এটাই কি জাদুর কাঠি?
বাংলাদেশ, মিসর, ইরাক, ফিলিস্তিন, সিরিয়া প্রভৃতি দেশের আর্তচিৎকার
আমাদের সবাইকে আহত ও বিক্ষুব্ধ করে। বাংলাদেশে যাদের জন্ম তারা বাঙালির
সুখ-দুঃখে আনন্দ বা আর্তনাদ করবেই। যারা মুসলমান তাদের উচিত গোটা মানবজাতির
কথা মাথায় রাখা। কিন্তু মুসলমানদের দুঃখে তারা অধিকতর শোকার্ত হন। এটা খুব
স¦াভাবিক প্রতিক্রিয়া।
পৃথিবীব্যাপী হত্যা, ধ্বংসলীলা, অত্যাচার ও লুণ্ঠন দেখে বর্তমানে
প্রতিটি সচেতন মানুষ বিক্ষুব্ধ, এরা অস্থির সময় অতিক্রম করছেন। এর পরও আমরা
সবাইকে তুরস্কের দিকে দৃষ্টি দেয়ার আহ্বান জানাই। ওসমানিয়া খেলাফত নয়,
খেলাফত-উত্তর তুরস্ক নিয়ে আমাদের গবেষণা করা দরকার। পরাধীন ভারতবর্ষের জনগণ
তুর্কি বা ওসমানিয়া খেলাফত এবং এর পতন নিয়ে অনেক শোরগোল করেছে। আবার
বাঙালি কবি নজরুল তুর্কি বীর কামাল পাশা, আনোয়ার পাশা ও জগলুল পাশাকে নিয়ে
চমৎকার কবিতা রচনা করেছেন। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর মধ্যে মাত্র
কয়েকটি দেশ পাশ্চাত্যের পরাধীনতা থেকে মুক্ত ছিল। এর মধ্যে তুরস্ক অন্যতম।
ছয় শ’ বছরের বেশি সময় ইউরোপ ও এশিয়ার বিপুল ভূখণ্ড ওসমানিয়া খেলাফতের অধীনে
ছিল। আধুনিক ইউরোপ বা এশিয়ার অন্য কোনো দেশের জনগণ এত দীর্ঘ সময়
সাম্র্রাজ্য পরিচালনার অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেনি।
তুরস্কের ইতিহাসে কামাল পাশা থেকে এরদোগানÑ এ সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
কামাল পাশা তুরস্কের খোলনলচে পাল্টে দিয়ে ইউরোপীয় মডেলে নতুন তুরস্ক
নির্মাণের চেষ্টা করেছেন। এ নিয়ে নানা বিতর্ক ও সমালোচনা ইতিহাসের পাতায়
লিপিবদ্ধ আছে। তুরস্কের স্বাধীনতা যুদ্ধের মহানায়ক কামাল পাশা কারো কাছে
‘আতা-তুর্ক’ এবং কারো কাছে তিনি ইউরোপীয় ‘পুতুল’।
কামাল পাশার পর তুরস্ক অনেক চড়াই-উৎরাই অতিক্রম করেছে। দেশটি বারবার
সামরিক একনায়কদের ক্ষমতালিপ্সার শিকার হয়েছে। কিন্তু ইতিহাস নিজস্ব গতিতে
এগিয়ে চলেছে। আমাদের বিবেচনায় কামাল পাশা যে তুরস্ক রেখে গিয়েছিলেন বর্তমান
তুরস্ক তা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন পথে হাঁটছে। বদিউজ্জামান সাঈদ নুরসি,
ফতেহুল্লাহ গুলেন, নেকমিতিন এরবাকান, রজব তাইয়েব এরদোগান প্রমুখের
দূরদর্শিতা, রাষ্ট্রচিন্তা, কর্মতৎপরতা, কর্মকৌশল আর সাহসিকতা
বিশ্বমানচিত্রে নতুন এক তুরস্কের জন্ম দিয়েছে। নতুন তুরস্ক সৃষ্টির পেছনে
তুর্কি জনগণের স্বাধীনচেতা মনোভাব ও ঐতিহ্যচেতনা প্রধান অনুঘটকের ভূমিকা
পালন করেছে। এর সাথে মিল্লি সালামত পার্টি, রেফা পার্টি, ভার্চু পার্টি,
ফেলিসিটি পার্টি, একে পার্টি প্রভৃতি দলের কমবেশি অবদান রয়েছে। তুরস্কে
সমাজ ও রাষ্ট্রের বিবর্তন বুঝতে হলে তুর্কি জনগণের প্রকৃতি এবং এ সব দলের
অভ্যুদয় এবং কর্মকৌশল সম্পর্কেও আমাদের ধারণা থাকতে হবে।
কিছুটা অপ্রাসঙ্গিক হলেও ব্যক্তিগত কিছু অভিজ্ঞতা এখানে শেয়ার করতে
চাই। ৮০ সালে আমি প্রথম তুরস্কে যাই। সুলেমান ডেমিরেল তখন তুরস্কে জোট
সরকারের প্রধানমন্ত্রী। মিল্লি সালামত পার্টির নেতা নেকমিতিন এরবাকানের
সাথে সে সময় দেখা করেছি। তার জ্ঞানগর্ভ ও জ্বালাময়ী বক্তৃতা শুনেছি। ড.
আহমদ তুতুনজি ও ড. কামাল হিলওয়াবির সাথে সেখানেই প্রথম পরিচয়। ড. হিলওয়াবির
সাথে অধিক সময় ব্যয় করার সুযোগ পেয়েছি। চানাকালা অবস্থানের সময় ফজরের পর
তিনি প্রাতঃভ্রমণে বের হতেন এবং আমি তার সাথে যেতাম। অনেক বছর পর লন্ডনে
তার সাথে দেখা হলে দেখলাম তার সেটা মনে আছে। ইস্তাম্বুল, চানাকালা, বুসরা,
ইজমির প্রভৃতি এলাকা ঘুরে দেখেছি। ইজমিরে এক মসজিদে জুমার নামাজ আদায়
করেছি। ড. হিলওয়াবি সেখানে আরবিতে জুমার খুতবা দেন। সেখানে মিল্লি সালামত
পার্টির এক যুবকর্মী এদিপ ইউকসাল ছিলেন। এদিপ ইউকসাল আরবি খুতবা তুর্কি
ভাষায় অনুবাদ করেন। মোস্তফা কামাল পাশার নেতৃত্বে মিত্রশক্তির বিরুদ্ধে
তুর্কিদের স্বাধীনতা রক্ষার লড়াইয়ের ঘটনাস্থল দেখেছি। বইয়ে পড়া ইতিহাস নতুন
করে তাদের মুখে শুনেছি।
ইস্তাম্বুল শহরে ছিলাম এক সপ্তাহ, মিল্লি সালামত পার্টির যুব ফ্রন্টের
হেফাজতে। আয়াসোফিয়া, নীল মসজিদ, টপকাপি মিউজিয়াম প্রভৃতি ঐতিহাসিক স্থান
দেখলেও রাসূল সা:-এর সাহাবি আবু আইয়ুব আনসারি রা:-এর এলাকায় অধিক সময় ব্যয়
করেছি। মিল্লি সালামত পার্টির ছাত্র ও যুবকদের সাথে আড্ডা দিয়েছি, বিতর্ক
করেছি। ইস্তাম্বুল ইউনিভার্সিটির ছাত্র লেবেন বলকান পুরো সময়টা আমাকে সঙ্গ
দিয়েছেন। মিল্লি সালামত পার্টির ইস্তাম্বুল শাখার শুরার বৈঠকে নিয়ে গেছেন।
সরকারি ও চরমপন্থী সন্ত্রাসীদের হামলায় আহতদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন।
নিয়ে গিয়েছেন শাহাদতের ঘটনাস্থলে এবং অশ্রুভেজা কণ্ঠে বর্ণনা করেছেন
লোমহর্ষক সাহসিকতার কাহিনী। চায়ের দোকানে মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছেন।
রাত্রি যাপন করেছি হোটেলে নয়, পার্টির ছাত্রাবাসে, মিল্লি সালামত পার্টির
ছাত্রকর্মীদের সাথে। তখন ইসলাম ও বিশ্বপরিস্থিতির নানা ইস্যুতে মিল্লি
সালামত পার্টির কর্মীদের সাথে সাধারণ জনগণের দূরত্ব প্রত্যক্ষ করেছি। নিছক
মিল্লি সালামত পার্টির সাথে তদানীন্তন সরকারের বৈরী মনোভাবের কারণে এমনটি
দেখা গেছে বলে আমার মনে হয়নি।
এ বছর দুই মাস আগে আবার ইস্তাম্বুল ঘুরে এলাম। এবার পুরো একটা দিন
কাটিয়েছি আইউব সুলতান এলাকায়। রাসূলে করিম সা:-এর সাহাবি আবু আইয়ুব আনসারি
রা:-এর মসজিদ ও মাজার যে এলাকায় আছে, সে এলাকা এ নামেই সেখানে পরিচিত। নীল
মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেছি। কামাল পাশার সময় থেকে তুরস্কের ইমামগণ
জুমার খুতবা তুর্কি ভাষায় দেন। যারা তুর্কি ভাষা জানেন না তাদের জন্য
আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আরবি, জার্মান, ইংরেজি ও স্প্যানিশ ভাষায়
খুতবা শোনার সুযোগ রয়েছে। আমি হেডফোনে ইংরেজি ভাষার বোতাম টিপে ইমামের
খুতবা শুনেছি। রমজানের গুরুত্ব এবং মানুষের রুহানি ও সামাজিক উন্নয়নে এর
ভূমিকা ছিল তার খুতবার বিষয়বস্তু। নামাজের আগে মসজিদের ইমামের সাথে
মতবিনিময় করেছি। ইমাম চমৎকার ইংরেজি জানেন। সে সময় তিনি এক মার্কিন
সাংবাদিকের সাথে কথা বলছিলেন। আমি ব্রিটেন থেকে এসেছি জেনে তার কাছে ক্ষমা
চেয়ে আমাকে কিছুটা সময় দেন। রমজানের প্রস্তুতি হিসেবে হাফেজগণ মসজিদে
গ্রুপে গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কুরআন তিলাওয়াত করছেন। ঘণ্টাখানেক তাদের তিলাওয়াত
শুনলাম। প্রধান হাফিজের তিলাওয়াত এখনো মাঝে মাঝে আমার কানে বাজে।
তিলাওয়াতের সময় তার চমৎকার মুখভঙ্গি হঠাৎ করে মানসপটে ভেসে ওঠে।
৮০ সালে তুরস্কে মহিলাদের মাথায় স্কার্ফ বা গায়ে বোরখা চোখে পড়েনি।
একদিন আইয়ুব মসজিদের বারান্দায় বসে গল্প করছি। হঠাৎ দেখি স্কার্ফ পরা এক
মহিলা হাইহিলে গট গট শব্দ তুলে মসজিদের বারান্দায় এসে হাজির। তিনি কোনো
দিকে না তাকিয়ে ব্যাগ থেকে বোরখা বের করে গায়ে দিয়ে মসজিদে ঢুকে পড়লেন।
আমার সাথে ছিলেন তুর্কি ব্যবসায়ী খলিল এবং ইস্তান্বুল ইউনিভার্সিটির ছাত্র
লেবেন। তারা বললেন, মহিলা নামাজ পড়তে এসেছেন। কিছুক্ষণ পর মহিলা মসজিদ থেকে
বেরিয়ে এলেন। বোরখা খুলে ব্যাগে রাখলেন, তারপর আগের মতো গট গট শব্দ তুলে
বেরিয়ে গেলেন। এবার আইউব মসজিদের চিত্র ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। মেয়েদের জন্য
নির্দিষ্ট এলাকায় তিলধারণের ঠাঁই নেই। বিভিন্ন বয়সের কমপক্ষে শ’ পাঁচেক
মেয়ে সেখানে আছে। কেউ স্কার্ফ পরা এবং কারো গায়ে বড় চাদর। কেউ কেউ পুরুষদের
জন্য নির্দিষ্ট এলাকা দিয়েও বেপরোয়াভাবে হাঁটছে। মনে হচ্ছে, তারা কোথাও
অবাঞ্ছিত নয়। আমার দুই মেয়ে ও স্ত্রী তাদের দেখে আনন্দে আত্মহারা। নীল
মসজিদসহ তুরস্কের সব মসজিদ মেয়েদের জন্য অবারিত। ব্রিটেনের রিজেন্টস পার্ক
মসজিদ ছাড়া আর কোথাও মেয়েদের এ রকম চলাফেরা চোখে পড়ে না। একসময় ফ্রান্সের
মতো তুরস্কেও স্কার্ফ পরা নিষিদ্ধ ছিল। নব্বই দশকে তুরস্কের এক পার্লামেন্ট
সদস্যাকে স্কার্ফ পরার কারণে নাগরিকত্ব হারাতে হয়েছে। এখন তুরস্কের
ফার্স্ট লেডিও স্কার্ফ পরে চলাফেরা করেন। ট্রাম, বাস, ট্রেন, শপিং সেন্টার,
বোটÑ সব জায়গায় স্কার্ফ পরা মহিলা ও তরুণীদের দেখা যায়। অবশ্য
স্কার্ফহীনদের সংখ্যাও সেখানে কম নয়। অর্থাৎ পোশাকের ব্যাপারে মেয়েরা পূর্ণ
স্বাধীনতা ভোগ করছে।
জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির নেতৃত্বে তুরস্কের গণতান্ত্রিক
অগ্রগতি ও অর্থনৈতিক সাফল্য চোখে পড়ার মতো। সামরিক শাসন বা রাজতন্ত্র
সেখানে নেই। মানুষ ভোট দিয়ে শাসক নিয়োগ করছে। তুর্কি জনগণ ইসলামি
মূল্যবোধের অনুসারি একে পার্টিকে বারবার ভোট দিয়ে নির্বাচিত করছে। মিশর বা
আলজিরিয়ার পরিস্থিতি এখানে সৃষ্টি হয়নি। শুরুর দিকে সামরিক বাহিনীর সাথে
দ্বন্দ্ব বা টানাপড়েন চললেও বর্তমানে সেনাবাহিনী সরকারের সম্পূর্ণ
নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সংশোধিত সংবিধান অনুযায়ী এরদোগান জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে
প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর পরিস্থিতি আরো সহজতর হয়েছে। টার্কিশ
লিরা বর্তমানে অনেক শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। ৮০ সালে মার্কিন এক ডলারের
বিনিময়ে এক শ’ থেকে বেশি টার্কিশ লিরা পাওয়া যেত। তখন দেশটি বৈদেশিক ঋণের
ভারে জর্জরিত ছিল। একে পার্টির সরকার সব বিদেশী ঋণ পরিশোধ করে ফেলেছে। এখন
ব্রিটিশ এক পাউন্ডের বিনিময়ে মূল্য তিন থেকে সাড়ে তিন টার্কিশ লিরা।
বিশ্বব্যাপী চলমান অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব তুরস্কে পড়েনি। অর্থনৈতিক
প্রবৃদ্ধি প্রতি বছরই বাড়ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মধ্যপ্রাচ্য, ইরান ও
ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সাথে তুরস্কের চমৎকার সুসম্পর্ক রয়েছে। ফিলিস্তিন,
সিরিয়া ও মিসর নিয়ে এরদোগানের বক্তব্যকে মুসলিম বিশ্বের জনগণ স্বাগত
জানিয়েছে। এরদোগানের সাহসী ভূমিকার কারণে অনেকে তাকে মুসলিম বিশ্বের
কণ্ঠস্বর হিসেবে দেখছেন। মুসলিম বিশ্বের সর্বত্র যেখানে নাজুক অবস্থা বিরাজ
করছে, সেখানে এরদোগান বা একে পার্টি কোন জাদুর কাঠির পরশে দেশ-বিদেশে
সাফল্যের স্বাক্ষর রাখছে বা ২০০২ সাল থেকে ক্ষমতা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে,
তা অবশ্যই বিশ্লেষণের দাবি রাখে।
মোস্তফা কামাল পাশাকে নব্য খেলাফত-উত্তর তুরস্কের জন্মদাতা বলা হয়।
বিভিন্ন কারণে মুসলিম বিশ্বের কাছে তিনি নিন্দিত হলেও প্রথম মহাযুদ্ধের পর
মিত্রশক্তির সাথে প্রত্যক্ষ লড়াইয়ে অংশ নিয়ে তিনি তুরস্কের স্বাধীনতা রক্ষা
করেছেন। কামাল পাশার সেকুলারিজম ছিল ফ্রান্সের লেইসিজম। তিনি দাড়ি ও
হিজাবের ব্যাপারে বিধিনিষেধ আরোপ করেন এবং আরবি বর্ণমালার পরিবর্তে ল্যাটিন
বর্ণমালা চালু করেন। আরবি ভাষার পরিবর্তে তুর্র্কি ভাষায় আজান ও জুমার
খুতবা দেয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু স্বাধীনতার সৈনিক কামাল পাশার অবদানকে
তুরস্কের জনগণ খাটো করে দেখতে পারে না। তা ছাড়া তিনি প্রাথমিক শিক্ষা
বাধ্যতামূলক করেছেন এবং রাষ্ট্রীয় সব বিষয়ে মেয়েদের সম-অধিকার প্রদান
করেছেন। শিক্ষাব্যবস্থায় বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তি চালু করেছেন। মসজিদসহ
বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে রাষ্ট্রীয় কতৃত্বে নিয়ে সেখানে উন্নত
ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করেছেন। এককেন্দ্রিক খেলাফতব্যবস্থার
পরিবর্তন সাধন করে রাষ্ট্র পরিচালনায় জনগণকে সম্পৃক্ত করেছেন। মোস্তফা
কামাল পাশার এসব পদক্ষেপকে বর্তমান প্রজন্মের তুর্র্কি জনগণের একটা বড় অংশ
দেশের উন্নয়নের পথে সহায়ক বলে বিবেচনা করে।
একে পার্টি স্বাধীনতাযুদ্ধে কামাল পাশার অবদানকে স্বীকৃতি দিয়ে তার
লেইসিজমের পরিবর্তে ব্রিটিশ সেকুলারিজম বা ইহলৌকিকতাকে গ্রহণ করেছে। সরকার
গঠনের আগে তারা ইস্তাম্বুলসহ দেশের বেশির ভাগ মিউনিসিপালিটি দখল করে
নিজেদের যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। একই কারণে তারা
সুফি তরিকার গুলেন ও সাঈদ নুরসির অনুসারীদের আস্থা অর্জন করতে পেরেছেন।
ইসলামি মূল্যবোধের অনুসারী হলেও ইসলাম প্রতিষ্ঠার স্লেøাগান তাদের মুখে
শোনা যায় না। গণতন্ত্র, ইহলৌকিকতা, ধর্মীয় মূল্যবোধ, সব নাগরিকের
সমানাধিকার, ন্যায়বিচার এবং দেশের উন্নয়ন তাদের অগ্রাধিকার। এরদোগান ও একে
পার্টির এটাই কি জাদুর কাঠি?
লেখক : লন্ডন প্রবাসী কবি ও শিক্ষাবিদ
Comments
Post a Comment