রদেশ ছিল তার অন্তর্ভুক্ত ছিল আজকের বাংলাদেশসহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উড়িষ্যা প্রভৃতি অঞ্চল। প্রধানত প্রশাসনিক সুবিধার্থে বঙ্গভঙ্গের মাধ্যমে ঢাকায় রাজধানীসহ ‘পূর্ববঙ্গ ও আসাম’ নামে একটি  নতুন প্রদেশ গঠন করা হয়।
যদিও এই বঙ্গভঙ্গের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল প্রশাসনিক কাজে সুবিধা, এতে দীর্ঘ অবহেলিত পূর্ববঙ্গের জনগণের উন্নয়নের কিঞ্চিৎ সুযোগ সৃষ্টি হয়। এই নবগঠিত প্রদেশের আয়তন দাঁড়ায় ১,০৬,৫৪০ বর্গমাইল। লোক সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ১০ লক্ষ। এর মধ্যে মুসলিম জনসংখ্যার পরিমাণ ১ কোটি ৮০ লক্ষ। এই  পরিকল্পনায় মধ্য প্রদেশ ও মাদ্রাজের উড়িয়া অধ্যুষিত অঞ্চল বঙ্গ প্রদেশের সঙ্গে এবং হিন্দি ভাষাভাষী ছোটনানপুর মধ্যপ্রদেশের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব ছিল। এভাবে পুনর্গঠিত বঙ্গ প্রদেশের আয়তন দাঁড়ায় ১,৪১,৫৮০ বর্গমাইল এবং এর জনসংখ্যা দাঁড়ায় ৯০ লক্ষ মুসলমানসহ মোট ৫ কোটি ৪০ লক্ষ। তবে উভয় প্রদেশই কলকাতা হাইকোর্টের আওতায় থাকে।
 পলাশীতে স্বাধীনতা হারাবার পর একশ’ বছর ধরে মুসলমানরা স্বাধীনতা ফিরে পেতে ইংরেজদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ চালিয়ে যায়। এ প্রসঙ্গে মজনু শাহের নেতৃত্বে ফকীর বিপ্লব, হাজী শরীয়তুল্লাহ ও দুদু মিয়ার নেতৃত্বে ফরায়েজী আন্দোলন,  বাঁশের কেল্লাখ্যাত তিতুমীরের সংগ্রাম, নূরুল দীন প্রমুখ কৃষক নেতাদের সংগ্রাম, মহিশূরের  টিপু সুলতান ও বালাকোটের শহীদ সৈয়দ আহমদ বেলভীর সংগ্রামের কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা যায়। কিন্তু প্রতিবেশী সম্প্রদায়ের অসহযোগিতার কারণে এর প্রত্যেকটা যুদ্ধে মুসলমানরা পরাজয় বরণ করে।
সর্বশেষে ১৮৫৭ সালে উপমহাদেশব্যাপী যে সিপাহী বিপ্লব সংঘটিত হয় তাতেও মুসলমানরা পরাজিত  হলে তখনকার হিন্দু বুদ্ধিজীবীরা উল্লাসে ফেটে পড়ে। এদের অন্যতম সাহিত্য স¤্রাট বঙ্কিমচন্দ্র মহাখুশিতে ‘সংবাদ ভাস্করে’ লিখলেন, “পাঠক সকল জয় জয় বলিয়া নৃত্য কর, হিন্দু প্রজা সকল দেবালয়ে সকলে পূজা দেও। আমাদের রাজ্যেশ্বর  শত্রুজয়ী হইলেন”।
আর কবি ঈশ্বর গুপ্ত কবিতা লিখলেন-
“যবনের যত বংশ একেবারে হবে ধ্বংস 
সাজিয়াছে কোম্পানির সেনা
গরু জরু লবে কেড়ে, চাপ-দেড়ে যত নেড়ে
এই বেলা সামাল সামাল।”
কবি ঈশ্বরগুপ্ত আরও লিখলেন-
“চিরকাল হয় যেন ব্রিটিশের জয়।
ব্রিটিশের রাজলক্ষ্মী স্থির যেন রয় 
এমন সুখের রাজ্য আর নাই হয়।
শাস্ত্র মতে এই রাজ্য রামরাজ্য কয়”।
আগেই বলা হয়েছে, পলাশী বিপর্যয়ের মাধ্যমে এদেশে ইংরেজ শাসনের সূত্রপাত হওয়ার পর নব্য শাসকদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল মুসলমানরা যাতে সহজে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে, সেদিকে কড়া নজর রাখা। এজন্য প্রশাসন, প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, সংস্কৃতি, জমিদারী, আয়সাদারী থেকে বেছে বেছে মুসলমানদের উৎখাত করার ব্যবস্থা নেয়া হলো। পলাশী বিপর্যয়ের কয়েক বছরের মধ্যেই পূর্বতন ভূমি ব্যবস্থা পরিবর্তন করে ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত নামে যে নতুন ভূমি ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হলো তাতে ইংরেজ-অনুগত এমন এক নব্য জমিদার গোষ্ঠী সৃষ্টি হলো যার সিংহভাগই ছিল হিন্দু।
এদিকে ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ যদিও ছিল প্রধানত প্রশাসনিক কাজের সুবিধার্থে পরিকল্পিত, এর ফলে নবগঠিত ‘পূর্ববঙ্গ ও আসাম’ প্রদেশের দীর্ঘ অবহেলিত জনগণের উন্নয়নের কিঞ্চিৎ সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় কলকাতা প্রবাসী জমিদারদের মনে আশঙ্কা সৃষ্টি হলো নতুন প্রদেশ সৃষ্টির ফলে পূর্ববঙ্গে তাদের জমিদারীর প্রজাদের ওপর তাদের কর্তৃত্ব সংকুচিত হয়ে পড়তে পারে। তাছাড়া নতুন প্রদেশে মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে পড়াটাও তাদের পছন্দ হওয়ার কথা নয়। ফলে তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় শুরু হলো প্রবল বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলন। এ আন্দোলন অচিরেই সাম্প্রদায়িক রূপ লাভ করল। হিন্দু তরুণরা অনেকে কালী দেবীকে সামনে রেখে এ আন্দোলনে অংশগ্রহণের সংকল্প গ্রহণ করল। 
পলাশী থেকে বঙ্গভঙ্গ পর্যন্ত এদেশের যে হিন্দু নেতৃবৃন্দকে ইংরেজ শাসকরা সবসময় মিত্রশক্তি হিসেবে পেয়েছেন তাদের এই আকস্মিক রুদ্ররূপে নব্যশাসকদের মধ্যেও বিস্ময় ও আতঙ্ক দেখা দিল। এর ফলে মাত্র ছয় বছরের মাথায় ১৯১১ সালে দিল্লির দরবারে ইংরেজ শাসকরা বঙ্গভঙ্গ রদের ঘোষণা দিয়ে তাদের পুরাতন মিত্রদের মনরক্ষার ব্যবস্থা করলেন। ইংরেজ শাসকদের এ ভূমিকায় খুশী হয়ে বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত কবি ‘জনগণ মন অধিনায়ক জয় হে ভারতভাগ্য বিধাতা’ নামে গান রচনার মাধ্যমে ব্রিটিশ স¤্রাট পঞ্চম জর্জকে অভিনন্দন জানান।
বঙ্গভঙ্গ রদের ঘোষণায় চরম ক্ষুব্ধ হন পূর্ববঙ্গের অবহেলিত জনগণের তদানিন্তন অবিসংবাদিত নেতা নবাব সলিমুল্লাহ এবং তাঁর দুই সহযোগী সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী ও উদীয়মান জননেতা একে ফজলুল হক। তাদের এ ক্ষোভ প্রশমনের লক্ষ্যে ইংরেজ সরকার তাদের অন্যতম দাবী ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করে। এতেও কলকাতা-প্রবাসী হিন্দু জমিদার, বুদ্ধিজীবীরা প্রবল আপত্তি তোলেন। তবে বঙ্গভঙ্গ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে তাদের যুক্তি ছিল সত্যিই অভিনব। বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে তাদের যুক্তি ছিল এর দ্বারা বঙ্গ মাতার অঙ্গচ্ছেদ করা হবে। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে তাদের যুক্তি, এর ফলে নাকি বাঙালি সংস্কৃতি দ্বিখ-িত করা হবে।
তবে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে তারা আরেকটা যে যুক্তি দিলেন, তাদের মনের আসল থলের বেড়াল বেরিয়ে পড়ল। তারা বললেন, পূর্ব বাংলার অধিকাংশ মানুষ অশিক্ষিত, মুসলমান চাষাভুষা। তাই তাদের উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকায় কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের দরকার নেই। অর্থাৎ পূর্ববঙ্গের জনগণ অশিক্ষিত, চাষাভুষা তারা, অশিক্ষিত চাষাভুষাই থাক, তাদের শিক্ষা বা উচ্চশিক্ষার কোনোই প্রয়োজন নেই। 
কলকাতাকেন্দ্রিক বুদ্ধিজীবীদের এই বিরোধিতার কারণে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান স্বপ্নদ্রষ্টা নবাব সলিমুল্লাহ এক বুক হতাশা নিয়ে ১৯১৫ সালে ইন্তেকাল করেন। তার মৃত্যুর পর প্রথম মহাযুদ্ধসহ বিভিন্ন ছুতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা পিছিয়ে যায়। অবশেষে নবাব সলিমুল্লাহর দুই সহযোগী সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী ও একে ফজলুল হকসহ অন্যদের আপ্রাণ চেষ্টায় প্রতিশ্রুতি ঘোষণার দশ বছর পর ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লাভ করলেও কলকাতাকেন্দ্রিক বুদ্ধিজীবীদের প্রভাবের কারণে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক আওতা সীমাবদ্ধ রাখা হয় ঢাকা শহরের মধ্যে। আগের মতোই পূর্ববঙ্গের সব স্কুল ও কলেজের ওপর এফিলিয়েটিভ কর্তৃত্ব বজায় থাকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের। এ কর্তৃত্ব থেকে পূর্ববঙ্গের স্কুল ও কলেজসমূহ মুক্তি লাভ করে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর।
এতো গেল বঙ্গভঙ্গ রদের খেসারত হিসেবে পাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কথা। এবার আসা যাক বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতার উদ্দেশ্যে দেয়া যুক্তি তথা কুযুক্তির কথায়। বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতাকারীদের প্রধান যুক্তি ছিল এর দ্বারা নাকি বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদ করা হবে। অখ-ভঙ্গকে তারা এতোই ভালোবাসতো যে তাকে মাতা হিসেবে কল্পনা করে বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদের দ্বারা মাতার অঙ্গছেদের মতো পাপ হবে বলেই তারা বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা করেছিল। অথচ ইতিহাস প্রমাণ করে যে এর চাইতে জঘন্য মিথ্যা আর ছিল না।
১৯৪৭ সালে ১৯০ বছরের ইংরেজ শাসনের অবসানের পর উপমহাদেশে ভারত ও পাকিস্তান নামের দুটি স্বতন্ত্র স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যুদ্বয় ঘটে একথা আমরা সবাই জানি। উপমহাদেশ একটি অখন্ড রাষ্ট্র হিসেবে স্বাধীনতা লাভ করবে, না ভারত ও পাকিস্তান নামের দুটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে স্বাধীনতা লাভ করবে, এ নিয়ে প্রচুর তর্কবিতর্ক হয় স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী তৎকালীন প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ও নিখিল ভারত মুসলিম লীগের মধ্যে। প্রথম দলটির অভিমত ছিল উপমহাদেশ একটি অখ- রাষ্ট্র হিসেবে স্বাধীনতা লাভ করুক। আর দ্বিতীয় দলের দাবি ছিল উপমহাদেশ ভারত ও পাকিস্তান নামের দুটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে স্বাধীনতা লাভ করুক।
শেষ পর্যন্ত বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদের বিরোধীসহ অখ- ভারতপন্থীরা এ ব্যাপারে একমত হন যে, উপমহাদেশ বিভাগে তারা রাজি আছেন যদি বাংলাকেও বিভক্ত করা হয়। অর্থাৎ ১৯০৫ সালে যারা বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদের চরম বিরোধিতা করেছিলেন তাদের উত্তরসূরিরাই ১৯৪৭ সালে বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদের শর্তে উপমহাদেশের বিভাগ মেনে নিয়েছিলেন।
এখানে আরেকটি ঘটনাও বিশেষ উল্লেখের দাবীদার। ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ বিভাগের প্রাক্কালে মুসলিম লীগ নেতা হোসেন শহীদ সোহরওয়ার্দী ও আবুল হাশিম এবং কংগ্রেস নেতা শরৎচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্রদ্বয়ের বাইরে বাঙালিদের একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন গড়ে ওঠে। এটি বৃহত্তর সার্বভৌম বাংলা আন্দোলন নামে ইতিহাসে খ্যাত হয়ে আছে। মুসলিম লীগ নেতা কায়েদে আজম মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ এ আন্দোলনের প্রতি নৈতিক সমর্থন দান করলেও অবাঙালি কংগ্রেস নেতা গান্ধী, নেহরু ও প্যাটেলের পাশাপাশি বাঙালি হিন্দু নেতাদের প্রবল বিরোধিতার কারণে এ আন্দোলন ভ-ুল হয়ে যায়। তখন হিন্দু মহাসভার বাঙালি নেতা ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি এমনও ঘোষণা দিয়েছিলেন, ভারত ভাগ না হলেও বাংলা ভাগ হতেই হবে। ফলে বাংলা বিভাগ অনিবার্য হয়ে পড়ে। এসব ঘটনা বঙ্গমাতার প্রতি তার তথাকথিত সন্তানদের ভক্তির প্রমাণ বহন করে না।
আজকের স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমরা ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের যে তাৎপর্য খুঁজে পাই, তা এই যে, সেদিনের বঙ্গভঙ্গের ফলে সৃষ্ট ‘পূর্ব বঙ্গ ও আসাম’ নামের প্রদেশের মধ্যে আজকের বাংলাদেশের চিত্র কিছুটা সীমাবদ্ধ অবয়বে দেখতে পাওয়া যায়। আর সেদিন যারা বঙ্গভঙ্গকে বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদ বলে এর বিরোধিতায় চরম পন্থা গ্রহণ করেছিলেন, পরবর্তীকালে ১৯৪৭ সালে প্রধানত তাদের দাবীতেই তাদের প্রিয় বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদের মতো পাপ কার্যটি সম্ভবপর হয়ে উঠেছিল।
বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদের সেদিনকার বিরোধিতাকারীদের পরবর্তীকালে ১৯৪৭ সালে  আমরা শুধু বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদের ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকায়ই দেখি না, বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদ ঘটিয়ে অবাঙালি নেতৃত্বাধীন রাষ্ট্রের পদলেহন করে তাদের প্রচুর তৃপ্তি পেতেও দেখতে পাই। বঙ্গভঙ্গের ইতিহাস থেকে এর প্রকৃত তাৎপর্য যদি উপলব্ধি করতে সক্ষম হই, তবেই আমাদের বঙ্গভঙ্গের ইতিহাস অধ্যয়ন সার্থক হবে। 

Comments