হামাসের প্রতিরোধ অবাক করে দিয়েছে


যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর জাতীয় পতাকা নিয়ে উল্লাস করছেন ফিলিস্তিনিরা : এএফপি
হামাসের নেতৃত্বে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যুদ্ধ সবাইকে অবাক করে দিয়েছে। পশ্চিমা জগৎ ও বিশ্বের মুক্ত চিন্তার মানুষের কাছ থেকে তারা অনেক বেশি সমর্থন ও সহানুভূতি লাভ করেছে। তারা স্বচক্ষে গাজায় ফিলিস্তিনি শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের ওপর ইসরাইলি বর্বর হামলার ঘটনা দেখেছেন। অথচ হামাস যোদ্ধারা কেবল সামরিক অঞ্চল ও সৈন্যদের লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। বিশিষ্ট কলামিস্ট ডা: আমিরা আবু আল-ফাতেহ এ কথা বলেছেন। 
তিনি বলেন, আল্লাহর মেহেরবানিতে মিসরে সেনা অভ্যুত্থানের হোতার সরকারের মধ্যস্থতায় অনুষ্ঠিত ফিলিস্তিনি-ইসরাইলি কয়েক দফা আলোচনা ব্যর্থ হয়। আলোচনায় গাজার যুদ্ধের ব্যাপারে মিসর সরকারের অপরাধমূলক ভূমিকা গোপন থাকেনি। তারা হামাসকে নির্মূল করার ইসরাইলি নীতিকেই নিজেদের নীতি হিসেবে গ্রহণ করে। হামাস লড়াইয়ে ব্যাপক গুণগত বিজয় অর্জন করে শত্রুমিত্র সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয়ার পর ইসরাইলকে দুরবস্থার হাত রক্ষার লক্ষ্যে ধূম্রজালের সৃষ্টি করতে মিসর মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালনে এগিয়ে আসে। ইসরাইল যাতে নিজেকে নতুন করে প্রস্তুত করার সুযোগ পায় সে জন্য মিসর দ্রুত আলোচনার ব্যবস্থা করে এবং হামাসের কমান্ডারদের হত্যা করার মাধ্যমে অন্তঃসারশূন্য বিজয় অর্জনে অস্ত্রবিরতির সময়ে গোয়েন্দা তৎপরতা চালানোর সুযোগ সৃষ্টি করা।
ইসরাইল ফিলিস্তিনি বিশ্বাসঘাতকদের তথ্যের ভিত্তিতে বাড়িঘর ও ভবনগুলোতে কাপুরুষোচিত হামলা চালিয়ে অনেক নিরীহ অসামরিক লোকজনের সাথে হামাসের তিনজন সিনিয়র সেনা কমান্ডারকেও হত্যা করতে সমর্থ হয়েছে। এক মাসের গাজার বর্বর যুদ্ধে কিছুই অর্জন করতে ব্যর্থ নেতানিয়াহু এরপর এক সংবাদ সম্মেলনে একে মিথ্যা বিজয় বলে দাবি করেন। তার বাহিনী গাজায় অসামরিক বাড়িঘর, হাসপাতাল ও স্কুলসহ সব অসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করে দেয়। হত্যা করে হাজার হাজার শিশু, নারী ও বৃদ্ধকে। হামাসের রকেট নিক্ষেপের কারণে আতঙ্কগ্রস্ত নাগরিকদের রক্ষার দোহাই দিয়ে নেতানিয়াহু তার এ বর্বরতাকে যুক্তিসঙ্গত করার ব্যর্থ চেষ্টা করেন।  
বিশিষ্ট কলামিস্ট আবু আল-ফাতেহ লিখেছেন, যারা গাজার বিজয়কে স্বীকার করতে নারাজ তারা প্রতিরোধ যোদ্ধাদের মনোবলকে ধ্বংস করতে চায়। কেবল অন্ধরাই গাজার বিজয় দেখতে পায় না। কোনো যুদ্ধে জয়-পরাজয় হতাহতের সংখ্যা, বাড়িঘর ধ্বংসস্তূপে পরিণত করার দ্বারা নিরূপিত হয় না। তা নিরূপিত হয় যোদ্ধাদের ধৈর্য, দৃঢ়তা ও শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অনমনীয় সঙ্কল্পে এবং শত্রুর কাছে আত্মসমর্পণের অস্বীকৃতি জ্ঞাপন, তার শর্তে নতি স্বীকার না করা ও সাদা পতাকা উড্ডয়ন না করায়। ইসরাইল শুরু থেকেই ঘোষণা করেছিল তারা হামাসকে নির্মূল করবে। তারা কি সেটি করতে পেরেছে?
এ যুদ্ধে পশ্চিমা জগৎ ও বিশ্বের মুক্তচিন্তার মানুষের মধ্যে হামাসের প্রতি সমর্থন বেড়েছে। তারা রসূল সা: অনুসৃত যুদ্ধের ইসলামি নৈতিকতা মেনে চলেছে। তারা কোনো গাছপালা ধ্বংস করেনি অথচ ইসরাইল জয়তুন বাগানগুলো বুলডোজার দিয়ে ধূলিস্যাৎ করে দিয়েছে। এটি হলো ভূখণ্ডের প্রকৃত মালিক ও জালেম দখলদারের মধ্যে তফাৎ

Comments