রং মিশিয়ে গুড়।

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় চিটাগুড়, চিনি, আটা ও রং মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ভেজাল গুড়। রমজান মাসের বাড়তি চাহিদার কথা বিবেচনা করে এভাবে গুড় তৈরির হিড়িক পড়েছে৷
গতকাল বৃহস্পতিবার ভ্রাম্যমাণ আদালত উপজেলার পাঁচটি ভেজাল গুড়ের কারখানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ গুড় ধ্বংস করেছেন এবং তিনজন ব্যবসায়ী ও কর্মচারীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।
রাজশাহী জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিমুল আক্তার ওই অভিযানে নেতৃত্ব দেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিএসটিআইয়ের কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম৷ অভিযান শেষের দিকে চারঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল সাবরিন তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন। চারঘাট থানার পুলিশ এতে সহযোগিতা করে।
আদালত সকাল নয়টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত অভিযান চালান। তাঁরা প্রথমেই উপজেলার মেরামতপুর দিড়িপাড়া গ্রামের হাশেম আলীর কারখানায় অভিযান চালান। তখন তাঁর চুলায় ভেজাল গুড় তৈরি হচ্ছিল। আদালতের নির্দেশে পুলিশ ওই গুড় নষ্ট করে ফেলে এবং চুলা ভেঙে দেয়৷ পাশাপাশি চার ড্রাম চিটাগুড় ফেলে দেয় পুলিশ। অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে হাশেম পালিয়ে যান। আদালত তাঁর কর্মচারী রমজান আলীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এরপর একই গ্রামের রফিকুল ইসলামের কারখানাতে গিয়ে চুলায় ভেজাল গুড় জ্বাল হতে দেখে তা নষ্ট করে দেওয়া হয় এবং কারখানায় মজুত রাখা চার ড্রাম চিটাগুড় ধ্বংস করা হয়। এ ছাড়া, গুড় তৈরির অন্যান্য কৃত্রিম উপকরণ ধ্বংস করা হয়। রফিকুল ইসলামও পালিয়ে যান৷ পরে আদালত একইভাবে মাজদার রহমান, মজের মোল্লা ও বুলবুল হোসেনের কারখানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ গুড় ও গুড় তৈরির উপকরণ ধ্বংস করেন৷ আদালত মজের মোল্লাকে ৩০ হাজার টাকা এবং তাঁর এক কর্মচারী রেজু আহমেদকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন৷
স্থানীয় গুড় ব্যবসায়ীরা জানান, রমজান মাসে শরবত তৈরির জন্য গুড়ের চাহিদা বেড়ে যায়৷ এ সময় ভেজাল গুড় উৎপাদনও বেড়ে যায়৷ উপজেলার মেরামতপুর দিড়িপাড়া, পিরোজপুর ঢালিপাড়া, কাঁকড়ামারী, চাঁনপুর, কাঁকড়ামারী ঘোষপাড়া, পরানপুর, রউথাসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এভাবে ভেজাল গুড় তৈরি হচ্ছে।
ম্যাজিস্ট্রেট শিমুল আক্তার বলেন, রমজানের আগেই এই অভিযান শুরু করা হয়েছে। রমজান মাসজুড়েই অভিযান চলবে৷

Comments