পেট্রলবোমা থেকে গ্রেনেডের দিকে যেতে বেশি সময় লাগবে না?


চলমান সঙ্কট নিরসনে একটি জাতীয় ঐকমত্যের সরকার প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ। তিনি বলেছেন, ওই সরকারের প্রধান কাজ হবে প্রজাতন্ত্রের সকল কর্মকা- যথাযথভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে সবার অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান। সবার অংশগ্রহণমূলক বিশ্বাসযোগ্য, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনই জাতিকে বর্তমান মহাসঙ্কট থেকে উত্তরণে সহায়তা করতে পারে। গতকাল সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এ প্রস্তাবে নাগরিক সমাজের কয়েকজন প্রতিনিধিও সমর্থন জানিয়েছেন। ‘চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট: উত্তরণের পথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন। প্রধান অতিথি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদ বলেন, জাতীয় ঐকমত্যের সরকারের প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য হবে নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন এবং বিচার বিভাগসহ সকল সাংবিধানিক এবং প্রতিষ্ঠানের অর্থবহ সংস্কারের মাধ্যমে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ একটি চরম সঙ্কটকাল অতিক্রম করছে। নিরাপত্তাহীনতা, অনিশ্চয়তা এবং শঙ্কা আজ গোটা জাতিকে গ্রাস করেছে। একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ছাড়া এমন ঘোর সঙ্কট জাতির জীবনে আর কখনো আসেনি। জনগণের অংশগ্রহণ এবং সমর্থনবিহীন একটি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণের মাধ্যমে অকার্যকর ও ধ্বংস করে ফেলেছে। সংবিধানকে ব্যক্তি বা দলের ইচ্ছায় নির্বিচার কাটাছেঁড়ার মাধ্যমে একটি অর্থহীন সংবিধানে পরিণত করেছে যা আজ জাতির সঙ্কটকালে দিকনির্দেশনা দিতে ব্যর্থ ও অক্ষম। আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি আবদুর রউফ বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ছাড়া অন্য কোন তন্ত্রের সুযোগ আছে বলে মনে করি না। প্রশাসনে যেভাবে দলীয়করণ করা হয়েছে তাতে পরিবর্তন না আনা গেলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠার যে প্রস্তাব এসেছে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হওয়া উচিত। খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, এখনও সময় আছে সরকারের উচিত সমঝোতায় আসা। সংবিধানের সংশোধনের মাধ্যমে একটি জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যেন একটি অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করা যায়। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মজহার বলেন, আমাদেরকে সঙ্কটের গোড়ায় যেতে হবে। শুধু নির্বাচনের মাধ্যমে সঙ্কটের কোন সমাধান হবে না। মুক্তিযুদ্ধের পর সংবিধান প্রণয়নের সময় জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। এখনও ফ্যাসিস্ট সরকার জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে। তিনি বলেন, আরাফাত রহমান কোকোর জানাজায় অসংখ্য মানুষ উপস্থিত হয়েছেন। যদিও জানাজা রাজনৈতিক কিছু নয়। কিন্তু নিগৃহীত মানুষ নিঃশব্দ প্রতিবাদের উপকরণ হিসেবে এটিকে ব্যবহার করেছে। বিএনপির নেতৃত্বের ব্যর্থতার কারণে এই বিপুল মানুষকে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করা যাচ্ছে না। পাকিস্তানের সংবিধান মেনে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ হয়নি। ফরহাদ মজহার বলেন, বাংলাদেশ ভয়ঙ্কর পরিণতির দিকে এগোচ্ছে। ধীরে ধীরে আমরা আফগানিস্তান-ইরাকের মতো পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছি। পেট্রলবোমা থেকে গ্রেনেডের দিকে যেতে বেশি সময় লাগবে না। এ অবস্থায় ভেতর অথবা বাইরে থেকে তৃতীয় শক্তির আবির্ভাব ঘটতে পারে। সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজীর সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা কাজী সেলিম উদ্দিন, কবি ও সাংবাদিক আব্দুল হাই সিকদার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-ভিসি অধ্যাপক আবদুল মান্নান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সুকোমল বড়ুয়া, আইনজীবী তাজুল ইসলাম প্রমুখ।
এদিকে প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমেদের প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ১১০১ চিকি

Comments